SSC ভূগোল ও পরিবেশ
চতুর্দশ অধ্যায়: বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ
১. প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে যে অস্বাভাবিক ও প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং যা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণের জন্য ক্ষতিকর, তাকে কী বলে?
(ক) পরিবেশ দূষণ
(খ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ
(গ) জলবায়ু পরিবর্তন
(ঘ) মানবসৃষ্ট বিপর্যয়
সঠিক উত্তর: (খ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ
ব্যাখ্যা: প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে যখন কোনো অস্বাভাবিক ও প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যা মানুষ, অন্যান্য প্রাণী ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে, তখন তাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে।
২. বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনটি?
(ক) ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি
(খ) বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও খরা
(গ) তুষারপাত ও ভূমিধস
(ঘ) দাবানল ও শৈত্যপ্রবাহ
সঠিক উত্তর: (খ) বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও খরা
ব্যাখ্যা: ভৌগোলিক অবস্থান, ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ুগত কারণে বাংলাদেশ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা, নদীভাঙন, ভূমিধস, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। এর মধ্যে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও খরা অন্যতম প্রধান।
৩. বাংলাদেশে সাধারণত কোন সময়ে বন্যা দেখা দেয়?
(ক) শীতকালে (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি)
(খ) গ্রীষ্মকালে (মার্চ-মে)
(গ) বর্ষাকালে (জুন-অক্টোবর)
(ঘ) শরৎকালে (অক্টোবর-নভেম্বর)
সঠিক উত্তর: (গ) বর্ষাকালে (জুন-অক্টোবর)
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশে প্রধানত বর্ষাকালে (জুন থেকে অক্টোবর) মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এবং উজানের নদ-নদীর পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বন্যা দেখা দেয়।
৪. বন্যার প্রধান কারণ কী?
(ক) অপরিকল্পিত নগরায়ণ
(খ) উজানে অধিক বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি ধারণক্ষমতা হ্রাস
(গ) বনভূমি উজাড়
(ঘ) জলবায়ু পরিবর্তন
সঠিক উত্তর: (খ) উজানে অধিক বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি ধারণক্ষমতা হ্রাস
ব্যাখ্যা: বন্যার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে উজানে (ভারতের আসাম, মেঘালয়, হিমালয় অঞ্চল) অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, প্রধান নদ-নদীগুলোর উৎসস্থলে বরফগলা পানি, নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস ও পানি ধারণক্ষমতা কমে যাওয়া এবং অনেক ক্ষেত্রে অপরিকল্পিত বাঁধ ও অবকাঠামো নির্মাণ।
৫. বন্যার ফলে কোন ধরনের ক্ষতি হয়?
(ক) ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ও ঘরবাড়ি ধ্বংস
(খ) যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়
(গ) ভূমির উর্বরতা হ্রাস পায়
(ঘ) মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায়
সঠিক উত্তর: (ক) ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ও ঘরবাড়ি ধ্বংস
ব্যাখ্যা: বন্যার ফলে মানুষের ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়, রাস্তাঘাট ডুবে যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
৬. বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ কোনটি?
(ক) নদী ভরাট করা
(খ) অধিক পরিমাণে বৃক্ষ নিধন
(গ) নদী খনন, বাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, বনায়ন
(ঘ) জলাভূমি ভরাট করে বসতি স্থাপন
সঠিক উত্তর: (গ) নদী খনন, বাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, বনায়ন
ব্যাখ্যা: বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য নদ-নদী খনন করে নাব্যতা বৃদ্ধি, নদীর তীরে টেকসই বাঁধ নির্মাণ, পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি, ব্যাপক বনায়ন এবং বন্যা সহনশীল শস্যের জাত উদ্ভাবন প্রয়োজন।
৭. ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রধান কারণ কী?
(ক) উচ্চ বায়ুর চাপ
(খ) সমুদ্রের পানির নিম্ন তাপমাত্রা
(গ) নিম্নচাপ কেন্দ্রে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুর শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ
(ঘ) শীতকালীন শুষ্ক বায়ু
সঠিক উত্তর: (গ) নিম্নচাপ কেন্দ্রে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুর শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ
ব্যাখ্যা: গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সমুদ্রে (যেমন বঙ্গোপসাগর) কোনো স্থানে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে এবং সেখানে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুপ্রবাহ শক্তিশালীভাবে উপরের দিকে উঠতে থাকলে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়।
৮. বাংলাদেশে সাধারণত কোন সময়ে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে?
(ক) বর্ষাকালের শুরুতে (এপ্রিল-মে) এবং বর্ষার শেষে (অক্টোবর-নভেম্বর)
(খ) শীতকালে (ডিসেম্বর-জানুয়ারি)
(গ) বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে (জুলাই-আগস্ট)
(ঘ) বসন্তকালে (মার্চ-এপ্রিল)
সঠিক উত্তর: (ক) বর্ষাকালের শুরুতে (এপ্রিল-মে) এবং বর্ষার শেষে (অক্টোবর-নভেম্বর)
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশে সাধারণত বর্ষাকালের আগে (এপ্রিল-মে) এবং বর্ষাকালের পরে (অক্টোবর-নভেম্বর) ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
৯. ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রের পানি উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস আকারে প্রবেশ করলে তাকে কী বলে?
(ক) বন্যা
(খ) সুনামি
(গ) জলোচ্ছ্বাস বা স্টর্ম সার্জ
(ঘ) নদীভাঙন
সঠিক উত্তর: (গ) জলোচ্ছ্বাস বা স্টর্ম সার্জ
ব্যাখ্যা: ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্রের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি উচ্চতায় ফুঁসে উঠে উপকূলীয় নিচু এলাকা প্লাবিত করলে তাকে জলোচ্ছ্বাস বা স্টর্ম সার্জ বলে।
১০. ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কত লোকের প্রাণহানি ঘটেছিল বলে অনুমান করা হয়?
(ক) প্রায় ১ লক্ষ
(খ) প্রায় ৩ লক্ষ
(গ) প্রায় ৫ লক্ষ বা তার অধিক
(ঘ) প্রায় ১০ লক্ষ
সঠিক উত্তর: (গ) প্রায় ৫ লক্ষ বা তার অধিক
ব্যাখ্যা: ১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে আনুমানিক ৫ লক্ষ বা তারও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।
১১. ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থার জন্য কোন সংস্থা কাজ করে?
(ক) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
(খ) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (CPP)
(গ) পানি উন্নয়ন বোর্ড
(ঘ) বন অধিদপ্তর
স ट्रिक উত্তর: (খ) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (CPP)
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস প্রদান করে এবং ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (CPP) জনগণকে সতর্ক করা ও আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করে।
১২. দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টিপাত না হলে বা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হলে কোন দুর্যোগ দেখা দেয়?
(ক) বন্যা
(খ) ঘূর্ণিঝড়
(গ) খরা
(ঘ) ভূমিধস
সঠিক উত্তর: (গ) খরা
ব্যাখ্যা: দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টিপাত না হলে বা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হলে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেলে যে শস্যহানি ও পানি সংকট দেখা দেয়, তাকে খরা বলে।
১৩. বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে খরার প্রকোপ বেশি?
(ক) দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে
(খ) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে (বরেন্দ্র অঞ্চল)
(গ) উপকূলীয় অঞ্চলে
(ঘ) মধ্যাঞ্চলে
সঠিক উত্তর: (খ) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে (বরেন্দ্র অঞ্চল)
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বরেন্দ্রভূমিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় সেখানে খরার প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
১৪. খরার ফলে কৃষিক্ষেত্রে কী ধরনের প্রভাব পড়ে?
(ক) মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়
(খ) সেচ ব্যবস্থার প্রয়োজন কমে
(গ) ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং খাদ্য সংকট দেখা দেয়
(ঘ) অধিক বৃষ্টিপাত হয়
সঠিক উত্তর: (গ) ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং খাদ্য সংকট দেখা দেয়
ব্যাখ্যা: খরার কারণে মাটিতে রসের অভাব দেখা দেয়, সেচ কাজ ব্যাহত হয়, ফলে ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যায় এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
১৫. নদীভাঙনের প্রধান কারণ কী?
(ক) নদীর তীরে বৃক্ষরোপণ
(খ) নদীর স্রোতের তীব্রতা, বন্যা ও নদীর গতিপথ পরিবর্তন
(গ) নদীতে বাঁধ নির্মাণ
(ঘ) শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি কমে যাওয়া
সঠিক উত্তর: (খ) নদীর স্রোতের তীব্রতা, বন্যা ও নদীর গতিপথ পরিবর্তন
ব্যাখ্যা: নদীর প্রবল স্রোত, বন্যার সময় পানির অতিরিক্ত চাপ, নদীর গতিপথ পরিবর্তন, নদীগর্ভে চর জেগে ওঠা এবং অনেক ক্ষেত্রে অপরিকল্পিতভাবে নদীর তীরবর্তী স্থাপনা নির্মাণ নদীভাঙনের প্রধান কারণ।
১৬. বাংলাদেশের কোন নদীগুলো ভাঙনপ্রবণ?
(ক) শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা
(খ) পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র
(গ) কর্ণফুলী, সাঙ্গু
(ঘ) তিস্তা, আত্রাই
সঠিক উত্তর: (খ) পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলোর মধ্যে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র অত্যন্ত ভাঙনপ্রবণ।
১৭. ভূমিধস সাধারণত কোন এলাকায় ঘটে?
(ক) সমতল ভূমিতে
(খ) উপকূলীয় এলাকায়
(গ) পাহাড়ি এলাকায়
(ঘ) বদ্বীপ অঞ্চলে
সঠিক উত্তর: (গ) পাহাড়ি এলাকায়
ব্যাখ্যা: ভূমিধস সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলে ঘটে, যেখানে ভূমির ঢাল বেশি এবং মাটি অস্থিতিশীল থাকে।
১৮. ভূমিধসের অন্যতম কারণ কী?
(ক) সমতল ভূমিতে কৃষিকাজ
(খ) পাহাড় কাটা ও বৃক্ষ নিধন
(গ) নদীতে চর জেগে ওঠা
(ঘ) খরা পরিস্থিতি
সঠিক উত্তর: (খ) পাহাড় কাটা ও বৃক্ষ নিধন
ব্যাখ্যা: পাহাড়ি এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটা, বৃক্ষ নিধন, ভারী বৃষ্টিপাত এবং অনেক সময় ভূমিকম্পের কারণে ভূমিধস ঘটে।
১৯. বাংলাদেশে শৈত্যপ্রবাহ সাধারণত কোন মাসে অনুভূত হয়?
(ক) জুন-জুলাই
(খ) সেপ্টেম্বর-অক্টোবর
(গ) ডিসেম্বর-জানুয়ারি
(ঘ) এপ্রিল-মে
সঠিক উত্তর: (গ) ডিসেম্বর-জানুয়ারি
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশে সাধারণত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে উত্তর দিক থেকে আগত শীতল বায়ুর প্রভাবে শৈত্যপ্রবাহ অনুভূত হয়।
২০. ভূমিকম্পের সময় করণীয় কী?
(ক) লিফটে করে দ্রুত নিচে নামা
(খ) খোলা স্থানে বা শক্ত টেবিলের নিচে আশ্রয় নেওয়া
(গ) উঁচু ভবনের ছাদে যাওয়া
(ঘ) আতঙ্কে ছোটাছুটি করা
সঠিক উত্তর: (খ) খোলা স্থানে বা শক্ত টেবিলের নিচে আশ্রয় নেওয়া
ব্যাখ্যা: ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত না হয়ে খোলা স্থানে আশ্রয় নেওয়া উচিত। ঘরের ভেতরে থাকলে শক্ত টেবিল বা খাটের নিচে অথবা পিলারের পাশে আশ্রয় নিতে হবে।
২১. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রধান পর্যায় কয়টি?
(ক) দুইটি
(খ) তিনটি (দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন, দুর্যোগ পরবর্তী)
(গ) চারটি
(ঘ) পাঁচটি
সঠিক উত্তর: (খ) তিনটি (দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন, দুর্যোগ পরবর্তী)
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে সাধারণত তিনটি প্রধান পর্যায়ে ভাগ করা হয়: দুর্যোগ পূর্ববর্তী কার্যক্রম, দুর্যোগকালীন কার্যক্রম এবং দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রম।
২২. দুর্যোগ পূর্ববর্তী কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত কোনটি?
(ক) ত্রাণ ও পুনর্বাসন
(খ) উদ্ধার তৎপরতা
(গ) পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ, প্রশিক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধি
(ঘ) ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ
সঠিক উত্তর: (গ) পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ, প্রশিক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধি
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ পূর্ববর্তী কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে দুর্যোগের ঝুঁকি বিশ্লেষণ, পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা জোরদারকরণ, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি।
২৩. দুর্যোগকালীন সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ কী?
(ক) ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা
(খ) উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান
(গ) দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ
(ঘ) অবকাঠামো নির্মাণ
সঠিক উত্তর: (খ) উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান
ব্যাখ্যা: দুর্যোগকালীন সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত উদ্ধার করা, তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য, পানীয় জল ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
২৪. দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য কী?
(ক) শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা প্রদান
(খ) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা ও পুনর্বাসন
(গ) নতুন করে দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া
(ঘ) স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া
স ट्रिक উত্তর: (খ) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা ও পুনর্বাসন
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন, ঘরবাড়ি নির্মাণে সহায়তা, কৃষি পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্তদের মানসিক ও आर्थिक সহায়তা প্রদান করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা।
২৫. ‘সিডর’ নামক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে কখন আঘাত হানে?
(ক) ২০০৫ সালে
(খ) ২০০৭ সালে
(গ) ২০০৯ সালে
(ঘ) ২০১১ সালে
স ट्रिक উত্তর: (খ) ২০০৭ সালে
ব্যাখ্যা: ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর ‘সিডর’ নামক একটি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
২৬. উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ বেষ্টনী (Green Belt) তৈরি করা হয় কেন?
(ক) ভূমির উর্বরতা বাড়ানোর জন্য
(খ) ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা কমানোর জন্য
(গ) পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য
(ঘ) শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য
সঠিক উত্তর: (খ) ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা কমানোর জন্য
ব্যাখ্যা: উপকূলীয় এলাকায় ম্যানগ্রোভ ও অন্যান্য লবণাক্ততা সহিষ্ণু গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা হলে তা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের গতি কমিয়ে দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
২৭. দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কোনটির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি?
(ক) বিদেশি সাহায্য
(খ) সরকারি উদ্যোগ
(গ) জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ
(ঘ) বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রম
সঠিক উত্তর: (গ) জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২৮. বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল কোনটি?
(ক) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল
(খ) মধ্যাঞ্চল
(গ) উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা
(ঘ) উপকূলীয় সমভূমি
সঠিক উত্তর: (গ) উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা
ব্যাখ্যা: ভূতাত্ত্বিক গঠন অনুসারে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সিলেট অঞ্চল) এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা (চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম) ভূমিকম্পের জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
২৯. ‘দুর্যোগ সহনশীল শস্য’ বলতে কী বোঝায়?
(ক) যে শস্য দ্রুত বৃদ্ধি পায়
(খ) যে শস্য অধিক ফলন দেয়
(গ) যে শস্য বন্যা, খরা বা লবণাক্ততা ইত্যাদি প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে
(ঘ) যে শস্য কীটনাশকমুক্ত
সঠিক উত্তর: (গ) যে শস্য বন্যা, খরা বা লবণাক্ততা ইত্যাদি প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে
ব্যাখ্যা: দুর্যোগ সহনশীল শস্য হলো সেইসব ফসলের জাত যা বন্যা, খরা, লবণাক্ততা বা অন্যান্য প্রতিকূল পরিবেশগত অবস্থাতেও তুলনামূলকভাবে ভালো জন্মাতে পারে ও ফলন দিতে পারে।
৩০. জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী প্রধান মানবসৃষ্ট কারণ কী?
(ক) আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
(খ) সূর্যের কার্যকলাপের পরিবর্তন
(গ) জীবাশ্ম জ্বালানির অধিক ব্যবহার ও বনভূমি উজাড়
(ঘ) পৃথিবীর আবর্তন গতির পরিবর্তন
সঠিক উত্তর: (গ) জীবাশ্ম জ্বালানির অধিক ব্যবহার ও বনভূমি উজাড়
ব্যাখ্যা: শিল্প বিপ্লবের পর থেকে মানুষ কর্তৃক ব্যাপক হারে জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, তেল, গ্যাস) পোড়ানো এবং বনভূমি উজাড় করার ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ।