মনে কর তুমি একটি দৈনিক পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক। “মহান বিজয় দিবস’ উদযাপন সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
অথবা, মনে কর, তুমি অনীক হােসেন। পাবনা জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির একজন ছাত্র। তােমার বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবস-এর অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক বরাবরে একটি প্রতিবেদন লেখ।
মহান বিজয় দিবস উদযাপন
স্টাফ রিপাের্টার। দৈনিক প্রথম আলাে । ঢাকা। ১৭ ডিসেম্বর।
গতকাল যথাযােগ্য মর্যাদায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মহান বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে। মহান বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্ববহ। কারণ ১৯৭১ সালের এই দিনে ৩০ লক্ষ মানুষের জীবন ও প্রায় তিন লক্ষ নারীর সম্ভমের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। আমাদের অবিসংবাদী প্রাণপ্রিয় নেতা বঙ্গাবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘােয়ণায় স্বতঃস্ফর্ত সাড়া দিয়ে এ দেশের আপামর মানুষ হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাসব্যাপী যুদ্ধ করে, তাদেরকে পরাজিত করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছে। তাই এ দিনটি বেশ আড়ম্বর ও উচ্ছাসের সাথে পালিত হয়। সকাল ৬ টায় কামানের তােপ দাগার মাধ্যমে দিনের শুরু হয়। সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বিনম্র কৃতজ্ঞতায় অর্পণ করা হয় পুষ্পস্তবক। এরপর প্যারেড গ্রাউন্ডে শুরু হয় সামরিক বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ইত্যাদি বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এতে সালাম গ্রহণ করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়।
জাতীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে পথনাটক, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমিতে আলােচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক দর্শক শ্রোতার সমাগম হয়। জাতীয় ছুটির দিন হলেও সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বিজয় দিবস উপলক্ষে আলােচনা, স্মৃতিচারণ ও দেশাত্ববােধক গানের অনুষ্ঠান হয়। এ ছড়া ঢাকায় সােহরাওয়ার্দী উদ্যান, শাহবাগ চত্বর, ধানমন্ডি লেক চত্বর, বাহাদুর শাহ পার্কে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়। বাদক দল ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশন করে যন্ত্রসংগীত। সব মিলিয়ে ঢাকায় মহান বিজয় দিবস উৎযাপিত হয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে। তাতে থাকে আনন্দ-বেদনার মিশ্র অনুভূতির গৌরবময় প্রকাশ।