অষ্টম শ্রেনী হিন্দুধর্ম শিক্ষা
চতুর্থ অধ্যায়: নিত্যকর্ম ও যোগাসন
১. ধর্ম-কর্মের মূল আধার কী?
ক) মন
খ) জ্ঞান
গ) শরীর
ঘ) ভক্তি
সঠিক উত্তর: গ) শরীর
ব্যাখ্যা: শরীরই হচ্ছে ধর্ম-কর্মের মূল আধার-‘শরীরম্ আদ্যং খলু ধর্মসাধনম্’।
২. নিত্যকর্ম অনুশীলন করলে কোনটি লাভ হয়?
ক) শুধু জাগতিক মঙ্গল
খ) শুধু পারমার্থিক মঙ্গল
গ) জাগতিক ও পারমার্থিক মঙ্গল
ঘ) কোনো মঙ্গল লাভ হয় না
সঠিক উত্তর: গ) জাগতিক ও পারমার্থিক মঙ্গল
ব্যাখ্যা: নিত্যকর্ম অনুশীলন করলে যোগ, তপ, সাধনা, কাজ-কর্ম, উপভোগ, আনন্দ, স্ফূর্তি সবকিছুই ভালো লাগে এবং জাগতিক ও পারমার্থিক মঙ্গল লাভ হয়।
৩. ভোরে ঘুম ভাঙতেই ব্রাহ্মমুহূর্তে কী করা উচিত?
ক) ব্যায়াম করা
খ) চা পান করা
গ) শুভ সংকল্প করে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে ঈশ্বরকে ডাকা
ঘ) খবরের কাগজ পড়া
সঠিক উত্তর: গ) শুভ সংকল্প করে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে ঈশ্বরকে ডাকা
ব্যাখ্যা: ভোরে ঘুম ভাঙতেই ব্রাহ্মমুহূর্তে শুভ সংকল্প করে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে শ্রদ্ধা-ভক্তি সহকারে ঈশ্বরকে ডাকলে আলস্য দূর হয় এবং সমস্ত দিন সুন্দরভাবে কেটে যায়।
৪. প্রতিদিন গুরুজনকে নমস্কার করলে কী হয়?
ক) তাঁদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করার সাহস হয় না
খ) তাঁরা অর্থ সাহায্য করেন
গ) সমাজে প্রতিপত্তি বাড়ে
ঘ) শরীর সুস্থ থাকে
সঠিক উত্তর: ক) তাঁদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করার সাহস হয় না
ব্যাখ্যা: প্রতিদিন গুরুজনকে নমস্কার করলে তাঁদের প্রতি কখনো খারাপ ব্যবহার, অসম্মান বা অমর্যাদা করার সাহস হয় না।
৫. নমস্কার কিসের প্রতীক?
ক) অহংকার
খ) শক্তি
গ) বিনম্রতা
ঘ) জ্ঞান
সঠিক উত্তর: গ) বিনম্রতা
ব্যাখ্যা: নমস্কার বিনম্রতার প্রতীক।
৬. নিয়মিত যোগাসন করলে শরীর কেমন হয়?
ক) দুর্বল ও নিস্তেজ
খ) হৃষ্টপুষ্ট, বলবান ও শক্তিশালী
গ) অলস ও কর্মবিমুখ
ঘ) চঞ্চল ও অস্থির
সঠিক উত্তর: খ) হৃষ্টপুষ্ট, বলবান ও শক্তিশালী
ব্যাখ্যা: সুতরাং নিয়মিত যোগাসন করলে শরীর হৃষ্টপুষ্ট, বলবান, শক্তিশালী, ওজস্বী ও তেজস্বী হয় এবং সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে করা যায়।
৭. প্রতিদিন পূজার্চনা ও উপাসনাদি দ্বারা কী হয়?
ক) জাগতিক সম্পদ বৃদ্ধি পায়
খ) আধ্যাত্মিক চেতনা জাগ্রত হয়
গ) সামাজিক মর্যাদা বাড়ে
ঘ) শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়
সঠিক উত্তর: খ) আধ্যাত্মিক চেতনা জাগ্রত হয়
ব্যাখ্যা: প্রতিদিন পূজার্চনা ও উপাসনাদি দ্বারা ভগবানের নাম উচ্চারণ এবং তাঁর উদ্দেশে প্রার্থনা জানানোর ফলে আধ্যাত্মিক চেতনা জাগ্রত হয়।
৮. গোমুখাসনে আসন অভ্যাসকারীর পায়ের অবস্থান কিসের মতো হয়?
ক) পদ্মফুলের মতো
খ) গরুর মুখের মতো
গ) ময়ূরের মতো
ঘ) সাপের মতো
সঠিক উত্তর: খ) গরুর মুখের মতো
ব্যাখ্যা: এই আসনে অবস্থানকালে আসন অভ্যাসকারীর পায়ের অবস্থান গরুর মুখের মতো হয়। তাই এ আসনের নাম গোমুখাসন।
৯. গোমুখাসনে ডান হাঁটু যখন বাঁ হাঁটুর ওপর থাকবে তখন কোন হাত ওপরে উঠবে?
ক) বাঁ হাত
খ) ডান হাত
গ) উভয় হাত
ঘ) কোনো হাতই নয়
সঠিক উত্তর: খ) ডান হাত
ব্যাখ্যা: মনে রাখতে হবে, ডান হাঁটু যখন বাঁ হাঁটুর ওপর থাকবে তখন ডান হাত ওপরে উঠবে।
১০. গোমুখাসন নিয়মিত অনুশীলন করলে কোনটি হয় না?
ক) পায়ের পেশি নমনীয় হয়
খ) হাঁটুর বাত নিরাময় হয়
গ) হজমশক্তি হ্রাস পায়
ঘ) মনের অস্থিরতা দূর হয়
সঠিক উত্তর: গ) হজমশক্তি হ্রাস পায়
ব্যাখ্যা: গোমুখাসন নিয়মিত অনুশীলন করলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়, হ্রাস পায় না।
১১. ‘ভুজঙ্গ’ শব্দের অর্থ কী?
ক) বাঘ
খ) সিংহ
গ) সাপ
ঘ) পাখি
সঠিক উত্তর: গ) সাপ
ব্যাখ্যা: ‘ভুজঙ্গ’ শব্দের অর্থ সাপ।
১২. ভুজঙ্গাসনকে আর কী নামে ডাকা হয়?
ক) মকরাসন
খ) শলভাসন
গ) সর্পাসন
ঘ) ধনুরাসন
সঠিক উত্তর: গ) সর্পাসন
ব্যাখ্যা: এই আসন অভ্যাসকারীকে ফণাতোলা ভুজঙ্গ বা সাপের মতো দেখায়। তাই এ আসনের নাম ভুজঙ্গাসন। একে সর্পাসনও বলা হয়।
১৩. ভুজঙ্গাসন অনুশীলনকালে শরীরের কোন অংশ ভূমি-সংলগ্ন রেখে ওপরের অংশ তুলতে হয়?
ক) মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত
খ) পা থেকে নাভি পর্যন্ত
গ) শুধু বুক
ঘ) শুধু কোমর
সঠিক উত্তর: খ) পা থেকে নাভি পর্যন্ত
ব্যাখ্যা: সঙ্গে-সঙ্গে পা থেকে নাভি পর্যন্ত শরীরের নিচের অংশ ভূমি-সংলগ্ন রেখে দেহের ওপরের অংশ হাতের ওপর বেশি জোর না দিয়ে শুধু বুক ও কোমরের ওপর জোর দিয়ে ওপরে তুলতে হবে।
১৪. ভুজঙ্গাসন নিয়মিত অনুশীলন করলে কোনটি হয়?
ক) মেরুদণ্ড শক্ত হয়
খ) পিঠের ও কোমরের পেশি দুর্বল হয়
গ) হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস সবল হয়
ঘ) দেহের লাবণ্য হ্রাস পায়
সঠিক উত্তর: গ) হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস সবল হয়
ব্যাখ্যা: ভুজঙ্গাসন নিয়মিত অনুশীলন করলে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস সবল হয়।
১৫. কোন আসনটি কোলকুঁজোদের জন্য বিশেষ উপকারী?
ক) গোমুখাসন
খ) বজ্রাসন
গ) ভুজঙ্গাসন
ঘ) শবাসন
সঠিক উত্তর: গ) ভুজঙ্গাসন
ব্যাখ্যা: যারা কোলকুঁজো তাদের বিশেষ উপকার হয় ভুজঙ্গাসন অনুশীলনে।
১৬. কোন আসনটি খাওয়ার পরে করা একমাত্র আসন?
ক) গোমুখাসন
খ) ভুজঙ্গাসন
গ) বজ্রাসন
ঘ) পদ্মাসন
সঠিক উত্তর: গ) বজ্রাসন
ব্যাখ্যা: এটি (বজ্রাসন) খাওয়ার পরে করা একমাত্র আসন।
১৭. বজ্রাসন অভ্যাসে দেহের নিম্নভাগের স্নায়ু ও পেশি কেমন হয়?
ক) শিথিল ও দুর্বল
খ) বজ্রের মতো কঠিন, মজবুত ও দৃঢ়
গ) সংকুচিত ও অকার্যকর
ঘ) অতিরিক্ত নমনীয়
সঠিক উত্তর: খ) বজ্রের মতো কঠিন, মজবুত ও দৃঢ়
ব্যাখ্যা: যোগশাস্ত্রমতে আসনটি অভ্যাসে দেহের নিম্নভাগের স্নায়ু ও পেশি বজ্রের মতো কঠিন, মজবুত ও দৃঢ় হয়।
১৮. বজ্রাসনে দুই পায়ের বুড়ো আঙুল কীভাবে থাকবে?
ক) আলাদা থাকবে
খ) পরস্পরের সঙ্গে লেগে থাকবে
গ) একটি আরেকটির ওপরে থাকবে
ঘ) মাটির সাথে স্পর্শ করবে না
সঠিক উত্তর: খ) পরস্পরের সঙ্গে লেগে থাকবে
ব্যাখ্যা: এ অবস্থায় দু-পায়ের বুড়ো আঙুল পরস্পরের সঙ্গে লেগে থাকবে এবং কোমর, গ্রিবা ও মাথা সোজা থাকবে।
১৯. বজ্রাসন নিয়মিত অনুশীলন করলে কোনটি দূর হয়?
ক) হজমশক্তি
খ) অক্ষুধা ও অনিদ্রা
গ) মনের স্থিরতা
ঘ) স্বাস্থ্য ও লাবণ্য
সঠিক উত্তর: খ) অক্ষুধা ও অনিদ্রা
ব্যাখ্যা: বজ্রাসন নিয়মিত অনুশীলন করলে অক্ষুধা ও অনিদ্রা দূর হয়।
২০. বজ্রাসনে বসে চুল আঁচড়ালে কী উপকার হয়?
ক) চুল ঘন হয়
খ) চুল কালো হয়
গ) সহজে চুল পাকে না বা পড়ে না
ঘ) চুল লম্বা হয়
সঠিক উত্তর: গ) সহজে চুল পাকে না বা পড়ে না
ব্যাখ্যা: বজ্রাসনে বসে চুল আঁচড়ালে সহজে চুল পাকে না বা পড়ে না।
২১. নিত্যকর্ম কাদের করা উচিত?
ক) শুধু বয়স্কদের
খ) শুধু শিশুদের
গ) শুধু পুরুষদের
ঘ) সকলেরই
সঠিক উত্তর: ঘ) সকলেরই
ব্যাখ্যা: তাই সকলেরই নিত্যকর্মগুলো নিয়মিত করা উচিত।
২২. গোমুখাসনে পায়ের গোড়ালি কোথায় স্পর্শ করাতে হয়?
ক) অপর পায়ের হাঁটুর সাথে
খ) নিতম্বের সাথে
গ) মেরুদণ্ডের সাথে
ঘ) মেঝের সাথে
সঠিক উত্তর: খ) নিতম্বের সাথে
ব্যাখ্যা: ডান পায়ের গোড়ালি বাঁ নিতম্ব স্পর্শ করাতে হবে এবং বাঁ পায়ের গোড়ালি ডান নিতম্বের পাশে স্পর্শ করাতে হবে।
২৩. ভুজঙ্গাসনে হাতের তালু কোথায় রাখতে হয়?
ক) মাথার নিচে
খ) কোমরের দু’পাশে
গ) পাঁজরের কাছে দু’পাশে মাটিতে
ঘ) হাঁটুর ওপরে
সঠিক উত্তর: গ) পাঁজরের কাছে দু’পাশে মাটিতে
ব্যাখ্যা: দুহাত কনুইয়ের কাছ থেকে ভেঙে দু-হাতের তালু উপুড় করে পাঁজরের কাছে দু-পাশে মাটিতে রাখতে হবে।
২৪. পরিপূর্ণ আহারের পর বজ্রাসন কতক্ষণ অভ্যাস করলে খাদ্যবস্তু সহজে হজম হয়?
ক) ১ থেকে ২ মিনিট
খ) ৫ থেকে ১৫ মিনিট
গ) ৩০ মিনিট
ঘ) ১ ঘণ্টা
সঠিক উত্তর: খ) ৫ থেকে ১৫ মিনিট
ব্যাখ্যা: পরিপূর্ণ আহারের পর এ আসনটি ৫ থেকে ১৫ মিনিট অভ্যাস করলে খাদ্যবস্তু সহজে হজম হয় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
২৫. কোন আসন অনুশীলনে কাঁধের সন্ধিস্থলের ব্যথা দূর হয়?
ক) বজ্রাসন
খ) ভুজঙ্গাসন
গ) গোমুখাসন
ঘ) শবাসন
সঠিক উত্তর: গ) গোমুখাসন
ব্যাখ্যা: গোমুখাসন নিয়মিত অনুশীলন করলে কাঁধের সন্ধিস্থলের ব্যথা দূর হয়।
২৬. কোন আসন মেরুদণ্ড নমনীয় করে এবং বাঁকা মেরুদণ্ড সোজা করে?
ক) গোমুখাসন ও ভুজঙ্গাসন উভয়ই
খ) শুধু গোমুখাসন
গ) শুধু ভুজঙ্গাসন
ঘ) বজ্রাসন
সঠিক উত্তর: ক) গোমুখাসন ও ভুজঙ্গাসন উভয়ই
ব্যাখ্যা: গোমুখাসন মেরুদণ্ড নমনীয় করে, বাঁকা মেরুদণ্ড সোজা করে। ভুজঙ্গাসনও মেরুদণ্ড নমনীয় করে এবং বাঁকা মেরুদণ্ড সোজা ও সরল করে।
২৭. “সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়” – এই প্রবাদটি কিসের গুরুত্ব বোঝায়?
ক) বিশ্রামের
খ) সময়মতো কাজ করার
গ) বেশি কাজ করার
ঘ) দ্রুত কাজ করার
সঠিক উত্তর: খ) সময়মতো কাজ করার
ব্যাখ্যা: কথায় বলে- ‘সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়’। অর্থাৎ সময়মতো কোনো কাজ না করলে, অসময়ে সেই কাজ করতে গেলে অনেক ঝামেলা হয়। এটি নিত্যকর্মের প্রসঙ্গে আলোচিত হয়েছে।
২৮. গোমুখাসন অনুশীলনের সময় শ্বাস-প্রশ্বাস কেমন থাকবে?
ক) দ্রুত থাকবে
খ) বন্ধ থাকবে
গ) স্বাভাবিক থাকবে
ঘ) গভীরভাবে নিতে হবে
সঠিক উত্তর: গ) স্বাভাবিক থাকবে
ব্যাখ্যা: শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এভাবে ৩০ সেকেন্ড থাকতে হবে (গোমুখাসনে)।
২৯. ভুজঙ্গাসন করার পর কোন আসনে বিশ্রাম নিতে বলা হয়েছে?
ক) পদ্মাসন
খ) মকরাসন
গ) শবাসন
ঘ) বজ্রাসন
সঠিক উত্তর: গ) শবাসন
ব্যাখ্যা: এরপর আস্তে-আস্তে পেট, বুক, ঘাড় ও চিবুক নামিয়ে ভূমিসংলগ্ন করতে হবে এবং ৩০ সেকেন্ড চিৎ হয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে।
৩০. কোন আসনটি মনের অস্থিরতা ও চঞ্চলতা দূর করে মনকে শান্ত রাখে?
ক) শুধু ভুজঙ্গাসন
খ) শুধু বজ্রাসন
গ) গোমুখাসন ও বজ্রাসন উভয়ই
ঘ) শুধু গোমুখাসন
সঠিক উত্তর: গ) গোমুখাসন ও বজ্রাসন উভয়ই
ব্যাখ্যা: গোমুখাসন মনের অস্থিরতা ও চঞ্চলতা দূর হয়, মন শান্ত থাকে। বজ্রাসন মনের চঞ্চলতা দূর হয়।