মিথ্যা শুনিনি ভাই,
এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনাে মন্দির কাবা নাই
ভাব-সম্প্রসারণ: প্রতিটি মানুষের মনের মন্দিরে বসবাস করেন মহান সৃষ্টিকর্তা। যেখানে সৃষ্টিকর্তার আবাস, সেখান থেকে উপযুক্ত পবিত্র কোনাে উপাসনালয় থাকতে পারে না। মনের মন্দিরেই স্রষ্টার প্রতি আরাধনা হয় নিগূঢ়ভাবে। তাই জাগতিক যত মসজিদ, মন্দির, গির্জা থাকুক না কেন, হৃদয়ের স্থান সবচেয়ে উর্ধ্বে। মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষকে বিবেক-বিবেচনা ও বুদ্ধি সহকারে অন্যান্য জীব থেকে আলাদা করে সৃষ্টি করেছেন।
সেজন্য মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব বা আশরাফুল মাখলুকাত বলা হয়। পাপ-পুণ্য, ভালাে মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিচার করে মানুষকে তার পথ চলতে হয়। কোনটা ভালাে বা মন্দ, কোনটা পাপ অথবা পুণ্য, কোনটা ন্যায় অথবা অন্যায় তা মানুষের মনই নির্ধারণ করে। মানুষ মন্দির, মসজিদ বা গির্জায় যায় উপাসনার মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য। কিন্তু মন যদি অপবিত্র থাকে তাহলে কঠোর আরাধনা বা প্রার্থনা করেও স্রষ্টার সান্নিধ্যে আসা যায় না। এজন্য সর্বপ্রথম দরকার মনের পবিত্রতা। আবার এ মন দ্বারা মানুষ পরিচালিত হয়ে কল্যাণকর কার্যাদি তথা স্রষ্টার সন্তুষ্টি সাধনে ব্যাপৃত হয়।
সুতরাং মানুষের মন অথবা হৃদয়ই হচ্ছে সমস্ত উপাসনালয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান। সংসারধর্ম পালন করেও মানুষ হৃদয়কে পাপমুক্ত রেখে পুণ্য অর্জন করতে পারে। হৃদয় পাপমুক্ত না হলে দিনরাত উপাসনা করেও কোন ফল হবে না। হৃদয় নির্মল হলে আরাধনায় সিদ্ধি আসে। স্রষ্টার সঙ্গে সংযােগ সৃষ্টি হয়। অন্যথায় ভাসাভাসাভাবে আল্লাহ আল্লাহ যিকির করলেও ফায়দা হাসিল হয় না।
হৃদয় অর্থাৎ কলবের সংযােগেই আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়া যায়। আবার এ মন দ্বারাই একটা ভালাে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। হাজারাে বাধা আসলেও মন পবিত্র রাখলে ধর্মে অটুট থাকা যায়। মনই সবকিছুর পরিচালক। সেজন্য কবি বলেছেন যে, হৃদয়ের থেকে। বড় কোন মন্দির অথবা কাবা তিনি দেখেন নি। মন দ্বারাই দুঃখীর দুঃখে ব্যথিত হওয়া যায় আবার দান খয়রাত করার অভিপ্রায় লাভ করা যায়।
বস্তুত মানুষের মনই হচ্ছে তার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ উপাসনালয়। তাই আমাদের মনকে সব সময় কলুষমুক্ত রাখতে হবে। কারণ মনই হচ্ছে মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ উপাসনালয়, ঈর্ষা নয় নির্মল এবং কলুষমুক্ত মন মানুষকে ন্যায়ের পথে, সত্যের পথে এবং ধর্মের পথে পরিচালিত করে।