অষ্টম শ্রেনী বিজ্ঞান
পঞ্চম অধ্যায়: সমন্বয় ও নিঃসরণ
১. জীবদেহে বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করাকে কী বলে?
ক) প্রজনন
খ) সমন্বয়
গ) নিঃসরণ
ঘ) পুষ্টি
সঠিক উত্তর: খ) সমন্বয়
ব্যাখ্যা: জীবদেহের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও তন্ত্রের কার্যাবলীর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করা অপরিহার্য, একে সমন্বয় বলে।
২. উদ্ভিদের সমন্বয়ের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করে কোনটি?
ক) ফুল
খ) ফল
গ) হরমোন
ঘ) পানি
সঠিক উত্তর: গ) হরমোন
ব্যাখ্যা: উদ্ভিদের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং বিভিন্ন জৈবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ফাইটোহরমোন বা উদ্ভিদ হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. উদ্ভিদের কাণ্ডের আলোর দিকে বেঁকে যাওয়া কোন হরমোনের প্রভাবে ঘটে?
ক) ইথিলিন
খ) অক্সিন
গ) জিব্বেরেলিন
ঘ) সাইটোকাইনিন
সঠিক উত্তর: খ) অক্সিন
ব্যাখ্যা: অক্সিন হরমোন উদ্ভিদের আলোর উৎসের দিকে বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে, ফলে কাণ্ড আলোর দিকে বেঁকে যায়।
৪. উদ্ভিদের শাখা প্রশাখা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কোন হরমোন?
ক) অক্সিন
খ) ইথিলিন
গ) সাইটোকাইনিন
ঘ) অ্যাبسিসিক অ্যাসিড
সঠিক উত্তর: গ) সাইটোকাইনিন
ব্যাখ্যা: সাইটোকাইনিন কোষ বিভেদ এবং উদ্ভিদের শাখা-প্রশাখা ও পাতার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৫. ফল পাকানোর জন্য দায়ী কোন হরমোন?
ক) অক্সিন
খ) জিব্বেরেলিন
গ) ইথিলিন
ঘ) অ্যাبسিসিক অ্যাসিড
সঠিক উত্তর: গ) ইথিলিন
ব্যাখ্যা: ইথিলিন একটি গ্যাসীয় হরমোন যা ফল পাকাতে সাহায্য করে।
৬. উদ্ভিদের বৃদ্ধি রোধ করে কোন হরমোন?
ক) অক্সিন
খ) জিব্বেরেলিন
গ) সাইটোকাইনিন
ঘ) অ্যাبسিসিক অ্যাসিড
সঠিক উত্তর: ঘ) অ্যাبسিসিক অ্যাসিড
ব্যাখ্যা: অ্যাબસিসিক অ্যাসিড উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে এবং বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থায় উদ্ভিদের টিকে থাকতে সাহায্য করে।
৭. বীজের সুপ্তাবস্থা ভাঙতে সাহায্য করে কোন হরমোন?
ক) অক্সিন
খ) জিব্বেরেলিন
গ) ইথিলিন
ঘ) সাইটোকাইনিন
সঠিক উত্তর: খ) জিব্বেরেলিন
ব্যাখ্যা: জিব্বেরেলিন বীজের সুপ্তাবস্থা breaking এবং অঙ্কুরোদগমে সহায়তা করে।
৮. স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ কোনটি?
ক) মস্তিষ্ক
খ) মেরুরজ্জু
গ) স্নায়ু
ঘ) উপরের সবগুলো
সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো
ব্যাখ্যা: মস্তিষ্ক, মেরুরজ্জু এবং স্নায়ু সম্মিলিতভাবে প্রাণিদেহের স্নায়ুতন্ত্র গঠন করে এবং সমন্বয় সাধনে প্রধান ভূমিকা পালন করে।
৯. মানবদেহের প্রধান সমন্বয়কারী অঙ্গ কোনটি?
ক) হৃদপিণ্ড
খ) ফুসফুস
গ) মস্তিষ্ক
ঘ) কিডনি
সঠিক উত্তর: গ) মস্তিষ্ক
ব্যাখ্যা: মস্তিষ্ক মানবদেহের সকল কার্যকলাপের কেন্দ্র এবং বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
১০. মানবদেহে কত জোড়া করোটিক স্নায়ু থাকে?
ক) ১০ জোড়া
খ) ১১ জোড়া
গ) ১২ জোড়া
ঘ) ১৩ জোড়া
সঠিক উত্তর: গ) ১২ জোড়া
ব্যাখ্যা: মানবদেহে মস্তিষ্ক থেকে উৎপন্ন ১২ জোড়া করোটিক স্নায়ু রয়েছে।
১১. মানবদেহে কত জোড়া মেরুরজ্জু স্নায়ু থাকে?
ক) ৩০ জোড়া
খ) ৩১ জোড়া
গ) ৩২ জোড়া
ঘ) ৩৩ জোড়া
সঠিক উত্তর: খ) ৩১ জোড়া
ব্যাখ্যা: মানবদেহের মেরুরজ্জু থেকে ৩১ জোড়া মেরুরজ্জু স্নায়ু উৎপন্ন হয়।
১২. প্রতিবর্তী ক্রিয়া কে নিয়ন্ত্রণ করে?
ক) মস্তিষ্ক
খ) মেরুরজ্জু
গ) স্নায়ু
ঘ) হরমোন
সঠিক উত্তর: খ) মেরুরজ্জু
ব্যাখ্যা: প্রতিবর্তী ক্রিয়া হলো স্বয়ংক্রিয় এবং দ্রুত শারীরিক প্রতিক্রিয়া যা মেরুরজ্জু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
১৩. মানবদেহের সবচেয়ে বড় স্নায়ু কোনটি?
ক) অপটিক স্নায়ু
খ) অডিটরি স্নায়ু
গ) সিয়াটিক স্নায়ু
ঘ) ভেগাস স্নায়ু
সঠিক উত্তর: গ) সিয়াটিক স্নায়ু
ব্যাখ্যা: সিয়াটিক স্নায়ু মানবদেহের দীর্ঘতম এবং প্রশস্ততম স্নায়ু।
১৪. প্রাণিদেহে রাসায়নিক সমন্বয় সাধন করে কোনটি?
ক) স্নায়ুতন্ত্র
খ) রেচনতন্ত্র
গ) হরমোন
ঘ) এনজাইম
সঠিক উত্তর: গ) হরমোন
ব্যাখ্যা: হরমোন হলো রাসায়নিক বার্তাবাহক যা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়ে রক্তে মিশে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নির্দিষ্ট কোষ বা অঙ্গের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
১৫. অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে কী নিঃসৃত হয়?
ক) এনজাইম
খ) হরমোন
গ) লালা
ঘ) পিত্তরস
সঠিক উত্তর: খ) হরমোন
ব্যাখ্যা: অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বা এন্ডোক্রাইন গ্রন্থি হলো নালীবিহীন গ্রন্থি যা সরাসরি রক্তে হরমোন নিঃসরণ করে।
১৬. থাইরয়েড গ্রন্থি কোথায় অবস্থিত?
ক) মস্তিষ্কে
খ) গলায়
গ) বুকে
ঘ) পেটে
সঠিক উত্তর: খ) গলায়
ব্যাখ্যা: থাইরয়েড গ্রন্থি শ্বাসনালীর উপরে গলার সামনের অংশে অবস্থিত।
১৭. মানবদেহের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কোন হরমোন?
ক) থাইরক্সিন
খ) ইনসুলিন
গ) গ্রোথ হরমোন
ঘ) অ্যাড্রেনালিন
সঠিক উত্তর: গ) গ্রোথ হরমোন
ব্যাখ্যা: পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত গ্রোথ হরমোন মানবদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
১৮. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে কোন হরমোন?
ক) থাইরক্সিন
খ) ইনসুলিন
গ) অ্যাড্রেনালিন
ঘ) টেস্টোস্টেরন
সঠিক উত্তর: খ) ইনসুলিন
ব্যাখ্যা: অগ্ন্যাশয়ের আইলেটস অফ ল্যাঙ্গারহ্যান্সে তৈরি ইনসুলিন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
১৯. ভয় বা উত্তেজনার সময় কোন হরমোন নিঃসৃত হয়?
ক) ইনসুলিন
খ) থাইরক্সিন
গ) অ্যাড্রেনালিন
ঘ) ইস্ট্রোজেন
সঠিক উত্তর: গ) অ্যাড্রেনালিন
ব্যাখ্যা: অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত অ্যাড্রেনালিন হরমোন ভয়, উত্তেজনা বা জরুরি অবস্থায় শরীরকে প্রস্তুত করে।
২০. রেচন কাকে বলে?
ক) খাদ্য গ্রহণ প্রক্রিয়াকে
খ) জীবদেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন প্রক্রিয়াকে
গ) শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়াকে
ঘ) বংশবৃদ্ধি প্রক্রিয়াকে
সঠিক উত্তর: খ) জীবদেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন প্রক্রিয়াকে
ব্যাখ্যা: জীবদেহের বিপাকক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থ দেহ থেকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে রেচন বলে।
২১. মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গ কোনটি?
ক) ফুসফুস
খ) ত্বক
গ) কিডনি
ঘ) যকৃৎ
সঠিক উত্তর: গ) কিডনি
ব্যাখ্যা: মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গ হলো কিডনি বা বৃক্ক যা রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে মূত্র তৈরি করে।
২২. মূত্র কোথায় তৈরি হয়?
ক) মূত্রথলিতে
খ) মূত্রনালীতে
গ) কিডনিতে
ঘ) যকৃতে
সঠিক উত্তর: গ) কিডনিতে
ব্যাখ্যা: কিডনির নেফ্রন নামক কার্যকারী এককে রক্ত পরিস্রুত হয়ে মূত্র তৈরি হয়।
২৩. মূত্র সাময়িকভাবে কোথায় জমা থাকে?
ক) কিডনিতে
খ) মূত্রনালীতে
গ) মূত্রথলিতে
ঘ) মলাশয়ে
সঠিক উত্তর: গ) মূত্রথলিতে
ব্যাখ্যা: কিডনিতে তৈরি মূত্র মূত্রনালীর মাধ্যমে মূত্রথলিতে এসে সাময়িকভাবে জমা থাকে।
২৪. ইউরিয়া মানবদেহের একটি প্রধান বর্জ্য পদার্থ যা কোথা থেকে উৎপন্ন হয়?
ক) শর্করা বিপাক থেকে
খ) আমিষ বিপাক থেকে
গ) স্নেহ বিপাক থেকে
ঘ) ভিটামিন বিপাক থেকে
সঠিক উত্তর: খ) আমিষ বিপাক থেকে
ব্যাখ্যা: আমিষ বা প্রোটিন বিপাকের ফলে সৃষ্ট অতিরিক্ত অ্যামিনো অ্যাসিড যকৃতে ইউরিয়াতে রূপান্তরিত হয়।
২৫. কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণের জন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়?
ক) রক্ত সঞ্চালন
খ) ডায়ালিসিস
গ) অপারেশন
ঘ) এন্ডোস্কোপি
সঠিক উত্তর: খ) ডায়ালিসিস
ব্যাখ্যা: কিডনি অকার্যকর হলে কৃত্রিমভাবে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণের জন্য ডায়ালিসিস পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
২৬. মানবদেহের কোন অঙ্গটি রেচনে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে?
ক) হৃদপিণ্ড
খ) ফুসফুস
গ) পাকস্থলী
ঘ) অগ্ন্যাশয়
সঠিক উত্তর: খ) ফুসফুস
ব্যাখ্যা: ফুসফুস শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস শরীর থেকে বের করে দিয়ে রেচনে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে।
২৭. ত্বকের মাধ্যমে কোন বর্জ্য পদার্থ নিঃসৃত হয়?
ক) ইউরিয়া
খ) কার্বন ডাই অক্সাইড
গ) লবণ ও সামান্য ইউরিয়া মিশ্রিত ঘাম
ঘ) অ্যামোনিয়া
সঠিক উত্তর: গ) লবণ ও সামান্য ইউরিয়া মিশ্রিত ঘাম
ব্যাখ্যা: ত্বক ঘামের মাধ্যমে অতিরিক্ত লবণ এবং সামান্য পরিমাণ ইউরিয়া দেহ থেকে বের করে দিয়ে রেচনে সাহায্য করে।
২৮. উদ্ভিদের অতিরিক্ত পানি কোন প্রক্রিয়ায় বের হয়ে যায়?
ক) সালোকসংশ্লেষণ
খ) শ্বসন
গ) প্রস্বেদন
ঘ) অভিস্রবণ
সঠিক উত্তর: গ) প্রস্বেদন
ব্যাখ্যা: উদ্ভিদের অতিরিক্ত পানি পাতার স্টোমাটা বা লেন্টিসেলের মাধ্যমে বাষ্পাকারে বের হয়ে যায়, এই প্রক্রিয়াকে প্রস্বেদন বলে।
২৯. উদ্ভিদের গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থ কী?
ক) অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড
খ) ইউরিয়া
গ) লবণ
ঘ) রেচন পদার্থ
সঠিক উত্তর: ক) অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড
ব্যাখ্যা: সালোকসংশ্লেষণের ফলে সৃষ্ট অক্সিজেন এবং শ্বসনের ফলে সৃষ্ট কার্বন ডাই অক্সাইড উদ্ভিদের গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থ।
৩০. উদ্ভিদের রেচন পদার্থ কোথায় সঞ্চিত থাকে?
ক) মূলে
খ) কাণ্ডে
গ) পাতায়
ঘ) উপরের সব স্থানে
সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সব স্থানে
ব্যাখ্যা: উদ্ভিদের রেচন পদার্থ বাকল, পাতা, ফল, মূলে এবং কান্ডে জমা থাকতে পারে এবং পরে ঝরে পড়ে বা পরিত্যক্ত হয়।