Skip to content

অনুচ্ছেদঃ একুশের বইমেলা

  • by

অনুচ্ছেদ লিখন

একুশের বইমেলা


১৯৭১ সালে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে প্রতিবছর একুশের বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাঙালি সত্তার মর্মমূলে গাঁথা মহান একুশে ফেব্রুয়ারি তথা ভাষা আন্দোলনের অমর স্মৃতি বহনকারী একুশের বইমেলা বাঙালির সংগ্রামী চেতনা ও সংস্কৃতির স্বাতন্ত্রেরই এক তাৎপর্যপূর্ণ অনুষঙ্গ। শহিদ দিবস’ হিসেবে জাতীয় মর্যাদায় এ দিনটি নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। এ দেশের মানুষ ভাষাশহিদদের শ্রদ্ধা জানানাের জন্য এবং বইমেলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে।

১৯৯৯ সালে এ দিবসটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এর গুরুত্ব বেড়ে গেছে বহুগুণ। সেই সাথে একুশের বইমেলাও পেয়েছে আলাদা গৌরবদীপ্ত মাত্রা। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী একুশের বইমেলা বেশ জাকজমকভাবে চলতে থাকে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বইমেলার উদ্বোধন করেন। কয়েকশত প্রকাশক তাদের জন্য বরাদ্দকৃত নিজ নিজ স্টল সাজিয়ে বই প্রদর্শন ও বিক্রি করেন। হাজার হাজার দর্শক, শ্রোতা, ক্রেতা আনন্দমুখর পরিবেশে নানা ধরনের সুদৃশ্য ও মূল্যবান বইয়ের সাথে, লেখক ও প্রকাশকদের সাথে পরিচিত হন।

বই দেখে ও বই কিনে তাদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তারা এখানে আলােচনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভােগ করেন। খাবার স্টলে বসে কবি-লেখকদের সঙ্গে আড্ডা দেন অনেকেই। তথ্য কেন্দ্র থেকে প্রচার করা হয় নতুন বই প্রকাশের সংবাদ, হারানাে বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদি। মেলায় প্রবেশের সুসজ্জিত তােরণটি দৃষ্টিনন্দিত। বাইরের দেয়ালে ভাষা আন্দোলন ও ভাষাশহিদদের নানা চিত্র দেখার ভিড়। মেলার ভেতরে বাইরে নিরাপত্তার সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা। সাংবাদিক ও ক্যামেরার ভিড় চোখে পড়ার মতাে। শিশু কিশোের যুবক বৃদ্ধ সবার উপযােগী দেশপ্রেম, ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ভ্রমণবৃত্তান্তের ঝকঝকে বইয়ের সমাবেশ স্বাভাবিকভাবেই মন কাড়ে। একুশের বইমেলা বই কেনা ও পাঠের অভ্যাস গঠনে, পারস্পরিক ভাবের বিনিময়ে, প্রবীণ নবীদের সংযোেগ রচনায় প্রকৃতই এক মিলনতীর্থ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *