ভাবসম্প্রসারনঃ অভিজ্ঞতা হল দুঃখ কষ্টের নির্যাস

অভিজ্ঞতা হল দুঃখ কষ্টের নির্যাস


সুখ-শান্তির পাশাপাশি দুঃখ-কষ্ট মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুঃসময়ে পতিত হলে মানুষ এই পার্থিব জীবনের জটিলতা ও নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে অবহিত হতে পারে। দুঃখের স্পর্শেই মানুষ তার চারপাশে অবস্থিত প্রতিকূল পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। বিপদের সময়ই ব্যক্তি তার প্রকৃত বন্ধুর সন্ধান পায়। সুতরাং এই কথা অকপটে বলা যায় যে, দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ আপদ মানুষকে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ করে।

এই সময়ই মানুষ জীবনের যথার্থতা উপলব্ধি করার সুযোগ পায়। দুঃখ-কষ্ট মানুষের বিবেককে মহান আদর্শে উজ্জীবিত করে। দুঃখের আগুনে পুড়ে পুড়ে একজন মানুষ খাঁটি বিবেকবান মানুষে পরিণত হয়। দুঃখ-কষ্টের করুণ দহন শেষে যে সোনালি দিনের সন্ধান মিলে তার স্বাদ অনাবিল ও অতুলনীয়। দুঃখ-কষ্টের অভিজ্ঞতা ছাড়া এই পৃথিবীতে কেউ বড় মাপের মানুষ হতে পারে না। এই জগতে যত সাফল্যের ঘটনা রয়েছে তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে সীমাহীন দুঃখের মর্মান্তিক ইতিহাস।

ধৈর্য, দুঃখ-কষ্টের দুঃসহ স্মৃতি, ত্যাগ-তিতিক্ষা এসব ছাড়া কেউ জীবনে সফল হতে পারে না। দুঃখ মানুষকে তার জীবনযাপনে দক্ষ ও অভিজ্ঞ করে তোলে। দুঃখ-কষ্ট জীবনের বাস্তবমুখী দিকগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরে। দুঃখ-কষ্টের সাথে সংগ্রাম করে নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার মধ্যে জীবনের প্রকৃত অর্থ নিহিত। দুঃসময়ে জীবনকে থামিয়ে রাখলে চলবে না। জীবনে দুঃখ-কষ্টকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। দুঃখ বেদনা মানুষকে বাস্তববাদী করে। কষ্টবোধে মানুষ আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়, যা মানুষের জীবনে পূর্ণতা নিয়ে আসে।

আর এই আত্মশক্তিই মানুষকে ক্রমান্বয়ে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করে। দুঃখবোধ একদিকে যেমন কষ্টের অভিজ্ঞতার জন্ম দেয় অন্যদিকে মানুষকে সংগ্রামী মনোভাবে অনুপ্রাণিত করে।

শিক্ষা: দুঃখ কষ্ট থেকে লব্ধ অভিজ্ঞতা মানুষকে সহনশীল, ধৈর্যশীল, মহান ও সর্বংসহা করে। দুঃখবোধ মানুষকে সত্যাশ্রয়ী ও আত্মসচেতন হতে সহায়তা করে। এর থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা মানুষের অনাগত জীবনের সকল পরিস্থিতি এবং সমস্যা নিয়ন্ত্রণ ও দমনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

❤️ 0
👎 0
😢 0
😡 0

Leave a Reply

Scroll to Top

Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/proshna1/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471