দীপশিখা যেমন সমগ্র প্রদীপটির বাণী প্রকাশ করে
দীপশিখা যেমন সমগ্র প্রদীপটির বাণী প্রকাশ করে, তেমন করিয়া কবি জনসাধারণের অস্পষ্ট অনুভূতিকে নিজের হৃদয়ের গভীর রসানুভূতি দ্বারা ভাষায় প্রকাশ করেন। এই প্রকাশ করিবার আশ্চর্য ক্ষমতা অনন্যসাধারণ। অনুভব অল্পবিস্তর সকলেই করিতে পারে। কিন্তু সেই অনুভূতিকে হৃদয়ের জড়তা ভাঙ্গিয়া তুলিবার সোনার কাঠিটি পায় কয়জনে? রাত্রির অন্ধকারে অরণ্য যে কথাটি বলিবার জন্যে আকুলি-বিকুলি করিয়া মরে, পূর্ব গগনে সোনার রেখা ফুটিতে সেই কথাটি শত শত বিহঙ্গের কণ্ঠে স্বতঃউচ্ছ্বসিত হইয়া ওঠে।
কবিরা সেই ভোরের পাখি। তাহারা যে কথাটি বলেন, তাহা খাপছাড়া একটা নিতান্ত অদ্ভুত জিনিস নহে। তাহাদের বাণীটি সমগ্র জনসাধারণের মধ্যে মগ্নচৈতন্য অবস্থায় আছে। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করিতে পারি না যে, কোনো মহাকবির জন্যে তোমার দেশ পূর্ব হইতেই ধীরে ধীরে প্রস্তুত হইয়া থাকে।
সারাংশ:
অনুভব করার ক্ষমতা সকলের থাকলেও সেই অনুভূতিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেবল একজন কবিই প্রকাশ করতে পারেন। তিনি জনসাধারণের অনুভূতিকে সৌন্দর্যমন্ডিত করে বাণীরূপ দেন। এমন একজন মহান কবির জন্য গোটা জাতি আগে থেকেই অপেক্ষা করে এবং ধীরে ধীরে তৈরি হতে থাকে।