|

মতলবপুর গ্রামে সুসজ্জিত স্কুল-কলেজঃ বিড়াল

proshna featured

5 min read

Advertisements

মতলবপুর গ্রামে সুসজ্জিত স্কুল-কলেজ

মতলবপুর গ্রামে সুসজ্জিত স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, খেলার মাঠ, সোনাফলা ফসলি জমি সবই আছে কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসা বা স্কুল-কলেজের শিক্ষা গ্রহণের জন্যে যে আর্থিক সামর্থ্যের প্রয়োজন তা গ্রামের অধিকাংশ মানুষেরই নেই। ফসলি জমির ফসল ওঠে কয়েকটি ভূম্বামী পরিবারের গোলায়। তাই অর্ধাহারে, অশিক্ষায় আর চিকিৎসাহীনতায় মানবেতর জীবনযাপন করে মতলবপুর গ্রামের বেশি ভাগ মানুষ। বাইরে থেকে দেখলে যে গ্রামকে আদর্শ মনে হয়, নিবিড় পর্যবেক্ষণে ভেসে ওঠে সে গ্রামের বঞ্ছিত গ্রামবাসীর অসহায় মুখচ্ছবি।

ক. চোর অপেক্ষা শতগুণে দোষী কে?
খ. যখন বিচারে পরাস্থ হইবে তখন গম্ভির ভাবে উপদেশ প্রদান করিবে। ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের ‘ফসল’ -এর সাথে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের ধনবৃদ্ধির তুলনা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের আংশিক বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে।”বাক্যটির তাৎপর্য লেখো।

ক. চোর অপেক্ষা শতগুণে দোষী কে?

উত্তরঃ চোর অপেক্ষা শতগুণে বেশি দোষী কৃপণ ধনী।

খ. যখন বিচারে পরাস্থ হইবে তখন গম্ভির ভাবে উপদেশ প্রদান করিবে। ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ ‘ঘখন বিচারে পরাস্ত হইবে তখন গম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান করিবে’ _এটি কমলাকান্তের একটি আত্মরক্ষামূলক শ্লোত্মক বাণী ।

‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বিড়াল ও কমলাকান্তের মাঝে এক দীর্ঘ কাল্পনিক কথোপকথন হয়। এই কথোপকথনে বিড়াল ও কমলাকান্ত নিজ নিজ মত প্রকাশ করে। এতে বিড়াল ‘সোশিয়ালিস্টিক’, সুবিচারক, সুতার্কিক হওয়ায় কমলাকান্ত বিস্মিত ও যুক্তিতে পর্যুদস্ত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে প্রশ্নোক্ত শ্লেষ প্রকাশক মতবাদটির অবতারণা হয়।

গ. উদ্দীপকের ‘ফসল’ -এর সাথে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের ধনবৃদ্ধির তুলনা করো।

উত্তরঃ উদ্দীপকের “ফসল’ শব্দটি ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে উল্লেখিত ‘ধনবৃদ্ধি’ বিষয়টির সঙ্গে তুলনীয়।

বিড়াল রচনায় কমলাকান্তের মতে –“সামাজিক ধনবৃদ্ধি ব্যতঈত সমাজের উন্নতি নাই”। কিন্তু বিড়াল এ প্রসঙ্গে বলেছে, ‘আমি যদি খাইতে না পাইলাম, তবে সমাজের উন্নতি লইয়া কী করিব? বিড়ালের এ মন্তব্যে একটি বিষয় পরিষ্কার, তা হলো- সমাজে ধনসম্পদের প্রাচুর্য থাকা সত্তেও তা যদি অল্প কিছু মানুষের মধ্যেই কুক্ষিগত থাকে, তাহলে সে সম্পদ দিয়ে দরিদ্রের কী লাভ? এজন্যেই বিড়াল দ্বিধাহীনভাবে বলেছে, সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি। ধনীর ধনবৃদ্ধি না হইলে দরিদ্রের কী ক্ষতি?”

উদ্দীপকে সমাজের ধনবৃদ্ধি সম্পর্কে বিড়ালের মনোভাবের বাস্তব প্রতিফলন লক্ষণীয়। মতলবপুর গ্রামে সম্পদ, ফসলের প্রাচুর্য থাকলেও তা কুক্ষিগত হয়ে আছে কয়েকজন ভুস্বামীর হাতে। তাই অর্ধাহারে, অশিক্ষায় আর চিকিৎসাহীনতায় মানবেতর জীবনযাপন করে মতলবপুর গ্রামের আশি ভাগ মানুষ। বাইরে থেকে দেখলে যে গ্রামকে আদর্শ বলে মনে হয়, গভীরভাবে দেখলে সেখানে গ্রামবাসীর অসহায়ত্বই কেবল ফুটে ওঠে । উদ্দীপকের ফসল যেমন মুষ্টিমেয় ভূস্বামীর তেমনি ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে উল্লিখিত সিংহভাগ ধন হলো ধনীদের। আর এদিক থেকেই উদ্দীপকের ফসল আর ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের ধনিকশ্রেণির ধনবৃদ্ধির দিকটি তুলনীয়।

“উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের আংশিক বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে”- মন্তব্যটি যথার্থ।

বিড়াল প্রবন্ধে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য, দরিদ্রের বঞ্চনা, সমাজের অরাজকতায় ধনীর দায়িত্ব ইত্যাদি নানা বিষয় বিড়ালের সোশিয়ালিস্টিক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। আর উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে এসব বিষয়ের আংশিক দিক মাত্র।

উদ্দীপকে দেখানো হয়েছে সমাজের সমস্ত সম্পদ মুষ্টিমেয় মানুষের অধিকারে থাকায় কীভাবে অধিকাংশ মানুষ বিত্তহীন হয়ে পড়ছে ব্যর্থ হচ্ছে বেঁচে থাকার জন্যে অতি প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো সংগ্রহ করতে। গ্রামের সিংহভাগ মানুষ হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে ফসল ফলালেও তারাই অর্ধাহারে, অশিক্ষায় দিনাতিপাত করে। অবস্থা এমন যে, সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসাটুকু পর্যন্ত পায় না। এই পরিস্থিতি আলোচ্য ‘বিড়াল’ রচনার একটি দিক মাত্র। ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়াল ও কমলাকান্তের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে সমাজ-সত্যের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচিত হয়েছে।

বিড়াল রচনায় সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য সম্পর্কে বিস্তৃত বিষয় বর্ণিত হয়েছে। বিড়ালের মতে, বৈষম্যের কারণে সমাজে যাবতীয় অরাজকতার সৃষ্টি। ধনীরা সম্পদের পাহাড় গড়ে তুললেও দরিদ্রের দিকে মুখ তুলে তাকায় না। ফলে দরিদ্ররা হতদরিদ্রে পরিণত হচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্যে বাধ্য হচ্ছে চুরি করতে। বস্তুত এসব কথা বিড়ালের কণ্ঠে পৃথিবীর বঞ্ছিত, নিষ্পেষিত, দলিতের ক্ষোভ-প্রতিবাদ-মর্মবেদনা সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণিত হয়েছে। উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে এর একটি দিক। সার্বিক দিক বিবেচনায় তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ ।

0
0
0
0
0

Download Post

Similar Posts

  • |

    HSC জীব বিজ্ঞান (১ম পত্র) – উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব MCQ

    5 min read Table of Contents নবম অধ্যায় : উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব ১. উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় মৌল উপাদান কতটি? (জ্ঞান) ২. কোন আয়ন সবচেয়ে দ্রুতগতিতে শোষিত হয়? ৩. আয়ন বিনিময় মতবাদ সমর্থন করেন কোন বিজ্ঞানী? (জ্ঞান) ৪. কোনটি সক্রিয় পরিশোষণ মতবাদ ? (জ্ঞান) ৫. আয়ন বাহক মতবাদ প্রদান করেন কোন বিজ্ঞানী? (জ্ঞান) ৬. বিষম পৃষ্ঠ পাতার কোন ত্বকে পত্ররন্ধ পাওয়া যায়? (অনুধাবন) ৭. উদ্ভিদদেহে প্রস্বেদনের প্রধান অঙ্গ কোনটি? (জ্ঞান) ৮. কাষ্ঠল উদ্ভিদের মূলের বা কাণ্ডের ত্বকে ক্ষুদ্রাকৃতির ছিদ্র কী নামে পরিচিত? (জ্ঞান) ৯. শ্বেতসার-গ্লুকোজ আন্তঃরূপান্তর মতবাদ প্রদান করেন কোন বিজ্ঞানী? (জ্ঞান) ১০. লুণ্ডিগার্ডের আয়ন শোষণ মতবাদ অনুসারে (অনুধাবন) ১১. উদ্ভিদের সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য কোনটি? (জ্ঞান) ১২. কোন আলোতে সবচেয়ে বেশি সালোকসংশ্লেষণ হয়? (জ্ঞান) ১৩. কোনটি ক্লোরোফিলের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান? (জ্ঞান) ১৪. কোন বিজ্ঞানী ‘ল অব মিনিমাম’ প্রস্তাব করেন? ১৫. কোনটিকে জৈবমুদ্রা বলা হয়? (জ্ঞান) ১৬. কোনটি জৈব ছুরি? (জ্ঞান) ১৭. মাইকোলাইসিসে সরাসরি কত অণু ATP…

  • |

    আমি কিংবদন্তির কথা বলছি – MCQ

    4 min read Table of Contents আমি কিংবদন্তির কথা বলছি – MCQ আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কবিতার মুল বিষয় কোনটি? কবির পূর্বপুরুষ কী ছিলেন? ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবির পূর্বপুরুষ কীসের কথা বলতেন? যে কর্ষণ করে তাকে কী বলা হয়? (জ্ঞান) কবি যখন বলেন “কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা কবিতা” তখন কী হয়?…

  • বাংলা দ্বিতীয় পত্রঃ সন্ধি

    5 min read Table of Contents বাংলা দ্বিতীয় পত্রঃ সন্ধি বিসর্গ সন্ধির নিয়ম বাংলা দ্বিতীয় পত্রঃ সন্ধি কথা বলার সময় অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত উচ্চারণের ফলে পাশাপাশি দুটি ধ্বনি মিলে এক হয়ে যায়, কিংবা একটি ধ্বনি প্রভাবে অন্য ধ্বনিটি বদলে যায় অথবা লোপ যায়। দ্রুত উচ্চারণের ফলে পরস্পর সন্নিহিত ধ্বনির মিলন, পরিবর্তন বা লোপকে সন্ধি বলে।…

  • সারাংশঃ বার্ধক্য তাহাই যাহা পুরাতনকে, মিথ্যাকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে

    2 min read Table of Contents বার্ধক্য তাহাই যাহা পুরাতনকে, মিথ্যাকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সারাংশঃ বার্ধক্য তাহাই যাহা পুরাতনকে, মিথ্যাকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে বার্ধক্য তাহাই যাহা পুরাতনকে, মিথ্যাকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে। বৃদ্ধ তাহারাই যাহারা মায়াচ্ছন্ন নবমানবের অভিনব জয়যাত্রার শুধু বোঝা নয়, বিঘ;শতাব্দীর নবযাত্রীর চলার ছন্দে ছন্দ মিলাইয়া যাহারা কুচকাওয়াজ করিতে জানে না,…

  • বাংলা ব্যাকরণ কি?

    2 min read Table of Contents বাংলা ব্যাকরণ ও ব্যাকরণ পাঠের গুরুত্ব ব্যাকরণ কী? ব্যাকরণের সংজ্ঞাঃ বাংলা ব্যাকরণ ও ব্যাকরণ পাঠের গুরুত্ব ব্যাকরণ কী? ব্যাকরণ একটি সংস্কৃত শব্দ। যা ভাঙলে দাঁড়ায় ‘বি+আ+ ক্রি+অন’। ব্যুৎপত্তিগত অর্থে যার অর্থ্ হচ্ছে বিশেষভাবে বিশ্লেষণ। ভাষাকে বর্ণনা করে বা বিশ্লেষণ করে তা দেখবার চেষ্টা থেকেই ব্যাকরণের জন্ম। এ এদিক থেকে…

  • |

    কোষ বিভাজন MCQ

    20 min read Table of Contents কোষ বিভাজন MCQ ১. প্রোফেজ পর্যায়ে- ২. কোন পর্যায়ে ক্রোমাটিডগুলো সবচেয়ে বেশি মোটা, খাটো ও স্পষ্ট দেখা যায়? ৩. টেলোফেজ পর্যায়ে স্যাট ক্রোমোসোমের গৌণ কুঞ্চনে কোনটির পুনঃআবির্ভাব ঘটে? ৪. বহু নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট একটি প্রাণিকোষকে কী বলা হয়? ৫. ক্যারিওকাইনেসিস হল- ৬. কোনটিকে ইকোয়েশনাল বিভাজন বলা হয়? ৭. কে প্রথম…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *