নর কহে ধূলিকণা, তোর জন্ম মিছে
নর কহে ধূলিকণা, তোর জন্ম মিছে,
চিরকাল পড়ে রলি চরণের নিচে।
ধূলিকণা কহে, ভাই, কেন কর ঘৃণা?
তোমার দেহের আমি পরিণাম কিনা।
মেঘ বলে সিন্ধু তব জনম বিফল
পিপাসায় দিতে নার এক বিন্দু জল।
সিন্ধু বলে পিতৃনিন্দা কর কোন মুখে?
তুমিও অপেয় হবে পড়িলে এ বুকে।
সারমর্ম: মানুষ যখন নিচু অবস্থান থেকে উঁচু অবস্থানে উন্নীত হয় তখন সে স্বভাবতই ভুলে যায় তার অতীতকে। এ ধরনের মানুষ তার অতীতকে স্বীকার তো করেই না বরং নানাভাবে তাকে অবহেলা করে। সে ভুলে যায় তার আপন অস্তিÍত্বকে, আপন উত্থানের শক্তিকে। এ ধরনের মানসিকতা কোনো সমাজেই কাম্য নয়।
সারমর্ম ২:
এই কবিতায় আত্মসম্মান ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। ধূলিকণা ও সমুদ্র তাদের অবমূল্যায়ন মেনে নেয় না, বরং প্রমাণ করে যে, সবারই নিজস্ব মূল্য আছে। তাই কাউকে তুচ্ছ জ্ঞান করা উচিত নয়।
সারমর্ম ৩:
এই কবিতাংশে মানবজীবনের মূল্য ও আত্মসম্মানবোধের কথা ফুটে উঠেছে। ধূলিকণাকে তুচ্ছ ভেবে মানুষ যখন তাকে অবহেলা করে, তখন ধূলিকণা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানুষের দেহও একদিন ধূলিতে পরিণত হবে। একইভাবে মেঘ যখন সমুদ্রকে তুচ্ছ করে, তখন সমুদ্র তাকে মনে করিয়ে দেয় যে, মেঘের উৎপত্তি সমুদ্র থেকেই।
এই কবিতায় কবি দেখাতে চেয়েছেন যে, কেউ কাউকে ছোট করে দেখার অধিকার রাখে না, কারণ সবারই নিজস্ব গুরুত্ব ও মূল্য রয়েছে। সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সম্মানবোধ থাকা উচিত।