নবম-দশম শ্রেণি বিজ্ঞান MCQ | | এসো বলকে জানি MCQ || অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর – ২০২৫

SSC বিজ্ঞান MCQ

অধ্যায় ১০: এসো বলকে জানি


১. জড়তা (Inertia) কী?

ক) বস্তুর ত্বরণ সৃষ্টি করার ক্ষমতা

খ) বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন ঘটানোর প্রবণতা

গ) বস্তু যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার প্রবণতা

ঘ) বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল

সঠিক উত্তর: গ) বস্তু যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার প্রবণতা

ব্যাখ্যা: জড়তা হলো পদার্থের একটি মৌলিক ধর্ম, যার কারণে স্থির বস্তু স্থির থাকতে চায় এবং গতিশীল বস্তু সুষম গতিতে সরলপথে চলতে চায়, যদি না তার উপর কোনো বাহ্যিক বল প্রয়োগ করা হয়।

২. জড়তা কয় প্রকার?

ক) ১ প্রকার

খ) ২ প্রকার

গ) ৩ প্রকার

ঘ) ৪ প্রকার

সঠিক উত্তর: খ) ২ প্রকার

ব্যাখ্যা: জড়তা দুই প্রকার—স্থিতি জড়তা (স্থির বস্তুর স্থির থাকতে চাওয়ার প্রবণতা) এবং গতি জড়তা (গতিশীল বস্তুর গতিশীল থাকতে চাওয়ার প্রবণতা)।

৩. চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে কেন?

ক) স্থিতি জড়তার কারণে

খ) গতি জড়তার কারণে

গ) বলের কারণে

ঘ) ঘর্ষণের কারণে

সঠিক উত্তর: খ) গতি জড়তার কারণে

ব্যাখ্যা: বাস যখন চলছিল, তখন যাত্রীর শরীরও বাসের সাথে গতিশীল ছিল। বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীর শরীরের নিচের অংশ বাসের সাথে থেমে যায়, কিন্তু উপরের অংশ গতি জড়তার কারণে সামনে এগিয়ে যেতে চায়, তাই সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

৪. থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রীরা পেছনের দিকে হেলে পড়ে কেন?

ক) স্থিতি জড়তার কারণে

খ) গতি জড়তার কারণে

গ) বলের কারণে

ঘ) অভিকর্ষের কারণে

সঠিক উত্তর: ক) স্থিতি জড়তার কারণে

ব্যাখ্যা: বাস যখন থেমে ছিল, যাত্রীর শরীরও স্থির ছিল। বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রীর শরীরের নিচের অংশ বাসের সাথে গতিশীল হয়, কিন্তু উপরের অংশ স্থিতি জড়তার কারণে স্থির থাকতে চায়, তাই পেছনের দিকে হেলে পড়ে।

৫. বস্তুর জড়তা কীসের উপর নির্ভর করে?

ক) বস্তুর আয়তন

খ) বস্তুর ভর

গ) বস্তুর বেগ

ঘ) বস্তুর আকৃতি

সঠিক উত্তর: খ) বস্তুর ভর

ব্যাখ্যা: বস্তুর ভর যত বেশি হয়, তার জড়তাও তত বেশি হয়। অর্থাৎ, বেশি ভরের বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে বেশি বল প্রয়োগ করতে হয়।

৬. যা কোনো স্থির বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করতে চায়, অথবা গতিশীল বস্তুর গতির পরিবর্তন করে বা করতে চায়, তাকে কী বলে?

ক) জড়তা

খ) ভরবেগ

গ) বল

ঘ) ত্বরণ

সঠিক উত্তর: গ) বল

ব্যাখ্যা: বল হলো একটি বাহ্যিক কারণ যা বস্তুর স্থির বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় বা ঘটাতে চায়।

৭. বলের SI একক কী?

ক) কেজি (kg)

খ) মিটার/সেকেন্ড (m/s)

গ) নিউটন (N)

ঘ) জুল (J)

সঠিক উত্তর: গ) নিউটন (N)

ব্যাখ্যা: বলের আন্তর্জাতিক একক হলো নিউটন (N)। ১ কেজি ভরের বস্তুর উপর যে বল প্রয়োগ করলে ১ m/s2 ত্বরণ সৃষ্টি হয়, তাকে ১ নিউটন বলে।

৮. নিউটনের গতিসূত্র কয়টি?

ক) ১টি

খ) ২টি

গ) ৩টি

ঘ) ৪টি

সঠিক উত্তর: গ) ৩টি

ব্যাখ্যা: স্যার আইজ্যাক নিউটন বস্তুর গতি ও বলের সম্পর্ক বিষয়ে তিনটি সূত্র প্রদান করেন।

৯. নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে কোন দুটি ধারণা পাওয়া যায়?

ক) বল ও ভরবেগ

খ) জড়তা ও বল

গ) ভর ও ত্বরণ

ঘ) কাজ ও শক্তি

সঠিক উত্তর: খ) জড়তা ও বল

ব্যাখ্যা: নিউটনের প্রথম সূত্র (বাহ্যিক বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু স্থির এবং গতিশীল বস্তু সুষম গতিতে সরলপথে চলতে থাকবে) থেকে বস্তুর জড়তার ধারণা এবং বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে বল প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার ধারণা পাওয়া যায়।

১০. নিউটনের কোন সূত্র থেকে বল পরিমাপ করা যায়?

ক) প্রথম সূত্র

খ) দ্বিতীয় সূত্র

গ) তৃতীয় সূত্র

ঘ) মহাকর্ষ সূত্র

সঠিক উত্তর: খ) দ্বিতীয় সূত্র

ব্যাখ্যা: নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র (বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার তার উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যেদিকে ক্রিয়া করে ভরবেগের পরিবর্তনও সেদিকে ঘটে) থেকে বলের পরিমাপ (F=ma) পাওয়া যায়।

১১. বস্তুর ভর ও বেগের গুণফলকে কী বলে?

ক) বল

খ) ত্বরণ

গ) ভরবেগ

ঘ) কাজ

সঠিক উত্তর: গ) ভরবেগ

ব্যাখ্যা: কোনো বস্তুর ভর (m) এবং তার বেগ (v) এর গুণফলকে ভরবেগ (p) বলে। অর্থাৎ, p=mv । এটি একটি ভেক্টর রাশি।

১২. ভরবেগের একক কী?

ক) kg⋅m/s2

খ) kg⋅m/s

গ) N⋅m

ঘ) N/s

সঠিক উত্তর: খ) kg⋅m/s

ব্যাখ্যা: ভরবেগের সূত্র p=mv অনুযায়ী, ভরের একক kg এবং বেগের একক m/s হওয়ায় ভরবেগের একক kg⋅m/s।

১৩. F=ma সমীকরণটি নিউটনের কোন সূত্র থেকে প্রতিপাদিত?

ক) প্রথম সূত্র

খ) দ্বিতীয় সূত্র

গ) তৃতীয় সূত্র

ঘ) কোনোটিই নয়

সঠিক উত্তর: খ) দ্বিতীয় সূত্র

ব্যাখ্যা: নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রানুযায়ী, প্রযুক্ত বল (F) বস্তুর ভর (m) ও ত্বরণের (a) গুণফলের সমানুপাতিক। সমানুপাতিক ধ্রুবকের মান ১ ধরলে, F=ma হয়।

১৪. নিউটনের তৃতীয় সূত্রটি কী?

ক) প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে

খ) বল প্রয়োগ না করলে বস্তু স্থির থাকে

গ) বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক

ঘ) মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু পরস্পরকে আকর্ষণ করে

সঠিক উত্তর: ক) প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে

ব্যাখ্যা: নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে, যখন একটি বস্তু অন্য বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে (ক্রিয়া), তখন দ্বিতীয় বস্তুটিও প্রথম বস্তুর উপর সমান ও বিপরীত দিকে বল প্রয়োগ করে (প্রতিক্রিয়া)।

১৫. নৌকা থেকে লাফ দিয়ে তীরে নামার সময় নৌকাটি পেছনের দিকে সরে যায় কেন?

ক) নিউটনের প্রথম সূত্রের জন্য

খ) নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রের জন্য

গ) নিউটনের তৃতীয় সূত্রের জন্য

ঘ) জড়তার জন্য

সঠিক উত্তর: গ) নিউটনের তৃতীয় সূত্রের জন্য

ব্যাখ্যা: লাফ দেওয়ার সময় ব্যক্তি নৌকার উপর পেছনের দিকে একটি বল (ক্রিয়া) প্রয়োগ করে, নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী নৌকাও ব্যক্তির উপর সামনের দিকে সমান ও বিপরীত বল (প্রতিক্রিয়া) প্রয়োগ করে। এই ক্রিয়া বলের কারণে নৌকাটি পেছনের দিকে সরে যায়।

১৬. দুটি বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষের আগে মোট ভরবেগ এবং সংঘর্ষের পরে মোট ভরবেগ কেমন থাকে?

ক) সংঘর্ষের পর ভরবেগ বাড়ে

খ) সংঘর্ষের পর ভরবেগ কমে

গ) ভরবেগ সমান থাকে (যদি বাহ্যিক বল ক্রিয়া না করে)

ঘ) ভরবেগ শূন্য হয়ে যায়

সঠিক উত্তর: গ) ভরবেগ সমান থাকে (যদি বাহ্যিক বল ক্রিয়া না করে)

ব্যাখ্যা: এটি ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র। একাধিক বস্তুর মধ্যে কেবল ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বল ক্রিয়া করলে, অন্য কোনো বাহ্যিক বল ক্রিয়া না করলে, তাদের মোট ভরবেগ অপরিবর্তিত থাকে। অর্থাৎ, সংঘর্ষের আগের মোট ভরবেগ ও পরের মোট ভরবেগ সমান হয়।

১৭. যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে চলতে চেষ্টা করে বা চলে, তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে যে বাধার সৃষ্টি হয়, তাকে কী বলে?

ক) টান

খ) ঘর্ষণ

গ) অভিকর্ষ

ঘ) প্লবতা

সঠিক উত্তর: খ) ঘর্ষণ

ব্যাখ্যা: ঘর্ষণ হলো এক প্রকার বল যা দুটি তলের সংস্পর্শে থেকে একের সাপেক্ষে অন্যের গতির বিরুদ্ধে বা গতি সৃষ্টির চেষ্টার বিরুদ্ধে কাজ করে।

১৮. ঘর্ষণ বল কয় প্রকার?

ক) ২ প্রকার

খ) ৩ প্রকার

গ) ৪ প্রকার

ঘ) ৫ প্রকার

সক্তিহক উত্তর: গ) ৪ প্রকার

ব্যাখ্যা: প্রধানত ঘর্ষণ বল চার প্রকার: স্থিতি ঘর্ষণ, গতি ঘর্ষণ, আবর্ত ঘর্ষণ (Rolling friction) এবং প্রবাহী ঘর্ষণ (Fluid friction)।

১৯. দুটি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে থাকা অবস্থায় একটির সাপেক্ষে অন্যটি স্থির থাকাকালীন যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে, তাকে কী বলে?

ক) গতি ঘর্ষণ

খ) স্থিতি ঘর্ষণ

গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ

সক্তিহক উত্তর: খ) স্থিতি ঘর্ষণ

ব্যাখ্যা: স্থিতি ঘর্ষণ হলো সেই ঘর্ষণ বল যা দুটি তলের আপেক্ষিক গতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই গতির চেষ্টার বিরুদ্ধে ক্রিয়া করে। বস্তু চলতে শুরু করার আগ পর্যন্ত এই বল প্রযুক্ত বলের সমান থাকে।

২০. যখন একটি বস্তু অন্য বস্তুর উপর দিয়ে চলতে থাকে, তখন যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে কী বলে?

ক) স্থিতি ঘর্ষণ

খ) গতি ঘর্ষণ

গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ

সক্তিহক উত্তর: খ) গতি ঘর্ষণ

ব্যাখ্যা: গতি ঘর্ষণ বা পিছলানো ঘর্ষণ (Sliding friction) হলো সেই ঘর্ষণ বল যা একটি তল যখন অন্য তলের উপর দিয়ে পিছলে বা ঘষে চলে তখন গতির বিপরীতে ক্রিয়া করে।

২১. যখন একটি বস্তু অন্য একটি তলের উপর দিয়ে গড়িয়ে চলে, তখন কোন ঘর্ষণ ক্রিয়া করে?

ক) স্থিতি ঘর্ষণ

খ) গতি ঘর্ষণ

গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ

সক্তিহক উত্তর: গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ব্যাখ্যা: আবর্ত ঘর্ষণ বা Rolling friction তখন ক্রিয়া করে যখন একটি বস্তু (যেমন চাকা বা বল) অন্য একটি তলের উপর দিয়ে গড়িয়ে চলে। এর মান গতি ঘর্ষণের চেয়ে অনেক কম।

২২. তরল বা বায়বীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে কোনো বস্তু চলার সময় যে ঘর্ষণ বল অনুভব করে, তাকে কী বলে?

ক) স্থিতি ঘর্ষণ

খ) গতি ঘর্ষণ

গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ

সক্তিহক উত্তর: ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ

ব্যাখ্যা: প্রবাহী (তরল বা বায়বীয়) পদার্থের মধ্য দিয়ে কোনো বস্তু গতিশীল হলে প্রবাহী তার গতির বিরুদ্ধে যে বাধা দেয়, তাকে প্রবাহী ঘর্ষণ বলে। যেমন – বাতাসের বাধা, পানির বাধা।

২৩. কোন ঘর্ষণ বলের মান সবচেয়ে কম?

ক) স্থিতি ঘর্ষণ

খ) গতি ঘর্ষণ

গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ

সক্তিহক উত্তর: গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ব্যাখ্যা: সাধারণত, স্থিতি ঘর্ষণের সর্বোচ্চ মান গতি ঘর্ষণের চেয়ে বেশি এবং গতি ঘর্ষণের মান আবর্ত ঘর্ষণের চেয়ে অনেক বেশি। তাই আবর্ত ঘর্ষণের মান সবচেয়ে কম।

২৪. গাড়ির চাকায় বল বিয়ারিং ব্যবহার করা হয় কেন?

ক) ঘর্ষণ বাড়ানোর জন্য

খ) গতি ঘর্ষণকে আবর্ত ঘর্ষণে রূপান্তর করে ঘর্ষণ কমানোর জন্য

গ) ওজন কমানোর জন্য

ঘ) গাড়ির গতি বাড়ানোর জন্য

সক্তিহক উত্তর: খ) গতি ঘর্ষণকে আবর্ত ঘর্ষণে রূপান্তর করে ঘর্ষণ কমানোর জন্য

ব্যাখ্যা: বল বিয়ারিংয়ের মধ্যে থাকা ছোট ছোট স্টিলের বলগুলো দুটি চলমান অংশের মধ্যে সরাসরি ঘষা লাগতে দেয় না, বরং একটি অংশ অন্যটির সাপেক্ষে গড়িয়ে চলে। এতে গতি ঘর্ষণ (যা বেশি) আবর্ত ঘর্ষণে (যা কম) রূপান্তরিত হয়, ফলে যন্ত্রাংশের ক্ষয় কমে ও সহজে ঘুরতে পারে।

২৫. টায়ারের পৃষ্ঠে খাঁজ কাটা থাকে কেন?

ক) সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য

খ) টায়ারের ওজন বাড়ানোর জন্য

গ) রাস্তার সাথে টায়ারের ঘর্ষণ বাড়ানোর জন্য

ঘ) ঘর্ষণ কমানোর জন্য

সক্তিহক উত্তর: গ) রাস্তার সাথে টায়ারের ঘর্ষণ বাড়ানোর জন্য

ব্যাখ্যা: গাড়ির টায়ারের খাঁজগুলো রাস্তার সাথে আটকে ধরতে (grip) সাহায্য করে, যা প্রয়োজনীয় ঘর্ষণ বল সৃষ্টি করে। এর ফলে গাড়ি সহজে থামানো যায়, নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় এবং ভেজা বা পিচ্ছিল রাস্তাতেও পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে।

২৬. প্যারাস্যুট ব্যবহার করে বিমান থেকে নামার সময় কোন ঘর্ষণ কাজে লাগে?

ক) স্থিতি ঘর্ষণ

খ) গতি ঘর্ষণ

গ) আবর্ত ঘর্ষণ

ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ (বায়ুর বাধা)

সক্তিহক উত্তর: ঘ) প্রবাহী ঘর্ষণ (বায়ুর বাধা)

ব্যাখ্যা: প্যারাস্যুটের বিশাল পৃষ্ঠতল বাতাসের অনেক বেশি বাধা (প্রবাহী ঘর্ষণ) সৃষ্টি করে, যা পতনশীল ব্যক্তির গতি কমিয়ে দেয় এবং নিরাপদে মাটিতে নামতে সাহায্য করে।

২৭. কোনো বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলগুলোর লব্ধি শূন্য হয়, তবে তাকে কী ধরনের বল বলে?

ক) অসাম্য বল

খ) সাম্য বল

গ) ঘর্ষণ বল

ঘ) মহাকর্ষ বল

সক্তিহক উত্তর: খ) সাম্য বল

ব্যাখ্যা: যখন কোনো বস্তুর উপর ক্রিয়ারত একাধিক বলের ভেক্টর যোগফল বা লব্ধি শূন্য হয় (ΣF=0), তখন বলগুলোকে সাম্য বল বলে। সাম্য বল বস্তুর গতির অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে না (স্থির বস্তু স্থির থাকে, গতিশীল বস্তু সমবেগে চলে)।

২৮. কোনো বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলগুলোর লব্ধি শূন্য না হয়, তবে তাকে কী ধরনের বল বলে?

ক) অসাম্য বল

খ) সাম্য বল

গ) কেন্দ্রমুখী বল

ঘ) স্পর্শ বল

সক্তিহক উত্তর: ক) অসাম্য বল

ব্যাখ্যা: যখন কোনো বস্তুর উপর ক্রিয়ারত একাধিক বলের লব্ধি অশূন্য হয় (ΣF=0), তখন বলগুলোকে অসাম্য বল বলে। অসাম্য বল বস্তুর গতির অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়, অর্থাৎ ত্বরণ সৃষ্টি করে (F=ma অনুযায়ী)।

২৯. একটি বই টেবিলের উপর স্থির অবস্থায় আছে। বইটির উপর কোন কোন বল ক্রিয়া করছে?

ক) শুধু অভিকর্ষ বল

খ) শুধু টেবিলের ঊর্ধ্বমুখী প্রতিক্রিয়া বল

গ) অভিকর্ষ বল ও টেবিলের ঊর্ধ্বমুখী প্রতিক্রিয়া বল

ঘ) কোনো বল ক্রিয়া করছে না

সক্তিহক উত্তর: গ) অভিকর্ষ বল ও টেবিলের ঊর্ধ্বমুখী প্রতিক্রিয়া বল

ব্যাখ্যা: বইটি স্থির আছে কারণ এর উপর ক্রিয়ারত বলগুলো সাম্যাবস্থায় আছে। বইটির উপর পৃথিবীর অভিকর্ষ বল (ওজন) নিচের দিকে এবং টেবিলের পৃষ্ঠ কর্তৃক প্রযুক্ত লম্ব প্রতিক্রিয়া বল উপরের দিকে ক্রিয়া করছে। এই দুটি বল সমান ও বিপরীতমুখী হওয়ায় লব্ধি শূন্য।

৩০. মহাকর্ষ বল কী ধরনের বল?

ক) স্পর্শ বল

খ) অস্পর্শ বল

গ) ঘর্ষণ বল

ঘ) টান বল

সক্তিহক উত্তর: খ) অস্পর্শ বল

ব্যাখ্যা: যে বল ক্রিয়া করার জন্য দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের প্রয়োজন হয় না, তাকে অস্পর্শ বল বলে। মহাকর্ষ বল, তড়িৎ চৌম্বক বল হলো অস্পর্শ বলের উদাহরণ।

৩১. নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী, দুটি বস্তুর মধ্যকার আকর্ষণ বল কীসের সমানুপাতিক?

ক) বস্তুদ্বয়ের ভরের গুণফলের

খ) বস্তুদ্বয়ের দূরত্বের

গ) বস্তুদ্বয়ের বেগের গুণফলের

ঘ) বস্তুদ্বয়ের আয়তনের

সক্তিহক উত্তর: ক) বস্তুদ্বয়ের ভরের গুণফলের

ব্যাখ্যা: নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রানুযায়ী, মহাবিশ্বের যেকোনো দুটি বস্তুকণার মধ্যকার আকর্ষণ বলের মান কণা দুইটির ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। F∝m1​m2​ এবং F∝1/d2 ।

৩২. পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের কারণে বস্তুর যে ত্বরণ হয় তাকে কী বলে?

ক) রৈখিক ত্বরণ

খ) কৌণিক ত্বরণ

গ) অভিকর্ষজ ত্বরণ (g)

ঘ) কেন্দ্রমুখী ত্বরণ

সক্তিহক উত্তর: গ) অভিকর্ষজ ত্বরণ (g)

ব্যাখ্যা: অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মুক্তভাবে পড়ন্ত বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ (acceleration due to gravity, g) বলে।

৩৩. পৃথিবীতে g এর আদর্শ মান কত?

ক) 9.8 m/s2

খ) 1.6 m/s2

গ) 10 m/s2

ঘ) 6.67×10−11 m/s2

সক্তিহক উত্তর: ক) 9.8 m/s2

ব্যাখ্যা: ভূপৃষ্ঠে বা এর কাছাকাছি অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর মান স্থানভেদে সামান্য পরিবর্তিত হলেও এর আদর্শ মান ধরা হয় 9.8 m/s2 (প্রায়)।

৩৪. বস্তুর ওজন (W) কী?

ক) বস্তুর ভর

খ) বস্তুর জড়তা

গ) বস্তুর উপর পৃথিবীর আকর্ষণ বল

ঘ) বস্তুর ভরবেগ

সক্তিহক উত্তর: গ) বস্তুর উপর পৃথিবীর আকর্ষণ বল

ব্যাখ্যা: কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা তার কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে, তাকে বস্তুর ওজন (Weight, W) বলে। ওজন = ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ (W=mg)। এটি একটি বল, তাই এর একক নিউটন।

৩৫. চাঁদে কোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীর ওজনের কত ভাগ?

ক) সমান

খ) ৬ গুণ

গ) ১/৬ গুণ

ঘ) শূন্য

সক্তিহক উত্তর: গ) ১/৬ গুণ

ব্যাখ্যা: চাঁদের অভিকর্ষজ ত্বরণ পৃথিবীর অভিকর্ষজ ত্বরণের প্রায় ১/৬ ভাগ। তাই চাঁদে কোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীতে তার ওজনের প্রায় ১/৬ গুণ হয়, যদিও বস্তুর ভর অপরিবর্তিত থাকে।

৩৬. ঘর্ষণ একটি প্রয়োজনীয় উপদ্রব – এর কারণ কী?

ক) ঘর্ষণ সবসময় উপকারী

খ) ঘর্ষণ সবসময় ক্ষতিকর

গ) ঘর্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ই আছে

ঘ) ঘর্ষণের কোনো প্রভাব নেই

সক্তিহক উত্তর: গ) ঘর্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ই আছে

ব্যাখ্যা: ঘর্ষণের কারণে আমরা হাঁটতে পারি, লিখতে পারি, গাড়ির ব্রেক কাজ করে – এগুলো সুবিধা। আবার ঘর্ষণের কারণে যন্ত্রাংশের ক্ষয় হয়, শক্তি নষ্ট হয়, গতি কমে যায় – এগুলো অসুবিধা। তাই একে প্রয়োজনীয় উপদ্রব বলা হয়।

৩৭. মসৃণ তলে ঘর্ষণ বল কেমন হয়?

ক) খুব বেশি

খ) মাঝারি

গ) কম

ঘ) শূন্য

সক্তিহক উত্তর: গ) কম

ব্যাখ্যা: তলের মসৃণতা বাড়লে ঘর্ষণ বল সাধারণত কমে যায়। অমসৃণ বা খসখসে তলে ঘর্ষণ বল বেশি হয়।

৩৮. লিফটে উপরে ওঠার সময় আমরা নিজেদের ওজন কেমন অনুভব করি?

ক) কম

খ) বেশি

গ) সমান

ঘ) শূন্য

সক্তিহক উত্তর: খ) বেশি

ব্যাখ্যা: লিফট যখন ত্বরণসহ উপরে ওঠে, তখন লিফটের মেঝে আমাদের উপর ঊর্ধ্বমুখী প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে যা আমাদের স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে বেশি হয়। তাই আমরা ওজন বেশি অনুভব করি। (Wapparent​=m(g+a))।

৩৯. রকেটের গতি নিউটনের কোন সূত্রের উপর ভিত্তি করে?

ক) প্রথম সূত্র

খ) দ্বিতীয় সূত্র

গ) তৃতীয় সূত্র ও ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র

ঘ) মহাকর্ষ সূত্র

সক্তিহক উত্তর: গ) তৃতীয় সূত্র ও ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র

ব্যাখ্যা: রকেট তীব্র বেগে গ্যাস নিচের দিকে নির্গত করে (ক্রিয়া)। নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী, গ্যাস রকেটের উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল (প্রতিক্রিয়া) প্রয়োগ করে, যা রকেটকে উপরের দিকে চালিত করে। এখানে ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রও প্রযোজ্য হয়।

৪০. বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হলে বন্দুক পেছনের দিকে ধাক্কা দেয় কেন?

ক) গুলির বেগের কারণে

খ) বন্দুকের ভরের কারণে

গ) ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বলের কারণে (ভরবেগের সংরক্ষণ)

ঘ) বাতাসের বাধার কারণে

সক্তিহক উত্তর: গ) ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বলের কারণে (ভরবেগের সংরক্ষণ)

ব্যাখ্যা: গুলি ছোড়ার সময় বন্দুক গুলিকে সামনের দিকে বল প্রয়োগ করে (ক্রিয়া)। এর প্রতিক্রিয়ায় গুলিও বন্দুককে সমান ও বিপরীত দিকে বল প্রয়োগ করে, ফলে বন্দুক পেছনের দিকে ধাক্কা খায়। এটি ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র দ্বারাও ব্যাখ্যা করা যায় (গুলি ও বন্দুকের মোট ভরবেগ ছোড়ার আগে ও পরে সংরক্ষিত থাকে)।

Leave a Reply

Scroll to Top