SSC অর্থনীতি | | নবম অধ্যায়: বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রসঙ্গ MCQ

Table of Contents

SSC অর্থনীতি

নবম অধ্যায়: বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রসঙ্গ


১. কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য জনসংখ্যাকে কখন সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়

ক) যখন জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
খ) যখন জনসংখ্যাকে শিক্ষিত, দক্ষ ও কর্মক্ষম করে তোলা যায়।
গ) যখন জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি থাকে।
ঘ) যখন অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে।

সঠিক উত্তর: খ) যখন জনসংখ্যাকে শিক্ষিত, দক্ষ ও কর্মক্ষম করে তোলা যায়।

ব্যাখ্যা: জনসংখ্যা কোনো দেশের জন্য বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হতে পারে যদি সেই জনসংখ্যাকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করা যায়।

২. “খাদ্য নিরাপত্তা” বলতে কী বোঝায়?

ক) শুধুমাত্র পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন।
খ) সকল নাগরিকের জন্য সব সময় পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা।
গ) শুধুমাত্র খাদ্য আমদানি করা।
ঘ) খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন।

সঠিক উত্তর: খ) সকল নাগরিকের জন্য সব সময় পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা।

ব্যাখ্যা: খাদ্য নিরাপত্তা বলতে বোঝায় দেশের সকল মানুষের জন্য সব সময় কর্মক্ষম ও সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির ক্ষমতা বা সুযোগ নিশ্চিত করা।

৩. বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান চ্যালেঞ্জ কোনটি?

ক) খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি
খ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন
গ) খাদ্যের অসম বণ্টন ও ক্রয়ক্ষমতার অভাব
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ধরে রাখা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলহানি, খাদ্যের সুষ্ঠু বণ্টন ও সকলের ক্রয়ক্ষমতা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

৪. যে ব্যক্তি প্রচলিত মজুরিতে কাজ করতে ইচ্ছুক কিন্তু কাজ পায় না, তাকে কী বলে

ক) ছদ্মবেশী বেকার
খ) মৌসুমী বেকার
গ) ইচ্ছাকৃত বেকার
ঘ) অনিচ্ছাকৃত বা প্রকাশ্য বেকার

সঠিক উত্তর: ঘ) অনিচ্ছাকৃত বা প্রকাশ্য বেকার

ব্যাখ্যা: যখন কোনো ব্যক্তি প্রচলিত মজুরিতে কাজ করতে ইচ্ছুক ও সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও কাজ পায় না, তখন তাকে অনিচ্ছাকৃত বা প্রকাশ্য বেকারত্ব বলে।

৫. কৃষিক্ষেত্রে সাধারণত কোন ধরনের বেকারত্ব বেশি দেখা যায়?

ক) প্রযুক্তিগত বেকারত্ব
খ) ছদ্মবেশী ও মৌসুমী বেকারত্ব
গ) সংঘাতজনিত বেকারত্ব
ঘ) ইচ্ছাকৃত বেকারত্ব

সঠিক উত্তর: খ) ছদ্মবেশী ও মৌসুমী বেকারত্ব

ব্যাখ্যা: বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োজিত থাকায় ছদ্মবেশী বেকারত্ব এবং বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কাজের অভাব থাকায় মৌসুমী বেকারত্ব বেশি পরিলক্ষিত হয়।

৬. “দারিদ্র্যসীমা” (Poverty Line) কীসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়?

ক) মাথাপিছু মাসিক আয়
খ) দৈনিক ন্যূনতম ক্যালরি গ্রহণ বা জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজন মেটানোর মতো আয়
গ) গড় আয়ু
ঘ) শিক্ষার হার

সঠিক উত্তর: খ) দৈনিক ন্যূনতম ক্যালরি গ্রহণ বা জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজন মেটানোর মতো আয়

ব্যাখ্যা: দারিদ্র্যসীমা হলো একটি নির্দিষ্ট আয়স্তর বা ভোগব্যয়ের স্তর যার নিচে অবস্থানকারী জনগোষ্ঠীকে দরিদ্র হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি সাধারণত দৈনিক ন্যূনতম ক্যালরি গ্রহণের প্রয়োজন বা মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় আয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।

৭. চরম দারিদ্র্য (Absolute Poverty) বলতে কী বোঝায়?

ক) আপেক্ষিকভাবে কম আয়।
খ) জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান) পূরণে অক্ষমতা।
গ) উচ্চ আয়ের মানুষের তুলনায় কম আয়।
ঘ) বেকারত্ব।

সঠিক উত্তর: খ) জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান) পূরণে অক্ষমতা।

ব্যাখ্যা: চরম বা পরম দারিদ্র্য বলতে এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে মানুষ তার জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য মৌলিক প্রয়োজনসমূহ (যেমন – খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা) পূরণ করতে পারে না।

৮. সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি বা গোষ্ঠীর মধ্যে আয়ের যে ব্যবধান বা তারতম্য, তাকে কী বলে?

ক) দারিদ্র্য
খ) বেকারত্ব
গ) আয় বৈষম্য
ঘ) মুদ্রাস্ফীতি

সঠিক উত্তর: গ) আয় বৈষম্য

ব্যাখ্যা: সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তি, শ্রেণি বা অঞ্চলের মধ্যে সম্পদের মালিকানা ও আয়ের বণ্টনে যে পার্থক্য বা অসমতা দেখা যায়, তাকে আয় বৈষম্য বলে।

৯. আয় বৈষম্য হ্রাসের উপায় কোনটি?

ক) প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা প্রবর্তন
খ) কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও সুযোগের সমতা সৃষ্টি
গ) সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদারকরণ
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: আয় বৈষম্য কমাতে হলে প্রগতিশীল কর আরোপ (ধনীদের উপর বেশি হারে কর), কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে সকলের সমান সুযোগ, দরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি (যেমন – ভাতা, খাদ্য সহায়তা) ইত্যাদি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

১০. বিশ্বায়ন (Globalization) প্রক্রিয়ায় কোন বিষয়টি বিশেষভাবে ঘটে?

ক) দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ হ্রাস পায়।
খ) দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
গ) দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সংযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির অবাধ প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
ঘ) শুধুমাত্র উন্নত দেশগুলো লাভবান হয়।

সঠিক উত্তর: গ) দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সংযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির অবাধ প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।

ব্যাখ্যা: বিশ্বায়ন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিশ্বের দেশগুলো অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে ক্রমশ একে অপরের সাথে সংযুক্ত ও নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, পুঁজি, প্রযুক্তি ও শ্রমের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।

১১. বিশ্বায়নের ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলো কোন ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে?

ক) রপ্তানি বাজার সংকুচিত হওয়া
খ) দেশীয় শিল্পের অসম প্রতিযোগিতা
গ) বৈদেশিক বিনিয়োগ হ্রাস
ঘ) প্রযুক্তির অভাব

সঠিক উত্তর: খ) দেশীয় শিল্পের অসম প্রতিযোগিতা

ব্যাখ্যা: বিশ্বায়নের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উন্মুক্ত হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর দেশীয় শিল্পসমূহ উন্নত দেশের বৃহৎ ও শক্তিশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারে।

১২. বাংলাদেশে পরিবেশগত প্রধান সমস্যা কোনটি?

ক) বায়ু দূষণ ও পানি দূষণ
খ) বনভূমি উজাড় হওয়া
গ) মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশগত সমস্যা বিদ্যমান, যেমন – শিল্প ও যানবাহনজনিত বায়ু দূষণ, নদী-নালা ও জলাশয় দূষণ, বনভূমি ধ্বংস, মাটির উর্বরতা হ্রাস ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।

১৩. জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে?

ক) বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়
খ) খরা
গ) সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও লবণাক্ততা প্রবেশ
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে ঘন ঘন ও তীব্র বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশ এবং বিভিন্ন প্রকার রোগব্যাধির প্রকোপ বৃদ্ধির মতো দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

১৪. “টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট” (SDGs) -এর মূল লক্ষ্য কী?

ক) শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন
খ) পরিবেশ সংরক্ষণ
গ) ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনসহ সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা
ঘ) শুধুমাত্র উন্নত দেশগুলোর উন্নয়ন

সঠিক উত্তর:  গ) ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনসহ সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা

ব্যাখ্যা: জাতিসংঘের গৃহীত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (Sustainable Development Goals – SDGs) -এর মূল লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণ, ক্ষুধা মুক্তি, সুস্বাস্থ্য, মানসম্মত শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা, বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, পরিবেশ সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নসহ মোট ১৭টি লক্ষ্য অর্জন করা।

১৫. বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের (প্রবাসী আয়) গুরুত্ব কী?

ক) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করে।
খ) গ্রামীণ অর্থনীতিতে সচলতা আনে।
গ) দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করে।
ঘ) উপরের সবগুলো।

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো।

ব্যাখ্যা: প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যা লেনদেন ভারসাম্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে, বিনিয়োগ বাড়ায় এবং দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করে।

১৬. বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (FDI) আকর্ষণে বাংলাদেশের প্রধান অন্তরায় কোনটি?

ক) অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা
খ) রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা
গ) দক্ষ জনশক্তির অভাব
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (FDI) প্রত্যাশিত মাত্রায় না আসার পেছনে অবকাঠামোগত অপ্রতুলতা (যেমন – বিদ্যুৎ, পরিবহন), আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুশাসনের অভাব এবং কখনো কখনো দক্ষ জনশক্তির অভাব অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।

১৭. বাংলাদেশের কৃষির উপখাত কোনটি?

ক) শস্য ও শাকসবজি
খ) প্রাণিসম্পদ
গ) বনজ সম্পদ ও মৎস্যসম্পদ
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: বাংলাদেশের কৃষি খাতের প্রধান উপখাতগুলো হলো শস্য ও শাকসবজি, প্রাণিসম্পদ (গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি), বনজ সম্পদ এবং মৎস্যসম্পদ।

১৮. সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (Social Safety Net) কর্মসূচির উদ্দেশ্য কী?

ক) ধনীদের আরও ধনী করা
খ) দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং আপদকালীন সময়ে সহায়তা প্রদান
গ) শুধুমাত্র বেকার ভাতা প্রদান
ঘ) কর আদায় বৃদ্ধি করা

সঠিক উত্তর: খ) দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং আপদকালীন সময়ে সহায়তা প্রদান

ব্যাখ্যা: সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের দরিদ্র, অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত এবং বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ (যেমন – বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী) জনগোষ্ঠীর ন্যূনতম জীবনধারণ নিশ্চিত করা, তাদের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং বিভিন্ন দুর্যোগ বা আপদকালীন সময়ে সহায়তা প্রদান করা।

১৯. জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে রূপান্তরের প্রধান উপায় কী?

ক) শুধুমাত্র খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি
খ) শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি
গ) শুধুমাত্র কর্মসংস্থান সৃষ্টি
ঘ) বিদেশে প্রেরণ

সঠিক উত্তর: খ) শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি

ব্যাখ্যা: জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে রূপান্তর করতে হলে তাদের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা এবং যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হয়।

২০. “কাঠামোগত বেকারত্ব ” (Structural Unemployment) কেন সৃষ্টি হয়?

ক) অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে (যেমন – প্রযুক্তিগত পরিবর্তন বা শিল্পের ধরনের পরিবর্তন)
খ) সামগ্রিক চাহিদার অভাবে
গ) মৌসুমী কাজের প্রকৃতির কারণে
ঘ) শ্রমিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে কাজ না করার প্রবণতায়

সঠিক উত্তর: ক) অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে (যেমন – প্রযুক্তিগত পরিবর্তন বা শিল্পের ধরনের পরিবর্তন)

ব্যাখ্যা: যখন অর্থনীতির কাঠামোতে পরিবর্তন আসে, যেমন – নতুন প্রযুক্তির উদ্ভব বা কোনো শিল্পের বিলুপ্তি এবং নতুন শিল্পের আবির্ভাব, তখন পুরাতন দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিকরা নতুন পরিস্থিতিতে কাজ পেতে অসুবিধা বোধ করে, যার ফলে যে বেকারত্ব সৃষ্টি হয় তাকে কাঠামোবদ্ধ বা संरचनात्मक বেকারত্ব বলে।

২১. বাংলাদেশের সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত কোনটি?

ক) পাট শিল্প
খ) তৈরি পোশাক শিল্প
গ) পরিবহন, যোগাযোগ, হোটেল-রেস্তোরাঁ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
ঘ) মৎস্য চাষ

সঠিক উত্তর: গ) পরিবহন, যোগাযোগ, হোটেল-রেস্তোরাঁ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

ব্যাখ্যা: সেবা খাতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, ব্যাংক ও বীমা, রিয়েল এস্টেট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনপ্রশাসন, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি।

২২. উন্নয়নশীল দেশে বৈদেশিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা কেন দেখা দেয়?

ক) অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়ের অভাব ও বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণের জন্য
খ) প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব দূর করার জন্য
গ) চলতি হিসাবে লেনদেন ঘাটতি মোকাবেলার জন্য
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায়শই মূলধন গঠন ও বিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় থাকে না, প্রযুক্তিগত দিক থেকে তারা পিছিয়ে থাকে এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি দেখা যায়। এই সকল ঘাটতি পূরণে এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক সাহায্যের প্রয়োজন হয়।

২৩. “লরেঞ্জ রেখা” ও “গিনি সহগ” কী পরিমাপে ব্যবহৃত হয়?

ক) দারিদ্র্যসীমা
খ) বেকারত্বের হার
গ) আয় বৈষম্য
ঘ) মুদ্রাস্ফীতির হার

সঠিক উত্তর: গ) আয় বৈষম্য

ব্যাখ্যা: লরেঞ্জ রেখা এবং গিনি সহগ হলো আয় বণ্টনের অসমতা বা আয় বৈষম্য পরিমাপের বহুল ব্যবহৃত দুটি পদ্ধতি।

২৪. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় “অভিযোজন” (Adaptation) বলতে কী বোঝায়?

ক) গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো
খ) জলবায়ু পরিবর্তনের আসন্ন বা প্রকৃত প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং ক্ষয়ক্ষতি কমানোর ব্যবস্থা গ্রহণ
গ) শুধুমাত্র বনায়ন কর্মসূচি
ঘ) নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি

সঠিক উত্তর: খ) জলবায়ু পরিবর্তনের আসন্ন বা প্রকৃত প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং ক্ষয়ক্ষতি কমানোর ব্যবস্থা গ্রহণ

ব্যাখ্যা: অভিযোজন হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বা সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাবের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করা বা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা যায়।

২৫. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় “প্রশমন” (Mitigation) বলতে কী বোঝায়?

ক) পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানো
খ) গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাস করা বা কার্বন শোষণ বৃদ্ধি করা
গ) শুধুমাত্র দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রম
ঘ) সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধে বাঁধ নির্মাণ

সঠিক উত্তর: খ) গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাস করা বা কার্বন শোষণ বৃদ্ধি করা

ব্যাখ্যা: প্রশমন হলো জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ অর্থাৎ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর জন্য গৃহীত পদক্ষেপসমূহ, যেমন – জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো, বনায়ন ইত্যাদি।

২৬. বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্য আনার জন্য কোন পদক্ষেপ জরুরি?

ক) আমদানি বৃদ্ধি করা
খ) রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার অনুসন্ধান
গ) শুধুমাত্র তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি
ঘ) বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ

সঠিক উত্তর: খ) রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার অনুসন্ধান

ব্যাখ্যা: বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে বা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হলে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করতে হবে। এর জন্য প্রচলিত রপ্তানি পণ্যের পাশাপাশি নতুন সম্ভাবনাময় পণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন রপ্তানি বাজার খুঁজে বের করা অপরিহার্য।

২৭. খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পরও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না হতে পারে কেন?

ক) যদি উৎপাদিত খাদ্য পুষ্টিকর না হয়
খ) যদি জনগণের খাদ্য ক্রয়ের সামর্থ্য না থাকে
গ) যদি খাদ্যের সুষ্ঠু বণ্টন ব্যবস্থা না থাকে
ঘ) উপরের সবগুলো

সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

ব্যাখ্যা: খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা খাদ্য নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলেও একমাত্র দিক নয়। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদিত খাদ্য সকলের কাছে সহজলভ্য হতে হবে, তা পুষ্টিকর হতে হবে, জনগণের খাদ্য ক্রয়ের আর্থিক সামর্থ্য থাকতে হবে এবং খাদ্যের সুষম বণ্টন ব্যবস্থা থাকতে হবে।

২৮. কোন ধরনের শিল্প পরিবেশ দূষণের জন্য তুলনামূলকভাবে বেশি দায়ী?

ক) কুটির শিল্প
খ) তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প
গ) চামড়া, টেক্সটাইল, সার ও রাসায়নিক শিল্প (যদি যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকে)
ঘ) পর্যটন শিল্প

সঠিক উত্তর: গ) চামড়া, টেক্সটাইল, সার ও রাসায়নিক শিল্প (যদি যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকে)

ব্যাখ্যা: কিছু শিল্প যেমন – চামড়া শিল্প, টেক্সটাইল ডাইং, সার কারখানা, রাসায়নিক শিল্প ইত্যাদি থেকে নির্গত বর্জ্য যদি সঠিকভাবে পরিশোধন ও ব্যবস্থাপনা করা না হয়, তাহলে তা মারাত্মক পরিবেশ দূষণ (পানি, বায়ু, মাটি) ঘটাতে পারে।

২৯. বেকারত্ব সমস্যার সমাধানে সরকারের কোন ধরনের নীতি অধিক কার্যকর?

ক) শুধুমাত্র শিল্পায়ন নীতি
খ) বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কারিগরি শিক্ষার প্রসার এবং আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচি গ্রহণ
গ) শুধুমাত্র আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি
ঘ) শুধুমাত্র মজুরি বৃদ্ধি

সঠিক উত্তর: খ) বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কারিগরি শিক্ষার প্রসার এবং আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচি গ্রহণ

ব্যাখ্যা: বেকারত্ব কমাতে হলে নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, শ্রম বাজারের চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে এবং যুব সমাজকে আত্মকর্মসংস্থানে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

৩০. বাংলাদেশের জনসংখ্যা নীতির মূল লক্ষ্য কী?

ক) জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি করা
খ) জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কাম্য পর্যায়ে রাখা এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন
গ) শুধুমাত্র জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন
ঘ) জনসংখ্যা বিদেশে রপ্তানি করা

সঠিক উত্তর: খ) জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কাম্য পর্যায়ে রাখা এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন

ব্যাখ্যা: বাংলাদেশের জনসংখ্যা নীতির মূল লক্ষ্য হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একটি কাম্য পর্যায়ে নামিয়ে আনা এবং একইসাথে বিদ্যমান জনসংখ্যার জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ও তাদের মানবসম্পদে রূপান্তর করা।

Leave a Reply

Scroll to Top