16 min read
Table of Contents
SSC বিজ্ঞান MCQ
অধ্যায় ৯: দুর্যোগের সাথে বসবাস
১. কোনো স্থানের স্বল্প সময়ের (দৈনিক বা কয়েক দিনের) বায়ুমণ্ডলের অবস্থাকে কী বলে?
ক) জলবায়ু
খ) আবহাওয়া
গ) দুর্যোগ
ঘ) ঋতু
সঠিক উত্তর: খ) আবহাওয়া
ব্যাখ্যা: আবহাওয়া হলো কোনো নির্দিষ্ট স্থানের স্বল্প সময়ের (কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন) বায়ুমণ্ডলের অবস্থা, যেমন তাপমাত্রা, বায়ুচাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি।
২. কোনো অঞ্চলের ৩০-৪০ বছরের গড় আবহাওয়াকে কী বলে?
ক) আবহাওয়া
খ) জলবায়ু
গ) দুর্যোগ
ঘ) বর্ষাকাল
সঠিক উত্তর: খ) জলবায়ু
ব্যাখ্যা: জলবায়ু হলো কোনো অঞ্চলের দীর্ঘ সময়ের (সাধারণত ৩০-৪০ বছর বা তার বেশি) আবহাওয়ার গড় অবস্থা বা সাধারণ প্যাটার্ন।
৩. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ কী?
ক) আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
খ) পৃথিবীর আবর্তন
গ) বৈশ্বিক উষ্ণায়ন
ঘ) চন্দ্রগ্রহণ
সঠিক উত্তর: গ) বৈশ্বিক উষ্ণায়ন
ব্যাখ্যা: বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিই হলো জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ। এর ফলে আবহাওয়ার ধরন, বৃষ্টিপাত, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ইত্যাদিতে দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন আসছে।
৪. বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য প্রধানত দায়ী কোনটি?
ক) বনভূমি বৃদ্ধি
খ) গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধি
গ) জনসংখ্যা হ্রাস
ঘ) সৌরশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি
সঠিক উত্তর: খ) গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধি
ব্যাখ্যা: বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস (কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, সিএফসি, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি) বেড়ে গেলে তা পৃথিবীর তাপ ধরে রাখে, ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, যাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলে।
৫. প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস কোনটি?
ক) অক্সিজেন (O2)
খ) নাইট্রোজেন (N2)
গ) কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2)
ঘ) হাইড্রোজেন (H2)
সঠিক উত্তর: গ) কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2)
ব্যাখ্যা: যদিও মিথেন, সিএফসি ইত্যাদি গ্যাসের তাপ শোষণ ক্ষমতা বেশি, কিন্তু বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ ও বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি হওয়ায় একেই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য প্রধানত দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৬. গ্রিনহাউস প্রভাব কী?
ক) কাচের ঘরে ঠান্ডা ধরে রাখা
খ) কাচের ঘরে অতিরিক্ত তাপ উৎপাদিত হওয়া
গ) বায়ুমণ্ডলের গ্যাস দ্বারা পৃথিবীর তাপ ধরে রাখার প্রক্রিয়া
ঘ) বায়ুমণ্ডলের গ্যাস দ্বারা সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত হওয়া
সঠিক উত্তর: গ) বায়ুমণ্ডলের গ্যাস দ্বারা পৃথিবীর তাপ ধরে রাখার প্রক্রিয়া
ব্যাখ্যা: গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো বায়ুমণ্ডলে একটি চাদরের মতো সৃষ্টি করে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে ফিরে যেতে বাধা দেয় এবং পৃথিবীকে উষ্ণ রাখে। এই প্রক্রিয়াটিই গ্রিনহাউস প্রভাব।
৭. কোনটি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস?
ক) কয়লা
খ) প্রাকৃতিক গ্যাস
গ) খনিজ তেল
ঘ) সৌরশক্তি
সঠিক উত্তর: ঘ) সৌরশক্তি
ব্যাখ্যা: নবায়নযোগ্য শক্তি হলো সেই শক্তি যা ব্যবহারের পর পুনরায় উৎপন্ন হয় বা সহজে নিঃশেষ হয় না। সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ ইত্যাদি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস। কয়লা, তেল, গ্যাস অনবায়নযোগ্য।
৮. বাংলাদেশে সংঘটিত প্রধান প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনটি?
ক) ভূমিকম্প
খ) বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়
গ) তুষারপাত
ঘ) আগ্নেয়গিরি
সঠিক উত্তর: খ) বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়
ব্যাখ্যা: ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, খরা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়। এর মধ্যে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় সবচেয়ে নিয়মিত ও মারাত্মক।
৯. বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে যখন স্থলভাগ প্লাবিত করে, তখন তাকে কী বলে?
ক) খরা
খ) ঘূর্ণিঝড়
গ) বন্যা
ঘ) নদীভাঙন
সঠিক উত্তর: গ) বন্যা
ব্যাখ্যা: বন্যা হলো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যখন অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত বা বরফ গলার কারণে নদীর পানি ধারণক্ষমতার বাইরে চলে গিয়ে পার্শ্ববর্তী নিচু এলাকা প্লাবিত করে।
১০. সমুদ্রে সৃষ্ট প্রচণ্ড শক্তিশালী ঘূর্ণিবায়ুকে কী বলে?
ক) টর্নেডো
খ) কালবৈশাখী
গ) ঘূর্ণিঝড় (সাইক্লোন)
ঘ) ভূমিকম্প
সঠিক উত্তর: গ) ঘূর্ণিঝড় (সাইক্লোন)
ব্যাখ্যা: ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে সৃষ্ট প্রচণ্ড গতিবেগসম্পন্ন ঘূর্ণিবায়ু যা ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছ্বাস ঘটায়, তাকে ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন বলে।
১১. ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রের পানি ফুলে উঠে উপকূলে আছড়ে পড়লে তাকে কী বলে?
ক) সুনামি
খ) বন্যা
গ) জলোচ্ছ্বাস
ঘ) নদীভাঙন
সঠিক উত্তর: গ) জলোচ্ছ্বাস
ব্যাখ্যা: ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এবং নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রের পানি অস্বাভাবিকভাবে ফুলে উঠে উঁচু ঢেউ আকারে উপকূলে আছড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে, একে জলোচ্ছ্বাস (Storm Surge) বলে।
১২. দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়া বা অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে কী বলে?
ক) বন্যা
খ) খরা
গ) ঘূর্ণিঝড়
ঘ) শৈত্যপ্রবাহ
সঠিক উত্তর: খ) খরা
ব্যাখ্যা: খরা হলো একটি দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়া পরিস্থিতি যখন কোনো অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়, ফলে মাটি শুকিয়ে যায়, পানির অভাব দেখা দেয় এবং কৃষি ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
১৩. নদীর স্রোতের কারণে পাড়ের মাটি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হওয়াকে কী বলে?
ক) বন্যা
খ) খরা
গ) নদীভাঙন
ঘ) ভূমিধস
সঠিক উত্তর: গ) নদীভাঙন
ব্যাখ্যা: নদীর পানি প্রবাহের গতি ও দিক পরিবর্তন, স্রোতের আঘাত এবং মাটির দুর্বল গঠনের কারণে নদীর পাড় ভেঙে যাওয়ার ঘটনাকে নদীভাঙন বলে।
১৪. ভূ-অভ্যন্তরের শিলা আকস্মিকভাবে কেঁপে ওঠাকে কী বলে?
ক) ঘূর্ণিঝড়
খ) আগ্নেয়গিরি
গ) ভূমিকম্প
ঘ) সুনামি
সঠিক উত্তর: গ) ভূমিকম্প
ব্যাখ্যা: ভূ-ত্বকের টেকটোনিক প্লেটের সঞ্চালন বা শিলাচ্যুতির কারণে ভূপৃষ্ঠের কোনো অংশ হঠাৎ কেঁপে ওঠাকে ভূমিকম্প বলে।
১৫. ভূমিকম্পের কেন্দ্র (Focus) কোথায় থাকে?
ক) ভূপৃষ্ঠের উপরে
খ) ভূ-অভ্যন্তরে যেখানে কম্পনের উৎপত্তি হয়
গ) ভূপৃষ্ঠে কেন্দ্রের ঠিক উপরের বিন্দুতে
ঘ) বায়ুমণ্ডলে
সঠিক উত্তর: খ) ভূ-অভ্যন্তরে যেখানে কম্পনের উৎপত্তি হয়
ব্যাখ্যা: ভূ-অভ্যন্তরের যে বিন্দুতে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়, তাকে কেন্দ্র বা ফোকাস (Focus/Hypocenter) বলে।
১৬. ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র (Epicenter) কোথায় থাকে?
ক) ভূ-অভ্যন্তরে কেন্দ্রের পাশে
খ) ভূপৃষ্ঠে কেন্দ্রের ঠিক উপরে অবস্থিত বিন্দু
গ) সমুদ্রের নিচে
ঘ) পাহাড়ের চূড়ায়
সঠিক উত্তর: খ) ভূপৃষ্ঠে কেন্দ্রের ঠিক উপরে অবস্থিত বিন্দু
ব্যাখ্যা: ভূ-অভ্যন্তরের কেন্দ্রের ঠিক সোজাসুজি উপরে ভূপৃষ্ঠের বিন্দুটিকে উপকেন্দ্র (Epicenter) বলে। এখানে কম্পনের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়।
১৭. সমুদ্র তলদেশে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির কারণে সৃষ্ট বিশাল সামুদ্রিক ঢেউকে কী বলে?
ক) জলোচ্ছ্বাস
খ) সুনামি
গ) বন্যা
ঘ) টাইফুন
সঠিক উত্তর: খ) সুনামি
ব্যাখ্যা: সুনামি হলো একটি জাপানি শব্দ যার অর্থ ‘বন্দর ঢেউ’। সমুদ্রের তলদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি বা ভূমিধসের কারণে সৃষ্ট দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বিশাল ঢেউ যা উপকূলে এসে মারাত্মক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
১৮. টর্নেডো কী?
ক) একটি সামুদ্রিক ঝড়
খ) একটি দীর্ঘস্থায়ী ঘূর্ণিবায়ু
গ) একটি স্বল্পস্থায়ী, অত্যন্ত শক্তিশালী স্থানীয় ঘূর্ণিবায়ু
ঘ) একটি শীতকালীন ঝড়
সঠিক উত্তর: গ) একটি স্বল্পস্থায়ী, অত্যন্ত শক্তিশালী স্থানীয় ঘূর্ণিবায়ু
ব্যাখ্যা: টর্নেডো হলো একটি অত্যন্ত বিধ্বংসী, স্বল্পস্থায়ী ও সরু এলাকা জুড়ে সৃষ্ট ফানেল আকৃতির ঘূর্ণিবায়ু যা বজ্র মেঘ থেকে ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
১৯. বাংলাদেশে কালবৈশাখী ঝড় সাধারণত কোন সময়ে হয়?
ক) শীতকালে
খ) বর্ষাকালে
গ) শরৎকালে
ঘ) গ্রীষ্মকালের শুরুতে (চৈত্র-বৈশাখ মাসে)
সঠিক উত্তর: ঘ) গ্রীষ্মকালের শুরুতে (চৈত্র-বৈশাখ মাসে)
ব্যাখ্যা: কালবৈশাখী বা Nor’wester হলো গ্রীষ্মকালের শুরুতে বাংলাদেশ ও পূর্ব ভারতে সংঘটিত বজ্র বিদ্যুৎসহ ঝড়বৃষ্টি। এটি সাধারণত চৈত্র-বৈশাখ মাসে বিকালের দিকে দেখা যায়।
২০. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পর্যায় কয়টি?
ক) ২টি
খ) ৩টি
গ) ৪টি
ঘ) ৫টি
সঠিক উত্তর: খ) ৩টি
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রধান পর্যায় তিনটি: (১) দুর্যোগ পূর্ববর্তী প্রস্তুতি (Preparedness), (২) দুর্যোগকালীন সাড়া দান (Response), এবং (৩) দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার (Recovery)।
২১. দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য পূর্ব থেকে গৃহীত ব্যবস্থাকে কী বলে?
ক) পুনরুদ্ধার
খ) সাড়া দান
গ) প্রস্তুতি
ঘ) ত্রাণ বিতরণ
সঠিক উত্তর: গ) প্রস্তুতি
ব্যাখ্যা: দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা বাড়াতে দুর্যোগ সংঘটনের পূর্বে যেসকল পরিকল্পনা ও কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়, তাকে দুর্যোগ পূর্ববর্তী প্রস্তুতি বলে। যেমন – আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, পূর্বাভাস প্রচার, স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।
২২. দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা কোন পর্যায়ের কাজ?
ক) প্রস্তুতি
খ) সাড়া দান
গ) পুনরুদ্ধার
ঘ) পুনর্বাসন
সঠিক উত্তর: খ) সাড়া দান
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ শুরু হওয়ার পর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে জীবন ও সম্পদ রক্ষা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার, প্রাথমিক চিকিৎসা, খাদ্য ও আশ্রয় প্রদান ইত্যাদি জরুরি কার্যক্রম পরিচালনা করা দুর্যোগকালীন সাড়া দান পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।
২৩. দুর্যোগের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে কী বলে?
ক) প্রস্তুতি
খ) সাড়া দান
গ) পুনরুদ্ধার
ঘ) পূর্বাভাস
সঠিক উত্তর: গ) পুনরুদ্ধার
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ, জীবনযাত্রা স্বাভাবিকীকরণ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
২৪. গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর উপায় কোনটি?
ক) জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি
খ) বনভূমি উজাড় করা
গ) নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও বনায়ন
ঘ) শিল্পায়ন বৃদ্ধি
সঠিক উত্তর: গ) নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও বনায়ন
ব্যাখ্যা: জীবাশ্ম জ্বালানির (কয়লা, তেল, গ্যাস) ব্যবহার কমিয়ে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ালে এবং বেশি করে গাছ লাগালে (বনায়ন) বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমবে ও শোষিত হবে।
২৫. ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) গ্যাসের প্রধান উৎস কী?
ক) যানবাহন
খ) কৃষিক্ষেত্র
গ) রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনার
ঘ) ইটভাটা
সঠিক উত্তর: গ) রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনার
ব্যাখ্যা: ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) একটি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস যা প্রধানত রেফ্রিজারেশন, এয়ার কন্ডিশনিং, অ্যারোসল স্প্রে এবং ফোম উৎপাদনে ব্যবহৃত হতো। এটি ওজোন স্তর ক্ষয়ের জন্যও দায়ী।
২৬. মিথেন (CH4) গ্যাসের প্রধান উৎস কী?
ক) শিল্প কারখানা
খ) যানবাহন
গ) কৃষিজমি (ধানক্ষেত), গবাদিপশুর খামার ও আবর্জনা
ঘ) বনভূমি
সঠিক উত্তর: গ) কৃষিজমি (ধানক্ষেত), গবাদিপশুর খামার ও আবর্জনা
ব্যাখ্যা: মিথেন একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনহাউস গ্যাস। এর প্রধান উৎস হলো জলাভূমি, ধানক্ষেত, গবাদিপশুর পরিপাক প্রক্রিয়া, প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন ও বিতরণ এবং আবর্জনা পচন।
২৭. ওজোন স্তর (O3) কোথায় অবস্থিত?
ক) ট্রপোস্ফিয়ারে
খ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
গ) মেসোস্ফিয়ারে
ঘ) থার্মোস্ফিয়ারে
সঠিক উত্তর: খ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
ব্যাখ্যা: ওজোন স্তর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অংশে অবস্থিত, যা সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে জীবজগতকে রক্ষা করে।
২৮. ওজোন স্তর ক্ষয়ের জন্য প্রধানত দায়ী কোন গ্যাস?
ক) কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2)
খ) মিথেন (CH4)
গ) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC)
ঘ) নাইট্রাস অক্সাইড (N2O)
সঠিক উত্তর: গ) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC)
ব্যাখ্যা: সিএফসি গ্যাস স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে পৌঁছে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ভেঙে ক্লোরিন পরমাণু তৈরি করে, যা ওজোন (O3) অণুকে ভেঙে দিয়ে ওজোন স্তর ক্ষয় করে।
২৯. IPCC এর পূর্ণরূপ কী?
ক) International Panel on Climate Change
খ) Intergovernmental Panel on Climate Change
গ) International Program on Climate Change
ঘ) Intergovernmental Program on Climate Control
সঠিক উত্তর: খ) Intergovernmental Panel on Climate Change
ব্যাখ্যা: IPCC হলো Intergovernmental Panel on Climate Change, যা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক তথ্য মূল্যায়ন ও নীতি নির্ধারকদের জানানোর জন্য গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা।
৩০. দুর্যোগের ঝুঁকি = ?
ক) দুর্যোগের সম্ভাবনা + ক্ষয়ক্ষতি
খ) দুর্যোগের সম্ভাবনা × ক্ষয়ক্ষতি
গ) দুর্যোগের সম্ভাবনা / ক্ষয়ক্ষতি
ঘ) ক্ষয়ক্ষতি – দুর্যোগের সম্ভাবনা
সক্তিহক উত্তর: খ) দুর্যোগের সম্ভাবনা × ক্ষয়ক্ষতি
ব্যাখ্যা: কোনো এলাকার দুর্যোগের ঝুঁকি নির্ভর করে সেখানে নির্দিষ্ট দুর্যোগ ঘটার সম্ভাবনা কতটা এবং ঘটলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি (জীবন, সম্পদ, পরিবেশ) হতে পারে, তার উপর। ঝুঁকি = দুর্যোগের সম্ভাবনা × ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
৩১. দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কোনটি প্রয়োজন?
ক) ঝুঁকি সম্পর্কে অজ্ঞতা
খ) অপরিকল্পিত নগরায়ন
গ) পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা
ঘ) বনভূমি ধ্বংস করা
সক্তিহক উত্তর: গ) পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা
ব্যাখ্যা: দুর্যোগের পূর্বাভাস ও কার্যকর সতর্কীকরণ ব্যবস্থা থাকলে মানুষ সময়মতো নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারে, ফলে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো যায়।
৩২. বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশ্য কী?
ক) পর্যটন বৃদ্ধি
খ) দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ ও গবাদিপশুর আশ্রয় প্রদান
গ) শস্য গুদামজাত করা
ঘ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার
সক্তিহক উত্তর: খ) দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ ও গবাদিপশুর আশ্রয় প্রদান
ব্যাখ্যা: উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় মানুষ এবং তাদের গবাদিপশুর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা উঁচু ও মজবুত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।
৩৩. ভূমিধস সাধারণত কোথায় বেশি হয়?
ক) সমতল ভূমিতে
খ) নদী তীরবর্তী অঞ্চলে
গ) উপকূলীয় এলাকায়
ঘ) পাহাড়ি এলাকায়
সক্তিহক উত্তর: ঘ) পাহাড়ি এলাকায়
ব্যাখ্যা: ভূমিধস হলো পাহাড় বা উঁচু স্থানের মাটি, পাথর বা ধ্বংসাবশেষ অভিকর্ষের টানে দ্রুত নিচে নেমে আসা। এটি সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত, ভূমিকম্প বা গাছপালা কাটার কারণে ঘটে থাকে।
৩৪. কোনটি মানবসৃষ্ট দুর্যোগের উদাহরণ?
ক) বন্যা
খ) ঘূর্ণিঝড়
গ) অগ্নিকাণ্ড (অসতর্কতার কারণে)
ঘ) ভূমিকম্প
সক্তিহক উত্তর: গ) অগ্নিকাণ্ড (অসতর্কতার কারণে)
ব্যাখ্যা: যেসব দুর্যোগ মানুষের কর্মকাণ্ড বা ভুলের কারণে ঘটে, সেগুলোকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ বলে। যেমন – অগ্নিকাণ্ড, শিল্প দুর্ঘটনা, যুদ্ধ, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ইত্যাদি। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
৩৫. দুর্যোগ প্রশমন (Mitigation) কী?
ক) দুর্যোগের পর ত্রাণ বিতরণ
খ) দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত ও অকাঠামোগত ব্যবস্থা গ্রহণ
গ) দুর্যোগকালীন উদ্ধার তৎপরতা
ঘ) দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া
সক্তিহক উত্তর: খ) দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত ও অকাঠামোগত ব্যবস্থা গ্রহণ
ব্যাখ্যা: প্রশমন হলো দুর্যোগের সম্ভাব্য কারণ দূর করা বা এর প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতি স্থায়ীভাবে কমিয়ে আনার জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ। যেমন – বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ভূমিকম্প সহনশীল ভবন তৈরি, ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা ইত্যাদি।
৩৬. সামাজিক বনায়নের উদ্দেশ্য কী?
ক) শুধু কাঠ সংগ্রহ
খ) পরিবেশ সংরক্ষণ, স্থানীয় চাহিদা পূরণ ও দারিদ্র্য বিমোচন
গ) শিল্প স্থাপন
ঘ) রাস্তা নির্মাণ
সক্তিহক উত্তর: খ) পরিবেশ সংরক্ষণ, স্থানীয় চাহিদা পূরণ ও দারিদ্র্য বিমোচন
ব্যাখ্যা: সামাজিক বনায়ন হলো স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণে পরিচালিত বনায়ন কার্যক্রম, যার লক্ষ্য পরিবেশের উন্নয়ন, জ্বালানি ও কাঠের চাহিদা পূরণ, খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং অংশগ্রহণকারীদের আয় বৃদ্ধি করা। এটি দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
৩৭. বাংলাদেশে সাইক্লোনের নামকরণ করে কোন সংস্থা?
ক) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর
খ) WMO/ESCAP প্যানেল (আঞ্চলিক কমিটি)
গ) NASA
ঘ) IPCC
সক্তিহক উত্তর: খ) WMO/ESCAP প্যানেল (আঞ্চলিক কমিটি)
ব্যাখ্যা: ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের (বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর) ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) এবং ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (ESCAP) এর সদস্য দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত একটি আঞ্চলিক কমিটি। প্রতিটি সদস্য দেশ পর্যায়ক্রমে নাম প্রস্তাব করে।
৩৮. খরা মোকাবেলায় কোনটি করণীয়?
ক) বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন
খ) গভীর নলকূপের ব্যবহার কমানো
গ) পানি নিবিড় ফসলের চাষ বৃদ্ধি
ঘ) গাছপালা কেটে ফেলা
সক্তিহক উত্তর: ক) বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন
ব্যাখ্যা: খরা প্রবণ এলাকায় বৃষ্টির পানি ধরে রাখা, পুকুর ও খাল খনন করা, ভূগর্ভস্থ পানির পরিকল্পিত ব্যবহার এবং খরা সহনশীল ফসলের চাষ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন খরা মোকাবেলায় সাহায্য করে।
৩৯. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকা কী?
ক) শুধু ত্রাণ গ্রহণ করা
খ) পূর্বাভাস দেওয়া
গ) উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও সচেতনতা সৃষ্টিতে সহায়তা করা
ঘ) আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা
সক্তিহক উত্তর: গ) উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও সচেতনতা সৃষ্টিতে সহায়তা করা
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রতিটি পর্যায়ে, বিশেষ করে দুর্যোগকালীন সাড়া দান ও পরবর্তী পুনরুদ্ধারের সময় স্বেচ্ছাসেবকগণ উদ্ধার কাজে, ত্রাণ বিতরণে, প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানে এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪০. “মঙ্গা” কী?
ক) এক প্রকার ঘূর্ণিঝড়
খ) এক প্রকার বন্যা
গ) উত্তরবঙ্গে ফসলহানির কারণে সৃষ্ট সাময়িক খাদ্য সংকট বা আকালের স্থানীয় নাম
ঘ) এক প্রকার ভূমিকম্প
সক্তিহক উত্তর: গ) উত্তরবঙ্গে ফসলহানির কারণে সৃষ্ট সাময়িক খাদ্য সংকট বা আকালের স্থানীয় নাম
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় প্রতি বছর আশ্বিন-কার্তিক মাসে আমন ধান কাটার আগে কৃষিশ্রমিকদের হাতে কাজ না থাকায় এবং অনেক সময় বন্যার কারণে ফসলহানি হওয়ায় যে সাময়িক খাদ্য অভাব বা প্রায়-দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দেয়, তাকে স্থানীয়ভাবে ‘মঙ্গা’ বলা হয়।