2 min read
Table of Contents
তবে কি সাহিত্যের উদ্দেশ্য লোককে শিক্ষা দেওয়া?
তবে কি সাহিত্যের উদ্দেশ্য লোককে শিক্ষা দেওয়া? অবশ্য নয়। কেননা কবির মতিগতি শিক্ষকের মতিগতির সম্পূর্ণ বিপরীত। স্কুল না বন্ধ হলে যে খেলার সময় আসে না, এ তো সকলেরই জানা কথা। কিন্তু সাহিত্য রচনা যে আত্মার লীলা, এ কথা শিক্ষকেরা স্বীকার করতে প্রস্তুত নন। সুতরাং শিক্ষা ও সাহিত্যের ধর্মকর্ম যে এক নয়, এ সত্যটি একটু স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেওয়া আবশ্যক। প্রথমত শিক্ষা হচ্ছে সেই বস্তু যা লোকে নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও গলধঃকরণ করতে বাধ্য হয়, অপর পক্ষে কাব্যরস লোকে শুধু স্বেচ্ছায় নয় সানন্দে পান করে, কেননা শাস্ত্রমতে সে রস অমৃত। দ্বিতীয়ত শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের মনকে বিশ্বের খবর জানানো, সাহিত্যের উদ্দেশ্য মানুষের মনকে জাগানো, কাব্য যে সংবাদপত্র নয়, একথা সকলেই জানেন। তৃতীয়ত অপরের মনের অভাব পূর্ণ করবার উদ্দেশ্যেই শিক্ষকের হস্তে শিক্ষা জন্মলাভ করছে, কিন্তু কবির নিজের মনের পরিপূর্ণতা হতেই সাহিত্যের উৎপত্তি।
সারাংশ:
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কিংবা সংবাদপত্রের উদ্দেশ্য থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন করে সাহিত্য। একান্ত বাধ্য হয়ে মানুষ শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে, কিন্তু সাহিত্যের কাছ থেকে সে প্রত্যাশা করে আনন্দ। শিক্ষা সংবাদপত্র মানুষকে তথ্য দিয়ে থাকে অপরদিকে সাহিত্য মানুষের হৃদয়কে জাগ্রত করে। শিক্ষক যেখানে অন্যের মনের ক্ষুধা নিবারণের জন্য ব্যস্ত থাকেন, কবি সেখানে আপন মনের খেয়ালে কাব্য রস সৃষ্টি করেন।