অষ্টম শ্রেনী ইসলাম শিক্ষা
চতুর্থ অধ্যায়: আখলাক
পাঠ ১: আখলাকের প্রকার
১. প্রশ্ন: ‘আখলাক’ শব্দটি কোন শব্দের বহুবচন?
* ক) খুলকুন
* খ) খালাকুন
* গ) মাখলুক
* ঘ) খালিক
সঠিক উত্তর: ক) খুলকুন
ব্যাখ্যা: ‘আখলাক’ আরবি শব্দ। এটি ‘খুলকুন’ শব্দের বহুবচন। ‘খুলকুন’ অর্থ স্বভাব, চরিত্র, আচার-আচরণ ইত্যাদি।
২. প্রশ্ন: আখলাকে হামিদাহ মানে কী?
* ক) নিন্দনীয় চরিত্র
* খ) প্রশংসনীয় চরিত্র
* গ) সাধারণ চরিত্র
* ঘ) মিশ্র চরিত্র
সঠিক উত্তর: খ) প্রশংসনীয় চরিত্র
ব্যাখ্যা: আখলাক প্রধানত দুই প্রকার: আখলাকে হামিদাহ (প্রশংসনীয় চরিত্র) ও আখলাকে যামিমাহ (নিন্দনীয় চরিত্র)। মানুষের আচার-আচরণের ভালো দিকগুলোকে আখলাকে হামিদাহ বলে।
কতিপয় আখলাকে হামিদাহ
ধৈর্য
৩. প্রশ্ন: আরবিতে ধৈর্যকে কী বলা হয়?
* ক) শোকর
* খ) সবর
* গ) তাকওয়া
* ঘ) ইহসান
সঠিক উত্তর: খ) সবর
ব্যাখ্যা: আরবিতে ধৈর্যকে ‘সবর’ বলা হয়। সবর অর্থ সংযম অবলম্বন করা, নফসের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করা। বিপদাপদে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে শান্ত থাকাকেই সবর বলে।
৪. প্রশ্ন: ধৈর্যের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কী বলেছেন?
* ক) ধৈর্যশীলদের জন্য রয়েছে শাস্তির ওয়াদা
* খ) আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন না
* গ) নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন
* ঘ) ধৈর্য মানুষকে দুর্বল করে দেয়
সঠিক উত্তর: গ) নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, “হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
ভ্রাতৃত্ব
৫. প্রশ্ন: ইসলামি ভ্রাতৃত্বের ভিত্তি কী?
* ক) বংশ ও গোত্র
* খ) ধন-সম্পদ ও ক্ষমতা
* গ) তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ
* ঘ) আঞ্চলিকতা ও ভাষা
সঠিক উত্তর: গ) তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ
ব্যাখ্যা: ইসলামি ভ্রাতৃত্বের মূল ভিত্তি হলো তাওহিদ অর্থাৎ আল্লাহর একত্ববাদ ও রিসালাত। যারা আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করে এবং হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে আল্লাহর রাসুল বলে মানে, তারা সকলেই ভাই ভাই।
৬. প্রশ্ন: মহানবি (স.) মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে কিসের সাথে তুলনা করেছেন?
* ক) একটি বৃক্ষের বিভিন্ন শাখার মতো
* খ) একটি দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতো
* গ) একটি দালানের বিভিন্ন ইটের মতো
* ঘ) একটি পরিবারের সদস্যদের মতো
সঠিক উত্তর: খ) একটি দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতো
ব্যাখ্যা: মহানবি (স.) বলেছেন, “পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়া, অনুগ্রহ ও স্নেহের দৃষ্টিকোণ থেকে তুমি মুমিনদের একটি দেহের ন্যায় দেখতে পাবে। যখন দেহের কোনো একটি অঙ্গ অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন তার জন্য সমগ্র দেহই অনিদ্রা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।” (বুখারি ও মুসলিম)
নারীর মর্যাদা
৭. প্রশ্ন: ইসলামে নারীর মর্যাদা কেমন?
* ক) পুরুষের চেয়ে কম
* খ) পুরুষের সমান, তবে কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন দায়িত্ব
* গ) পুরুষের চেয়ে বেশি
* ঘ) ইসলাম নারীর কোনো মর্যাদা দেয়নি
সঠিক উত্তর: খ) পুরুষের সমান, তবে কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন দায়িত্ব
ব্যাখ্যা: ইসলাম নারীকে পুরুষের সমান মর্যাদা দিয়েছে। মৌলিক انسانی অধিকার, শিক্ষা, সম্পদ অর্জন ও ধর্মীয় অধিকারে নারী ও পুরুষ সমান। তবে শারীরিক গঠন ও প্রকৃতি অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ভিন্ন হতে পারে।
৮. প্রশ্ন: “মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত” – এটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
* ক) মায়েরা সবসময় জান্নাতে থাকে
* খ) মায়ের সেবা ও আনুগত্যের মাধ্যমে জান্নাত লাভ করা যায়
* গ) মায়েরা সন্তানের ভাগ্য নির্ধারণ করে
* ঘ) শুধুমাত্র মায়েরাই জান্নাতে যেতে পারে
সঠিক উত্তর: খ) মায়ের সেবা ও আনুগত্যের মাধ্যমে জান্নাত লাভ করা যায়
ব্যাখ্যা: এই উক্তিটি দ্বারা ইসলামে মায়ের উচ্চ মর্যাদা এবং মায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্যের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। মায়ের সেবাযত্ন ও আনুগত্য সন্তানের জন্য জান্নাত লাভের একটি বড় উপায়।
সমাজসেবা
৯. প্রশ্ন: ইসলামে সমাজসেবার গুরুত্ব কেমন?
* ক) এটি একটি ঐচ্ছিক কাজ
* খ) এটি শুধুমাত্র ধনীদের জন্য প্রযোজ্য
* গ) এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও নৈতিক দায়িত্ব
* ঘ) এর কোনো ধর্মীয় গুরুত্ব নেই
সঠিক উত্তর: গ) এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও নৈতিক দায়িত্ব
ব্যাখ্যা: ইসলামে সমাজসেবাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মানুষের কল্যাণ সাধন, আর্তমানবতার সেবা, নিঃস্ব ও অভাবীদের সাহায্য করাকে ইবাদতের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।
১০. প্রশ্ন: সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের অন্যতম দায়িত্ব কী?
* ক) শুধু নিজের উন্নতি করা
* খ) প্রকৃতির উপর আধিপত্য বিস্তার করা
* গ) অপরের কল্যাণ সাধন ও সমাজসেবা করা
* ঘ) শুধু ইবাদতে মশগুল থাকা
সঠিক উত্তর: গ) অপরের কল্যাণ সাধন ও সমাজসেবা করা
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তৈরি করেছেন। তাই মানুষের অন্যতম দায়িত্ব হলো আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের পাশাপাশি তাঁর সৃষ্টির সেবা করা, বিশেষ করে মানুষের কল্যাণ সাধন করা।
দেশপ্রেম
১১. প্রশ্ন: ‘দেশপ্রেম’ বলতে কী বোঝায়?
* ক) শুধুমাত্র নিজের দেশের ভৌগোলিক সীমানাকে ভালোবাসা
* খ) নিজ দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা, তার উন্নতি ও কল্যাণে আত্মনিয়োগ এবং প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করা
* গ) অন্য দেশকে ঘৃণা করা
* ঘ) শুধুমাত্র নিজ দেশের সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরা
সঠিক উত্তর: খ) নিজ দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা, তার উন্নতি ও কল্যাণে আত্মনিয়োগ এবং প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করা
ব্যাখ্যা: দেশপ্রেম অর্থ হলো নিজ দেশের প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশের উন্নয়ন এবং দেশবাসীর কল্যাণে কাজ করা।
১২. প্রশ্ন: হাদিসে দেশপ্রেম সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
* ক) দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ নয়
* খ) দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ
* গ) দেশপ্রেম শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব
* ঘ) দেশপ্রেম ঐচ্ছিক বিষয়
সঠিক উত্তর: খ) দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ
ব্যাখ্যা: একটি বহুল প্রচলিত উক্তি হলো “হুব্বুল ওয়াতান মিনাল ইমান” অর্থাৎ “দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ”। যদিও এটি সরাসরি হাদিসের শব্দ নয়, তবে এর ভাব ও মর্ম ইসলামি শিক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। নবি করিম (স.) নিজের জন্মভূমি মক্কাকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন।
পরমতসহিষ্ণুতা
১৩. প্রশ্ন: ‘পরমতসহিষ্ণুতা’ কী?
* ক) সবসময় নিজের মতকেই সঠিক মনে করা
* খ) অন্যের মতকে উপেক্ষা করা
* গ) অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং ধৈর্যের সাথে তা শোনা
* ঘ) অন্যের উপর নিজের মত চাপিয়ে দেওয়া
সঠিক উত্তর: গ) অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং ধৈর্যের সাথে তা শোনা
ব্যাখ্যা: পরমতসহিষ্ণুতা হলো অন্যের মত বা বিশ্বাসকে সহ্য করার ক্ষমতা, ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং নিজের মতের সাথে না মিললেও তা ধৈর্যের সাথে বিবেচনা করা।
১৪. প্রশ্ন: ইসলামে পরমতসহিষ্ণুতার গুরুত্ব কতটুকু?
* ক) এর কোনো গুরুত্ব নেই
* খ) এটি শুধুমাত্র অমুসলিমদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
* গ) এটি সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার জন্য অপরিহার্য
* ঘ) এটি দুর্বলতার লক্ষণ
সঠিক উত্তর: গ) এটি সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার জন্য অপরিহার্য
ব্যাখ্যা: ইসলাম একটি পরমতসহিষ্ণু ধর্ম। এটি ভিন্ন ধর্ম ও মতের মানুষের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং তাদের অধিকার রক্ষার শিক্ষা দেয়। সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য।
আখলাকে যামিমাহ
১৫. প্রশ্ন: আখলাকে যামিমাহ মানে কী?
* ক) প্রশংসনীয় চরিত্র
* খ) মিশ্র চরিত্র
* গ) নিন্দনীয় বা মন্দ চরিত্র
* ঘ) সাহসী চরিত্র
সঠিক উত্তর: গ) নিন্দনীয় বা মন্দ চরিত্র
ব্যাখ্যা: আখলাকে যামিমাহ হলো নিন্দনীয় বা মন্দ স্বভাব ও আচরণ। যেমন – অহংকার, মিথ্যা, হিংসা, ঘৃণা, অশ্লীলতা ইত্যাদি।
অহংকার
১৬. প্রশ্ন: আরবিতে অহংকারকে কী বলা হয়?
* ক) রিয়া
* খ) হাসাদ
* গ) কিবির
* ঘ) নিফাক
সঠিক উত্তর: গ) কিবির
ব্যাখ্যা: আরবিতে অহংকারকে ‘কিবির’ বা ‘তাকাব্বুর’ বলা হয়। নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় মনে করা এবং সত্যকে দম্ভের সাথে প্রত্যাখ্যান করা হলো অহংকার।
১৭. প্রশ্ন: কার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না?
* ক) যার ধন-সম্পদ বেশি
* খ) যার জ্ঞান কম
* গ) যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে
* ঘ) যে সমাজে প্রভাবশালী নয়
সঠিক উত্তর: গ) যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে
ব্যাখ্যা: মহানবি (স.) বলেছেন, “যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (মুসলিম)। অহংকার আল্লাহ তায়ালার নিকট অত্যন্ত অপছন্দনীয় একটি স্বভাব।
অশ্লীলতা
১৮. প্রশ্ন: অশ্লীলতাকে আরবিতে কী বলে?
* ক) ফাহিশা
* খ) গিবত
* গ) বুহতান
* ঘ) জুলুম
সঠিক উত্তর: ক) ফাহিশা
ব্যাখ্যা: অশ্লীলতাকে আরবিতে ‘ফাহিশা’ বা ‘ফাহশা’ বলা হয়। এর অর্থ নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা, কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা ও কাজকর্ম।
১৯. প্রশ্ন: ইসলামে অশ্লীলতা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
* ক) এটি তেমন কোনো বড় পাপ নয়
* খ) এটি শুধু দৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
* গ) এটি একটি জঘন্য পাপ এবং তা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে
* ঘ) এটি আধুনিকতার অংশ
সঠিক উত্তর: গ) এটি একটি জঘন্য পাপ এবং তা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে
ব্যাখ্যা: ইসলাম সকল প্রকার অশ্লীল ও নির্লজ্জ কাজকে হারাম ঘোষণা করেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা প্রকাশ্য ও গোপন কোনো প্রকার অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হয়ো না।” (সূরা আল-আনআম, আয়াত: ১৫১)
পরশ্রীকাতরতা
২০. প্রশ্ন: পরশ্রীকাতরতাকে আরবিতে কী বলে?
* ক) কিবর
* খ) রিয়া
* গ) হাসাদ
* ঘ) গিবত
সঠিক উত্তর: গ) হাসাদ
ব্যাখ্যা: পরশ্রীকাতরতাকে আরবিতে ‘হাসাদ’ বলা হয়। অন্যের সুখ, শান্তি, উন্নতি ও কল্যাণ দেখে অন্তরে জ্বালাপোড়া অনুভব করা এবং তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কামনা করাকে হাসাদ বা পরশ্রীকাতরতা বলে।
২১. প্রশ্ন: পরশ্রীকাতরতা মানুষের কোন জিনিসকে ধ্বংস করে দেয়?
* ক) ধন-সম্পদ
* খ) জ্ঞান-বুদ্ধি
* গ) নেক আমল বা সওয়াব
* ঘ) শারীরিক শক্তি
সঠিক উত্তর: গ) নেক আমল বা সওয়াব
ব্যাখ্যা: মহানবি (স.) বলেছেন, “তোমরা হিংসা বা পরশ্রীকাতরতা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা আগুন যেভাবে কাঠকে জ্বালিয়ে দেয়, হিংসাও তেমনি নেক আমলকে ধ্বংস করে দেয়।” (আবু দাউদ)
ঘৃণা
২২. প্রশ্ন: ইসলামে অকারণে কাউকে ঘৃণা করা কেমন?
* ক) এটি একটি সাধারণ মানবিক অনুভূতি
* খ) এটি প্রশংসনীয়
* গ) এটি একটি নিন্দনীয় কাজ ও পাপ
* ঘ) এটি সাহসিকতার পরিচায়ক
সঠিক উত্তর: গ) এটি একটি নিন্দনীয় কাজ ও পাপ
ব্যাখ্যা: ইসলামে অকারণে কোনো মানুষকে বা আল্লাহর সৃষ্টিকে ঘৃণা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও নিন্দনীয়। মুমিন ব্যক্তিরা একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি পোষণ করবে। তবে अन्याय ও পাপকে ঘৃণা করা যেতে পারে, পাপীকে নয়।
চুরি
২৩. প্রশ্ন: ইসলামি শরিয়তে চুরির শাস্তি কী?
* ক) জরিমানা করা
* খ) বেত্রাঘাত করা
* গ) চোরের হাত কেটে ফেলা
* ঘ) কারাদণ্ড দেওয়া
সঠিক উত্তর: গ) চোরের হাত কেটে ফেলা
ব্যাখ্যা: ইসলামি শরিয়তে নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে চোরের শাস্তি হিসেবে তার হাত কেটে ফেলার বিধান রয়েছে। এটি একটি কঠোর শাস্তি যা সমাজে নিরাপত্তা বিধান ও অপরাধ দমনের জন্য দেওয়া হয়েছে।
ঘুষ
২৪. প্রশ্ন: ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া ইসলামে কী হিসেবে গণ্য?
* ক) একটি সামাজিক রীতি
* খ) জায়েজ, যদি উভয় পক্ষ খুশি থাকে
* গ) হারাম ও জঘন্যতম অপরাধ
* ঘ) মাকরুহ
সঠিক উত্তর: গ) হারাম ও জঘন্যতম অপরাধ
ব্যাখ্যা: ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া উভয়ই ইসলামে কঠোরভাবে হারাম এবং এটি একটি মারাত্মক সামাজিক অপরাধ। রাসুলুল্লাহ (স.) ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতা উভয়ের উপর অভিসম্পাত করেছেন।
সন্ত্রাস
২৫. প্রশ্ন: ইসলামে সন্ত্রাসের স্থান কোথায়?
* ক) কিছু ক্ষেত্রে সন্ত্রাস অনুমোদিত
* খ) আত্মরক্ষার জন্য সন্ত্রাস করা যায়
* গ) ইসলামে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই
* ঘ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সন্ত্রাস করা যেতে পারে
সঠিক উত্তর: গ) ইসলামে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই
ব্যাখ্যা: ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে নিরপরাধ মানুষ হত্যা, সমাজে ভীতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি তথা সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। এটি সম্পূর্ণরূপে হারাম।
পাঠ ২: এইচআইভি এবং এইডস (এই অংশের শিরোনাম বইতে সরাসরি আখলাকের পাঠ হিসেবে নেই, তবে চতুর্থ অধ্যায়ের শেষে যুক্ত)
২৬. প্রশ্ন: এইডস (AIDS) রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসটির নাম কী?
* ক) ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
* খ) হেপাটাইটিস ভাইরাস
* গ) এইচআইভি (HIV)
* ঘ) পোলিও ভাইরাস
সঠিক উত্তর: গ) এইচআইভি (HIV)
ব্যাখ্যা: এইডস (AIDS – Acquired Immune Deficiency Syndrome) একটি মারাত্মক রোগ, যা এইচআইভি (HIV – Human Immunodeficiency Virus) নামক ভাইরাসের আক্রমণে হয়। এই ভাইরাস মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
২৭. প্রশ্ন: এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধের অন্যতম উপায় কী?
* ক) সবসময় মাস্ক পরিধান করা
* খ) ইসলামি অনুশাসন ও নৈতিক জীবনযাপন করা
* গ) শুধুমাত্র সিদ্ধ পানি পান করা
* ঘ) নিয়মিত টিকা গ্রহণ করা
সঠিক উত্তর: খ) ইসলামি অনুশাসন ও নৈতিক জীবনযাপন করা
ব্যাখ্যা: এইচআইভি সংক্রমণের অন্যতম প্রধান কারণ হলো অনৈতিক ও অনিরাপদ যৌন আচরণ এবং মাদকদ্রব্য গ্রহণ (বিশেষত ইনজেকশনের মাধ্যমে)। ইসলামি অনুশাসন মেনে চলা, যেমন – বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক পরিহার করা, মাদক থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি এইডস প্রতিরোধে অত্যন্ত সহায়ক।
২৮. প্রশ্ন: আখলাকে যামিমাহ বা মন্দ চরিত্র থেকে বেঁচে থাকার প্রধান উপায় কী?
* ক) শুধুমাত্র জ্ঞান অর্জন করা
* খ) আল্লাহভীতি (তাকওয়া) অর্জন ও ইসলামি অনুশাসন মেনে চলা
* গ) সমাজে প্রভাবশালী হওয়া
* ঘ) আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া
সঠিক উত্তর: খ) আল্লাহভীতি (তাকওয়া) অর্জন ও ইসলামি অনুশাসন মেনে চলা
ব্যাখ্যা: আল্লাহভীতি বা তাকওয়া মানুষকে সকল প্রকার মন্দ কাজ ও নিন্দনীয় চরিত্র থেকে বিরত রাখে। ইসলামি জীবনবিধান সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আখলাকে যামিমাহ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।
২৯. প্রশ্ন: কোন ধরনের আচরণ সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা নষ্ট করে?
* ক) পরোপকার ও সহযোগিতা
* খ) ক্ষমা ও উদারতা
* গ) হিংসা, বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতা
* ঘ) সততা ও ন্যায়পরায়ণতা
সঠিক উত্তর: গ) হিংসা, বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতা
ব্যাখ্যা: হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, ঘৃণা, সন্ত্রাস ইত্যাদি আখলাকে যামিমাহ বা মন্দ আচরণগুলো সমাজে অশান্তি, বিশৃঙ্খলা ও হানাহানির সৃষ্টি করে।
৩০. প্রশ্ন: “তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা করো না, বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপরের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না এবং একে অপরের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় করো না। আর তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও।” – এই হাদিসটি কোন বিষয়ের গুরুত্ব নির্দেশ করে?
* ক) শুধুমাত্র অর্থনৈতিক লেনদেন
* খ) পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখা
* গ) জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব
* ঘ) শুধুমাত্র ইবাদতের গুরুত্ব
সঠিক উত্তর: খ) পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখা
ব্যাখ্যা: এই হাদিসটি মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা, সদ্ভাব, ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা এবং হিংসা, বিদ্বেষের মতো মন্দ আচরণগুলো পরিহার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে।