|

বিড়ালঃ আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের

proshna featured

5 min read

Advertisements

আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের

আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের এমএ ক্লাসের ছাত্র। সমাজের কল্যাণ করতে সে পছন্দ করে। একবার তার এলাকায় ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়। এতে গ্রামের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। খাদ্য আর চিকিৎসার অভাবে সাধারণ মানুষ নানারকম দুর্ভোগে পড়ে। সাধারণ মানুষের কণ্ঠে আজিজের প্রাণ কেঁদে ওঠে। মানুষের এমন পরিণতি সে মেনে নিতে পারেনি। তাই সে বন্ধুদের নিয়ে বন্যার্ত মানুষের পাশে এসে দাড়ায়।

ক. ‘মার্জার’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘পরোপকারই পরম ধর্ম’_ ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের আজিজের পরপোকারের মাঝে ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত দিকটি ব্যখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটির ভাবের সাথে বিড়াল রচনার আংশিক দিক প্রতিফলিত হয়েছে আলোচনা করো ।

ক. ‘মার্জার’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘মর্জর’ শব্দের অর্থ- বিড়াল।

খ. ‘পরোপকারই পরম ধর্ম’_ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ ‘পরোপকারই পরম ধর্ম’ কথাটিতে ধর্ম সম্পর্কে বিড়ালের অভিমত প্রকাশিত হয়েছে।


নিজের জন্যে রাখা দুধ বিড়াল পান করলে কমলাকান্ত বিড়ালকে প্রহার করতে গিয়েও পুনরায় শয্যায় ফিরে আসে। তখন বিড়াল কমলাকান্তকে বলে, ‘এই দুগ্ধটুকু পান করিয়া আমার পরম উপকার হইয়াছে। তোমার আহরিত দুগ্ধে এই পরোপকার সিদ্ধ হলো– অতএব তুমি সেই পরম ধর্মের ফলভাগী।’ কারণ বিড়ালের মতে, ‘পরোপকারই পরম ধর্ম।’ বস্তুত প্রশস্ত উক্তিটিতে মানবতাবাদী লেখকের নৈতিক দর্শন প্রকাশ পেয়েছে। এর দ্বারা তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, অন্যের উপকারই শ্রেষ্ঠ ধর্ম।

গ. উদ্দীপকের আজিজের পরপোকারের মাঝে ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত দিকটি ব্যখ্যা কর।

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ রচনায় পরোপকার সম্পর্কে বিড়াল যে মন্তব্য করেছে, উদ্দীপকের আজিজের পরোপকারের মাঝে তার প্রতিফলন দেখা যায়।

‘বিড়াল’ রচনায় লেখক বিড়ালের ভাষ্যে সমাজের অন্ত্যজ শ্রেণির দুঃখ-দুর্দশা নিপীড়ন, নিষ্পেষণ ও বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তুলে ধরেছেন আত্মোউপলব্ধিজাত নৈতিক দর্শন। উদ্দীপকের ঘটনাবর্তে আজিজের কর্মকান্ডে তার নৈতিক চেতনার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

‘বিড়াল’ রচনায় ধনী-দরিদ্র বৈষম্য দুরীকরণের প্রত্যাশা উচ্চকিত হয়েছে। পাশাপাশি লেখক সেখানে তার আত্মোপলব্ধিজাত নৈতিক দর্শন এবং সাম্যবাদী সমাজ ভাবনাই মূর্ত করে তুলেছেন। যেখানে বিড়ালের স্বগতোক্তিতে লেখকের ভাষ্য- পরোপকারই পরম ধর্ম। কেননা দুস্থ মানুষকে সেবার মাধ্যমে যে পরোপকার সাধিত হয় তার চেয়ে আর বড় ধর্ম নেই। উদ্দীপকের আজিজের মাঝেও সেই পরম ধর্মাচারের প্রতিফলন লক্ষিত হয়। উচ্চশিক্ষিত আজিজ জনমানুষের কল্যাণে কাজ করতে পছন্দ করে।

বন্যায় গ্রামের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলে সে মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে। বন্ধুদের নিয়ে বন্যার্ত মানুষের পাশে এসে দাড়ায়। বস্তুত ‘বিড়াল’ রচনায় বিধৃত লেখকের মানবিক ভাবনাই উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই আজিজের জনকল্যাণমূলক কাজে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বিড়াল কর্তৃক বিবৃত পরোপকার সম্পর্কিত বন্তব্যের প্রতিফলন দেখা যায়।

ঘ. উদ্দীপকটির ভাবের সাথে বিড়াল রচনার আংশিক দিক প্রতিফলিত হয়েছে আলোচনা করো ।

উত্তরঃ উদ্দীপকটির ভাবে ‘বিড়াল’ রচনার আংশিক দিক প্রতিফলিত হয়েছে মন্তব্যটি যথার্থ ।
‘বিড়াল’ রচনায় বিড়ালের কণ্ঠে পৃথিবীর সকল বঞ্ছিত, নিষ্পেষিত, দলিতের ক্ষোভ-প্রতিবাদ-মর্মবেদনার পাশাপাশি পরোপকারের মহত্ব বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে কেবল পরোপকারের দিকটি প্রকাশিত হয়েছে।
বিড়াল রচনায় যে ন্যায়বাদ ও পরোপকারের কথা বলা হয়েছে, উদ্দীপকের ঘটনাবর্তে তারই প্রতিফলন লক্ষিত হয়। সেখানে সমাজকল্যাণের ছাত্র আজিজ মানবিক দিক বিবেচনায় বন্যার্তদের পাশে দাড়িয়েছে। বন্ধুদের সাথে নিয়ে তাদের সেবা করেছে। আজিজের সেবাপরায়ণ মানসিকতার জয়গান ধ্বনিত হয়েছে সোশিয়ালিস্টিক বিড়ালের কণ্ঠেও। বিড়ালের মতে, পরোপকারই পরম ধর্ম।

বিড়াল রচনায় সাম্যবাদ বিমুখ, ইংরেজ শাষিত ভারত বর্ষে শোষক-শাষিত, ধনী-দরিদ্র, সাধু-চোরের মধ্যে বৈষম্য ও সংগ্রামের কথা উচ্চকিত হয়েছে বিড়ালের কণ্ঠে। সেখানে লেখক আত্মোপোলব্ধি থেকে সমাজের অরাজকতার জন্য দরিদ্রের তুলনায় কৃপন ধনীকে বেশি দায়ী করেছেন। সোশিয়ালিস্টিক মনোভাবের পরিচয় দিয়ে বিড়াল সমাজে ধন সাম্য প্রত্যাশা করেছে। বিড়ালের মতে সমাজের ধনবৃদ্ধি মানে ধনীর ধন বৃদ্ধি। এর পাশাপাশি বিড়াল পরোপোকারের মহত্ব কৃতন করতেও ভোলেনি। অর্থাৎ বিড়াল রচনায় যেখানে সমাজের বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেখানে উদ্দিপকে কেবল পরোপকারের বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। সে দিক বিবেচনায় ‘উদ্দিপকটির ভাবের সাথে বিড়াল রচনার আংশিক দিক প্রতিফলিত হয়েছে’ উক্তিটি যথার্থ।

0
0
0
0
0

Download Post

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *