Skip to content

আজকের যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় উল্লেখ করে সংবাদপত্রে প্রকাশ উপযােগী একটি প্রতিবেদন রচনা কর

  • by

আজকের যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় উল্লেখ করে সংবাদপত্রে প্রকাশ উপযােগী একটি প্রতিবেদন রচনা কর।


আমাদের যুবসমাজ : নৈতিক অবক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার


নিজস্ব প্রতিবেদক : ভােলা, ২০ আগস্ট, ২০১৯ : শিক্ষা হচ্ছে জাতির মেরুদণ্ড, আর শিক্ষারুপ মেরুদণ্ড নিজের মহিমা প্রকাশের মাধ্যমে যুবসমাজকে আলােকিত পথে পরিচালনা করে। আলােকিত যুবসমাজ জাতিকে উন্নতকরণের মাধ্যমে উৎকৃষ্ট জাতির রূপ দান করে। অর্থাৎ, যুবসমাজ জাতির ভবিষ্যৎ। সুতরাং কোনাে জাতির যুবসমাজ যদি নৈতিকতা ও মনুষ্যত্ববােধ হারিয়ে বিপথে ধাবিত হয়, তবে সে দেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত অধকারাচ্ছন্ন। ভােলা জেলা সদর এবং প্রত্যেকটি উপজেলা সদরে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র দেখে বিস্মিত হলাম।


বিভিন্ন কারণে যুবসমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটে। বর্তমান যুবসমাজের বিপথগামিতার উল্লেখযােগ্য কারণ হচ্ছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তির আশীর্বাদ টেলিভিশন, ডিশ এক্টেনা, মােবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ফেইসবুক ইত্যাদি সমাজে যতটুকু আশীর্বাদ বয়ে এনেছে, তার চেয়ে শতগুণ বেশি অভিশাপ বয়ে এনেছে তরুনদের জন্য। প্রযুক্তির এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তরুণ সমাজে উন্মোচিত হচ্ছে অল্লীলতার পর্দা, ফলে সহজেই তরুনরা হারিয়ে ফেলছে চরিত্রের স্লিলতা। অশালীন ও উদ্ভট প্রকৃতির সিনেমা তরুনদের মানসিকতায় প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছে উদ্ভট চিন্তাধারা, যা জীবন গঠনের ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায়। শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক অস্থিরতাও যুবসমাজকে বিপাথে পরিচালনা করে। দলের প্রভাব ও ক্ষমতার দ্বন্দ ছাত্রদের মনে ক্রোধ ও লােভের জন্ম দেয়।

ফলে তারা মূল লক্ষ্যকে পাশ কাটিয়ে অনর্থক কাজে উৎসাহী হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। বেকারত্ব যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের আরেকটি নিয়ামক। সমাজের অর্থলােভী কর্ণধারদের প্রবঞ্চনার শিকার হয়ে তারা নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। ফলে আলােকিত পথের বদলে তাদেরকে হাতছানি দেয় অন্ধকারাচ্ছন্ন মাদকের পথ। এর পরিণতিতে সমাজে সন্ত্রাস, ডাকাতি ও চাঁদাবাজির সূত্রপাত ঘটে। এছাড়াও প্রেমে ব্যর্থতা, পারিবারিক কলহ, অসৎ সঙ্গ, মিথ্যাচার ইত্যাদি যুবসমাজকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করে।

দেশে শান্তিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশকে উন্নতির পথে পরিচালিত করতে হলে সর্বপ্রথম যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় প্রতিরােধ করতে হবে। প্রযুক্তির যে অভিশাপ তরুনদের চরিত্রে প্রভাব বিস্তার করেছে, তা থেকে তাদের ফেরানাের জন্য প্রয়ােজন সুস্থ বিনােদন মাধ্যম। শিক্ষাঙ্গনকে হতে হবে রাজনীতিমুক্ত। আর শিক্ষাব্যবস্থাও হতে হবে স্বচ্ছ ও বাস্তব জীবনসম্মত। শিক্ষার নামে সার্টিফিকেট বিক্রির যে মহড়া সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে, তার মােহ থেকে যুবসমাজকে মুক্ত করে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।


বেকারত্বের অভিশাপ থেকে যুবসমাজকে মুক্ত করতে হবে এবং মেধার সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে। সমাজে মাদকের অবাধ ছড়াছড়ি রয়েছে। এসব মাদকের মুলােৎপাটনের মাধ্যমে যুবসমাজকে রক্ষা করতে হবে। কারণ মাদকের অর্থের জোগান দিতেই যুবসমাজ খুন, ডাকাতি, রাহাজানির মতাে বিষয়ে জড়িয়ে পড়ে। যুবসমাজের নৈতিকতা রক্ষায় মা-বাবাকে সচেষ্ট হতে হবে, সাধ্যানুযায়ী তাদের মৌলিক চাহিদা পুরণ করতে হবে এবং শিষ্টাচার শিক্ষা দিতে হবে।
শিক্ষকদেরকেও সঠিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে যুবসমাজের উন্নয়নে ভূমিকা প্রহণ করতে হবে। এছাড়া সমাজ ও রাষ্ট্রকেও যুবসমাজের উন্নয়নে প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই একটা জাতির বুকে একটি উন্নত যুবসমাজ গড়ে উঠবে।

প্রতিবেদক
হালিম ফয়জুল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *