অনুচ্ছেদ লিখন
বিদ্যালয়ের শেষ দিন
‘ বিদ্যালয়ের শেষ দিন ‘ কথাটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। কেননা বিদ্যালয়ের সাথে জড়িয়ে থাকে কৈশােরের আবেগ, ভালােবাসা, ভালােলাগা, দুঃখ কষ্টের নানা অম্ল-মধুর স্মৃতি। সেসব স্মৃতি বিদায়ের দিনে খুব কষ্ট দেয়, বেদনার্ত করে, অশু ঝরায়, আবেগ-আপ্লুত করে। মনে পড়ে বিদ্যালয়ের প্রথম দিনের কথা।
সেদিন মনে ছিল অজানা ভয়, প্রশ্ন, কত টেনশন। কিন্তু হেডস্যারের মিষ্টি কথা, মধুর ব্যবহার সব ভুলিয়ে দিয়েছে। মনে মনে সেদিনই এই স্কুলটাকে আপন করে নিয়েছি। প্রথম দিনের ক্লাসে নতুন ড্রেস, নতুন ব্যাগ ভর্তি বই-খাতা-কলমসহ এসে নতুন বন্ধুদের সাথে খুব ভালাে লেগেছিল। স্যারেরাও সবার পরিচয় জেনে বাবার মতাে আদর করে অনেক উপদেশ দিয়েছিলেন।
এক এক করে উপরের ক্লাসে উঠে গেছি আর সবকিছু নতুন মনে হয়েছে। স্যারদের গল্পের মতাে করে পাঠদান, পরীক্ষাগুলােতে কঠোরতা, খেলাধুলা-পিকনিকে বন্ধুর মতাে মজা করার কথা খুব মনে পড়ছে। দু-চারদিন মারও খেয়েছি, কিন্তু তা কখনাে ব্যথাহত করেনি। তা মনে হয়েছে খুবই দরকারি। ফলে রেজাল্ট ভালাে হয়েছে, পুরস্কৃত হয়েছি প্রতি বছর। এছাড়া কবিতা আবৃত্তি, রবীন্দ্র-নজরুলগীতি গাওয়া, নাটকে অভিনয় করা, বিতর্কে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে স্যারদের উৎসাহ আর প্রশিক্ষণের কথা কোনােদিনই ভুলব না।
এদিনে স্যারেরাও নানা স্মৃতির কথা তুলে ধরেছেন, উপদেশ দিয়েছেন, বুকে জড়িয়ে ধরে দোয়া করেছেন আমাদেরকে। বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ, সবুজ ঘাসভরা মাঠ, চারদিকের গাছপালা আমাদের স্মৃতির সাথে জড়িয়ে আছে। এসব ছেড়ে চলে যাওয়া বড়ই কঠিন। তবু ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রয়ােজনে যেতে হবে। বিদ্যালয়ের সব স্মৃতি জেগে থাকবে আমাদের মনে চিরদিন।