3 min read

গ্রন্থগত বিদ্যা আর পর হস্তে ধন নহে বিদ্যা, নহে ধন হলে প্রয়োজন

ভাব-সম্প্রসারণ: গ্রন্থগত বিদ্যা এবং পরের হাতের ধন-সম্পদ যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের অর্জনে না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত তা কোনাে কাজে আসে না। অর্থাৎ বইয়ের বিদ্যা যা আত্মস্থ হয় নি এবং পরের অধীন সম্পদ যা নিজের আয়ত্তে আসে নি- এ দুটিই সমান। কারণ প্রয়ােজনের সময় এ সম্পদ কোনাে কাজে ব্যবহার করা যায় না।

মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। তার বিবেক আছে। মানুষ জ্ঞান অর্জন করে মহৎ গুণাবলির অধিকারী হয়। পরিশ্রম ও বুদ্ধি দিয়ে সে অর্থ উপার্জন করে। জ্ঞান ও অর্থ মানুষের মনুষ্যত্বকে পূর্ণতা দেয়। জ্ঞান অর্জন করতে হলে তাকে পড়াশুনা করতে হয়। গ্রন্থ বা বই জ্ঞানের ভান্ডার। এ গ্রন্থ পাঠ করে অন্য মানুষ তার জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত করতে পারে। জ্ঞানের ধারক ও বাহক হচ্ছে বই। গ্রন্থে আবদ্ধ মননের সােনালি শস্যের স্বাদ পেতে হলে আমাদেরকে বই পড়তেই হবে। কিন্তু বই হৃদয়ঙ্গম না করে কেবল প্রচুর বই সংগ্রহে রাখলেই তাকে জ্ঞানী বলা যায় না।

কারণ ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় জীবনের প্রয়োজন দেখা দিলে গ্রন্থগত সে, বিদ্যা কোনাে কাজেই আসে না। কেবল মুখস্থ করে পরীক্ষা পাস করলেই প্রকৃত শিক্ষিত হতে পারে না। যদি গ্রন্ধের আদর্শকে আত্মস্থ করা না যায়, তাহলে তা জীবনের কোনাে উপকারেই আসে না। বিদ্যার পােশাকীরূপে দেহশােভিত করলেই যথার্থ বিদ্বান হওয়া যায় না। যেমন নিজের ধন অন্যের কাছে থাকলে প্রয়ােজনের সময় উপকারে আসে না। বিদ্যা ও ধন মানুষের অতি প্রয়ােজনীয় জিনিস। তাদের কাজে লাগাতে হলে বিদ্যাকে করতে হয় আত্মস্থ আর ধনকে রাখতে হয় নিজের আয়ত্তে।

সে জন্যেই বলা হয়েছে, পুঁথিগত বিদ্যা যেমন নিষ্প্রয়ােজন, তেমনি পরহস্তের ধনও নিরর্থক | বই জ্ঞান অর্জনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম এটা যেমন সত্য, তেমনি এও সত্য বই থেকে আহরিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হয় এবং ধন-সম্পদ নিষ্ঠার সঙ্গে আপন আয়ত্তে আনতে হবে। তাহলেই তা প্রয়ােজনে কাজে লাগবে।

0
0
0
0
0

Download Post

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *