ছাত্রজীবনে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়িত হওয়ার কুফল জানিয়ে ছােট ভাইয়ের নিকট একটি পত্র লেখ।
১৪. ০২. ২০১৯
ষাটের পাড়া, নরসিংদী
স্নেহের মাহমুদ,
আমার স্নেহাশিস ও দোয়া নিও। গতকাল তােমার লেখা একটি পত্র পেয়েছি। তা পড়ে অনেক কথাই অবগত হলাম। মনে হচ্ছে তুমি প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যােগদান করেছ। এটাকে আমি খুব ভালাে মনে করতে পারছি না। কারণ সব দেশেই দেখা গেছে ছাত্রদেরকে রাজনীতিতে টেনে আনা হয়েছে স্বার্থান্ধ রাজনীতিকদের পথ
পরিষ্কারের জন্য। ছাত্রদের প্রবল আন্দোলনে সে উদ্দেশ্য হাসিল হলেও শেষ পর্যন্ত তারা নিজেদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তাদের সম্ভাবনাময় জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। তবে পরাধীনতার গ্লানি মােচন করতে বা জাতির নিরাপত্তায় বিপন্নভাব দেখা দিলে ছাত্রশক্তিকে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশ নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
এ রকম অবস্থায় তারা নিষ্ক্রিয় থাকলে সেটা জাতির কাছে তাদের অপরাধ বলেই চিরকাল চিহ্নিত হবে। দেশ যদি এ রকম অবস্থার শিকার না হয় তবে লেখাপড়া, করাই ছাত্রদের তপস্যা এবং বিদ্যাশিক্ষা করাই তাদের ধর্ম হওয়া উচিত। ছাত্রজীবন হলাে উন্নত নাগরিক হিসেবে প্রস্তুতি নেবার ও যােগ্যতা অর্জনের সময়। এ বয়সে দৃষ্টি ও মনােযােগ কোনাে নির্দিষ্ট রূপ লাভ করে না বলে এ সময়ে তাদের বিভ্রান্ত হওয়ার ও বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে কথা তােমারও মনে রাখতে হবে। দেশের সার্বিক মঙ্গল যে কাজগুলােতে হয় সেগুলােতে নিজের কর্তব্য সম্পন্ন করে যােগ দিতে পার। কিন্তু প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যােগ দেবার সময় এটা
নয়।
এসবের মধ্যে একবার জড়িয়ে পড়লে গােলক ধাঁধার মতাে কেবল ঘুরে মরতে হবে, বেরিয়ে আসার কোনাে পথ খুঁজে পাবে না। এর মধ্যেই তােমার সম্ভাবনাময় সুন্দর জীবনের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। তাই আমার উপদেশ, ছাত্রজীবনে প্রত্যক্ষ রাজনীতি নয়, লেখাপড়া করাই তােমার একমাত্র কাজ ও কর্তব্য।
আমরা সবাই ভালাে আছি। তােমার সুন্দর জীবন ও সর্বাঙ্গিন সাফল্য কামনা করি।
ইতি –
তােমার বড় ভাই
আব্দুস সামাদ
[বিশেষ দ্রষ্টব্য : পত্রের শেষে ডাকটিকেট সংবলিত খাম ও ঠিকানা ব্যবহার অপরিহার্য]