3 min read

শিশুশ্রম বন্ধের আবশ্যকতা তুলে ধরে পত্রিকায় প্রকাশের জন্যে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।

শিশুশ্রম- আলােকিত জাতির অন্তরায়


নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯: “সবচেয়ে খেতে ভাল মানুষের রক্ত”- কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কথার বাস্তব চিত্র সমাজ, রাষ্ট্র তথা সমগ্র বিশ্বেই স্পষ্ট। ফুলকলি’সম শিশুদের শৈশব নিংড়ে নিংড়ে বর্তমান পুঁজিবাদী সমাজ প্রাচুর্যের পাহাড় গড়ছে, অথচ শৈশব একজন মানুষের জীবন গঠনের প্রারম্ভ মুহূর্ত। নিজের বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিভার খোজ মানুষ এ বয়সেই পেয়ে থাকে।

শিশুদের শ্রমবৃত্তিতে নিয়ােগ প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। বর্তমানে যারা নিজেদেরকে সভ্য বলে দাবি করে এবং পৃথিবীতে আদর্শের ঝান্ডা উড়ানাের প্রতিশ্রুতিবন্ধ হয়, তারাও শিশুদের শৈশব নিয়ে অর্থের লােভে ছিনিমিনি খেলে। সারাদিন চৌদ্দ থেকে ষোলাে ঘণ্টা পরিশ্রম করে শিশুরা যে পারিশ্রমিক লাভ করে, তা দিয়ে সামান্য খাবারও জোটানাে অসম্ভব হয়ে পড়ে। উপরন্তু পরিশ্রমের সাথে যােগ হয় নানারূপ শারীরিক ও মানসিক লাঞ্ছনা। ফলে শ্রমজীবী শিশুদেরকে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়।

পােশাক শিল্প, চামড়া শিল্প, নির্মাণ শিল্প, হােটেল, রেস্তোরা, যানবাহন ইত্যাদি খাতে শিশুরা শ্রম বিক্রি করে থাকে। মূলত দরিদ্রতার কশাঘাতেই পিতামাতারা তাদের শিশুদেরকে শ্রমে নিয়ােজিত করেন। আর পুঁজিপতি ধনিক শ্রেণি এদের শ্রমকে সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ক্রয় করে।

শৈশবকালে শিক্ষার আলাে আহরণের বদলে কঠিন শ্রমে জড়িয়ে থাকা এসব শিশুর বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশ হয় না। শিক্ষার আলাে বিবর্জিত পরিবেশে এরা অশিক্ষিত, গোঁড়া ও দুশ্চরিত্র হিসেবে বেড়ে ওঠে। ফলে সমাজে সৃষ্টি হয় সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতির মতাে নৃশংস ঘটনার সূত্রপাত এবং অশিক্ষিত এ সমস্ত মানুষ তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও শিক্ষার দিকে ধাবিত করে না।

আমাদের সমাজ ও জাতিকে আলােকিত পথে পরিচালিত করতে হলে ও দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে। ধনিক শ্রেণির অধিক মুনাফা অর্জনের লােভকে সংযত করতে হবে এবং পিতামাতাকে তাদের সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। সমাজে দরিদ্র শ্রেণির জন্য অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং এ ব্যাপারে সরকারকে বিভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের জাতির ভবিষ্যৎ। সুতরাং ভবিষ্যৎকে আলােকিত করতে চাইলে অভিভাবক, সমাজ ও সরকারকে সহানুভূতির হাত বাড়াতে হবে এবং শিশুশ্রম বন্ধের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে শৈশবের আলােকিত আঙ্গিনা।


”গ”
প্রতিবেদক

আরও কয়েকটি প্রতিবেদনঃ

0
3
0
1
0

Download Post

3 thoughts on “শিশুশ্রম বন্ধের আবশ্যকতা তুলে ধরে পত্রিকায় প্রকাশের জন্যে একটি প্রতিবেদন রচনা কর”

    1. ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।
      ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হলেই আমাদের শ্রম স্বার্থক হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *