SSC ভূগোল ও পরিবেশ
ত্রয়োদশ অধ্যায়: বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড ও পরিবেশের ভারসাম্য
১. উন্নয়ন বলতে সাধারণত কী বোঝায়?
(ক) শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
(খ) কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক ও কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন
(গ) প্রাকৃতিক পরিবেশের সংরক্ষণ
(ঘ) জনসংখ্যা বৃদ্ধি
সঠিক উত্তর: (খ) কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক ও কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন
ব্যাখ্যা: উন্নয়ন বলতে সাধারণত কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক ও কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনকে বোঝায়, যা জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করে।
২. বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে উন্নয়নের প্রধান লক্ষ্য কী?
(ক) শুধুমাত্র শিল্পায়ন
(খ) জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন
(গ) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা
(ঘ) বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি
সঠিক উত্তর: (খ) জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়নের প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য) পূরণ করা এবং তাদের সার্বিক জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
৩. উন্নয়নের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক কীরূপ?
(ক) উন্নয়ন সর্বদা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর
(খ) উন্নয়নের সাথে পরিবেশের কোনো সম্পর্ক নেই
(গ) উন্নয়ন ও পরিবেশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও নির্ভরশীল
(ঘ) পরিবেশ উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়
সঠিক উত্তর: (গ) উন্নয়ন ও পরিবেশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও নির্ভরশীল
ব্যাখ্যা: উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে এবং পরিবেশের ভারসাম্য উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। তাই উন্নয়ন ও পরিবেশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও নির্ভরশীল।
৪. অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে পরিবেশের কোন ক্ষতিটি হয়?
(ক) জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি পায়
(খ) বায়ু ও পানি দূষণ হ্রাস পায়
(গ) বনভূমি উজাড় হয় এবং ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি পায়
(ঘ) প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হয়
সঠিক উত্তর: (গ) বনভূমি উজাড় হয় এবং ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি পায়
ব্যাখ্যা: অপরিকল্পিতভাবে শিল্পায়ন, নগরায়ণ, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে বনভূমি উজাড় হয়, কৃষিজমি হ্রাস পায়, ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি পায় এবং সার্বিকভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
৫. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কোনটি অপরিহার্য?
(ক) দ্রুত শিল্পায়ন
(খ) প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার
(গ) পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন
(ঘ) জনসংখ্যা বৃদ্ধি
সঠিক উত্তর: (গ) পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন
ব্যাখ্যা: পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা অপরিহার্য। এর জন্য পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নীতি গ্রহণ করতে হবে।
৬. ‘টেকসই উন্নয়ন’ (Sustainable Development) বলতে কী বোঝায়?
(ক) শুধুমাত্র দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন
(খ) বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানো এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতাকে অক্ষুণ্ণ রাখা
(গ) পরিবেশকে উপেক্ষা করে উন্নয়ন
(ঘ) শুধুমাত্র উন্নত দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য ধারণা
সঠিক উত্তর: (খ) বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানো এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতাকে অক্ষুণ্ণ রাখা
ব্যাখ্যা: টেকসই উন্নয়ন হলো এমন একটি উন্নয়ন প্রক্রিয়া যা বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা পূরণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিজস্ব চাহিদা পূরণের সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত না করে।
৭. বাংলাদেশে কৃষি উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ কোনটি?
(ক) কৃষিজমি হ্রাস করা
(খ) উচ্চ ফলনশীল বীজ, সার ও সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ
(গ) সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ
(ঘ) কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা
সঠিক উত্তর: (খ) উচ্চ ফলনশীল বীজ, সার ও সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার উচ্চ ফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং আধুনিক সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিয়েছে।
৮. কৃষিক্ষেত্রে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব কী?
(ক) মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়
(খ) পানি দূষণ হ্রাস পায়
(গ) মাটি ও পানি দূষিত হয় এবং জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়
(ঘ) ফসলের উৎপাদন খরচ কমে
সঠিক উত্তর: (গ) মাটি ও পানি দূষিত হয় এবং জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়
ব্যাখ্যা: কৃষিক্ষেত্রে অপরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটি ও পানি দূষিত হয়, উপকারী পোকামাকড় ও জলজ প্রাণী মারা যায় এবং সার্বিকভাবে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে।
৯. শিল্পায়নের ফলে পরিবেশের উপর কোন ধরনের প্রভাব পড়ে?
(ক) বায়ু ও পানি দূষণ বৃদ্ধি পায়
(খ) বনভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়
(গ) ভূমিক্ষয় হ্রাস পায়
(ঘ) প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ হয়
স ट्रिक উত্তর: (ক) বায়ু ও পানি দূষণ বৃদ্ধি পায়
ব্যাখ্যা: শিল্পকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া, রাসায়নিক বর্জ্য ইত্যাদি বায়ু ও পানিকে মারাত্মকভাবে দূষিত করে, যা পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
১০. শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?
(ক) শিল্প কারখানা বন্ধ করে দেওয়া
(খ) বর্জ্য শোধনাগার (ETP) স্থাপন ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার
(গ) দূষণকারী শিল্পকে উৎসাহিত করা
(ঘ) পরিবেশ আইন উপেক্ষা করা
সঠিক উত্তর: (খ) বর্জ্য শোধনাগার (ETP) স্থাপন ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার
ব্যাখ্যা: শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিটি শিল্প কারখানায় বর্জ্য শোধনাগার (ETP) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা, পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার এবং কঠোরভাবে পরিবেশ আইন মেনে চলা প্রয়োজন।
১১. বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নির্মিত বৃহৎ অবকাঠামো কোনটি?
(ক) গ্রামীণ সড়ক
(খ) বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল
(গ) উপজেলা পর্যায়ের রাস্তা
(ঘ) নৌপথ খনন
সঠিক উত্তর: (খ) বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল
ব্যাখ্যা: বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল ইত্যাদি বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নির্মিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ অবকাঠামো।
১২. নির্মাণ কাজের জন্য পাহাড় কাটার ফলে কী ধরনের পরিবেশগত সমস্যা হয়?
(ক) ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়
(খ) ভূমিধস ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়
(গ) পানির অভাব দূর হয়
(ঘ) বায়ু দূষণ কমে
সঠিক উত্তর: (খ) ভূমিধস ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়
ব্যাখ্যা: রাস্তাঘাট বা স্থাপনা নির্মাণের জন্য নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে ভূমিক্ষয়, ভূমিধস, ঝর্ণা শুকিয়ে যাওয়া এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হওয়াসহ মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটে।
১৩. নগরায়ণের ফলে কোন ধরনের পরিবেশগত চাপ সৃষ্টি হয়?
(ক) কৃষিজমি বৃদ্ধি
(খ) বায়ু ও পানি দূষণ, বর্জ্য সমস্যা, যানজট
(গ) জনসংখ্যার ঘনত্ব হ্রাস
(ঘ) সবুজায়ন বৃদ্ধি
সঠিক উত্তর: (খ) বায়ু ও পানি দূষণ, বর্জ্য সমস্যা, যানজট
ব্যাখ্যা: দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে শহরে জনসংখ্যার চাপ বাড়ে, যার ফলে বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, কঠিন বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা, যানজট, জলাবদ্ধতা এবং সবুজ এলাকার পরিমাণ হ্রাস পাওয়াসহ নানা পরিবেশগত সমস্যা দেখা দেয়।
১৪. পরিবেশ সংরক্ষণে সামাজিক বনায়নের গুরুত্ব কী?
(ক) শুধুমাত্র কাঠের চাহিদা মেটানো
(খ) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও স্থানীয় জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন
(গ) শিল্প দূষণ বৃদ্ধি করা
(ঘ) কৃষিজমি হ্রাস করা
সঠিক উত্তর: (খ) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও স্থানীয় জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন
ব্যাখ্যা: সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির মাধ্যমে পতিত জমি ও রাস্তার ধারে গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা এবং স্থানীয় দরিদ্র জনগণের কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।
১৫. ‘পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা’ (EIA) কেন করা হয়?
(ক) প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করার জন্য
(খ) কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্য পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন ও প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য
(গ) প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি করার জন্য
(ঘ) শুধুমাত্র বিদেশি প্রকল্পের জন্য
সঠিক উত্তর: (খ) কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্য পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন ও প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য
ব্যাখ্যা: যেকোনো বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করার পূর্বে ‘পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা’ (Environmental Impact Assessment – EIA) করার উদ্দেশ্য হলো প্রকল্পের ফলে পরিবেশের উপর কী ধরনের ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে তা মূল্যায়ন করা এবং ক্ষতিকর প্রভাবগুলো প্রশমিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৬. জলাভূমি ভরাটের ফলে কী ধরনের ক্ষতি হয়?
(ক) শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
(খ) মাছের উৎপাদন বাড়ে
(গ) জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয় ও পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়
(ঘ) কৃষিজমির পরিমাণ বাড়ে
সঠিক উত্তর: (গ) জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয় ও পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়
ব্যাখ্যা: জলাভূমি (যেমন: খাল, বিল, পুকুর, নিম্নভূমি) ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের ফলে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয় এবং সার্বিকভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
১৭. শব্দ দূষণের প্রধান উৎস কী?
(ক) কলকারখানার যন্ত্রপাতি, যানবাহনের হর্ন, নির্মাণ কাজের শব্দ
(খ) পাখির ডাক
(গ) নদীর স্রোতের শব্দ
(ঘ) বৃষ্টিপাতের শব্দ
সঠিক উত্তর: (ক) কলকারখানার যন্ত্রপাতি, যানবাহনের হর্ন, নির্মাণ কাজের শব্দ
ব্যাখ্যা: যানবাহনের উচ্চমাত্রার হর্ন, কলকারখানার মেশিনের শব্দ, নির্মাণ কাজের শব্দ, মাইকের আওয়াজ ইত্যাদি শব্দ দূষণের প্রধান উৎস।
১৮. গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রধানত দায়ী গ্যাস কোনটি?
(ক) অক্সিজেন
(খ) নাইট্রোজেন
(গ) কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, সিএফসি
(ঘ) হাইড্রোজেন
সঠিক উত্তর: (গ) কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, সিএফসি
ব্যাখ্যা: বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (সিএফসি) ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া নামে পরিচিত।
১৯. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে কোন দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে?
(ক) ভূমিকম্প
(খ) বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি
(গ) আগ্নেয়গিরি
(ঘ) তুষারপাত
সঠিক উত্তর: (খ) বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি
ব্যাখ্যা: বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে ঘনঘন বন্যা, তীব্র ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি, খরা ইত্যাদি দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
২০. বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী?
(ক) শুধুমাত্র কাঠের জোগান নিশ্চিত করা
(খ) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, কার্বন শোষণ ও মাটির ক্ষয়রোধ
(গ) কৃষিজমি সম্প্রসারণ করা
(ঘ) শিল্প কারখানা স্থাপন করা
সঠিক উত্তর: (খ) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, কার্বন শোষণ ও মাটির ক্ষয়রোধ
ব্যাখ্যা: বনভূমি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল, কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, মাটির ক্ষয়রোধ করে এবং পানির চক্র বজায় রাখে।
২১. পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রধান সমস্যা কী?
(ক) এগুলো সহজে পচে যায়
(খ) এগুলো পরিবেশবান্ধব
(গ) এগুলো সহজে পচে না এবং মাটি ও পানি দূষণ ঘটায়, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল করে
(ঘ) এগুলো জৈব সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়
সঠিক উত্তর: (গ) এগুলো সহজে পচে না এবং মাটি ও পানি দূষণ ঘটায়, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল করে
ব্যাখ্যা: পলিথিন ও প্লাস্টিক অপচনশীল বর্জ্য। এগুলো মাটি ও পানিতে মিশে মারাত্মক দূষণ ঘটায়, জলজ প্রাণীর ক্ষতি করে এবং শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
২২. নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন কেন?
(ক) এটি অধিক ব্যয়বহুল
(খ) এটি পরিবেশ দূষণ করে
(গ) এটি জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমায় ও পরিবেশ দূষণ হ্রাস করে
(ঘ) এটি সীমিত পরিমাণে পাওয়া যায়
সঠিক উত্তর: (গ) এটি জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমায় ও পরিবেশ দূষণ হ্রাস করে
ব্যাখ্যা: নবায়নযোগ্য জ্বালানি (যেমন: সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ) পরিবেশবান্ধব এবং এর ব্যবহারে জীবাশ্ম জ্বালানির (কয়লা, তেল, গ্যাস) উপর নির্ভরশীলতা কমে, যা পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস করে।
২৩. পরিবেশ সুরক্ষায় গণসচেতনতার ভূমিকা কী?
(ক) পরিবেশ দূষণ বৃদ্ধি করা
(খ) পরিবেশ আইন অমান্য করতে উৎসাহিত করা
(গ) জনগণকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন ও দায়িত্বশীল করে তোলা
(ঘ) প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় বাড়ানো
সঠিক উত্তর: (গ) জনগণকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন ও দায়িত্বশীল করে তোলা
ব্যাখ্যা: পরিবেশ সুরক্ষা ও সংরক্ষণে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। গণসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণকে পরিবেশের গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করা এবং তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে উৎসাহিত করা যায়।
২৪. ইটভাটায় পরিবেশ দূষণকারী প্রধান উপাদান কোনটি?
(ক) পানি
(খ) মাটি
(গ) কয়লা পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া ও কার্বন কণা
(ঘ) শব্দ
সঠিক উত্তর: (গ) কয়লা পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া ও কার্বন কণা
ব্যাখ্যা: অধিকাংশ ইটভাটায় নিম্নমানের কয়লা ও কাঠ পোড়ানোর ফলে প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড ও ভাসমান সূক্ষ্ম কণা নির্গত হয়, যা বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ।
২৫. দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ?
(ক) শুধুমাত্র ত্রাণ বিতরণ
(খ) দুর্যোগ পরবর্তী পুনর্বাসন
(গ) দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি, সচেতনতা বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন
(ঘ) দুর্যোগ উপেক্ষা করা
সঠিক উত্তর: (গ) দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি, সচেতনতা বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন
ব্যাখ্যা: দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হলে দুর্যোগ পূর্ববর্তী প্রস্তুতি (যেমন: আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, পূর্বাভাস ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ), জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২৬. জীববৈচিত্র্য হ্রাসের প্রধান কারণ কী?
(ক) বনায়ন কর্মসূচি
(খ) আবাসস্থল ধ্বংস, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও অতি আহরণ
(গ) অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা
(ঘ) পরিবেশ আইন বাস্তবায়ন
স ट्रिक উত্তর: (খ) আবাসস্থল ধ্বংস, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও অতি আহরণ
ব্যাখ্যা: বনভূমি ও জলাভূমি ধ্বংস, পরিবেশ দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, অবৈধ বন্যপ্রাণী শিকার এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অতি আহরণ জীববৈচিত্র্য হ্রাসের প্রধান কারণ।
২৭. ‘পরিবেশ অধিদপ্তর’ কোন মন্ত্রণালয়ের অধীন?
(ক) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
(খ) কৃষি মন্ত্রণালয়
(গ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
(ঘ) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
সঠিক উত্তর: (গ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
ব্যাখ্যা: পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা, যা দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
২৮. সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য কী?
(ক) শুধুমাত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ
(খ) পানির সকল উৎসের সুষম ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা
(গ) সেচ কাজে পানির ব্যবহার বন্ধ করা
(ঘ) নদীতে বাঁধ নির্মাণ বৃদ্ধি করা
সঠিক উত্তর: (খ) পানির সকল উৎসের সুষম ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা
ব্যাখ্যা: সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য হলো পানির বিভিন্ন উৎস (নদী, খাল, ভূগর্ভস্থ পানি ইত্যাদি) এবং বিভিন্ন ব্যবহার (যেমন: কৃষি, শিল্প, গার্হস্থ্য, পরিবেশ) এর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে পানির সুষম, সাশ্রয়ী ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা।
২৯. পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা কোনটি?
(ক) ব্যক্তিগত গাড়ির অধিক ব্যবহার
(খ) জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যান
(গ) সাইকেল, গণপরিবহন (যেমন: বাস, ট্রেন, মেট্রোরেল), বিদ্যুৎচালিত যান
(ঘ) অধিক রাস্তাঘাট নির্মাণ
সঠিক উত্তর: (গ) সাইকেল, গণপরিবহন (যেমন: বাস, ট্রেন, মেট্রোরেল), বিদ্যুৎচালিত যান
ব্যাখ্যা: সাইকেল চালানো, হাঁটা এবং গণপরিবহন (যেমন: বাস, ট্রেন, মেট্রোরেল) ও বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের ব্যবহার পরিবেশবান্ধব, কারণ এগুলো বায়ু দূষণ ও যানজট কমাতে সাহায্য করে।
৩০. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ‘3R’ নীতি কী?
(ক) Read, Write, Remember (পড়া, লেখা, মনে রাখা)
(খ) Reduce, Reuse, Recycle (কমানো, পুনঃব্যবহার, পুনর্প্রক্রিয়াজাতকরণ)
(গ) Road, Rail, River (সড়ক, রেল, নদী)
(ঘ) Rain, Reservoir, Recharge (বৃষ্টি, জলাধার, পুনঃপূরণ)
সঠিক উত্তর: (খ) Reduce, Reuse, Recycle (কমানো, পুনঃব্যবহার, পুনর্প্রক্রিয়াজাতকরণ)
ব্যাখ্যা: বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ‘3R’ নীতি হলো Reduce (বর্জ্যের পরিমাণ কমানো), Reuse (পুনরায় ব্যবহার করা) এবং Recycle (পুনর্প্রক্রিয়াজাত করে নতুন পণ্য তৈরি করা), যা বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস এবং পরিবেশ সুরক্ষায় সহায়ক।