স্পষ্টভাষী শত্রু নির্বাক মিত্র অপেক্ষা ভালাে
অথবা,
নির্বাক মিত্র অপেক্ষা স্পষ্টভাষী শত্রু অনেক ভালাে
ভাব-সম্প্রসারণ: শত্রু স্পষ্টভাষী হলে সতর্ক হওয়া যায় কিন্তু বন্ধু যদি তার মনােবাসনা তুলে না ধরে তাহলে বন্ধুত্বের মধ্যে ভাঙন দেখা দেয়। শত্রু বলতে আমরা প্রতিপক্ষকে এবং মিত্র বলতে বন্ধুকে বুঝি। বন্ধুতাে একনিষ্ঠ সুহৃদকেই বলা যায়। যে অশনে বসনে, শ্মশানে মশানে সাথী হয়, সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বিপদে সহমর্মী, সহগামী, সমব্যথী হয়, তাকে মিত্র বলা যায়।
শত্রুকে চেনা কষ্টকর বটে। কখন শত্রুতা করে বসে তা জানাও বড় সহজ নয়। কিন্তু যে শত্রু স্পষ্টভাষী, খােলাখুলি, বলে-কয়ে শত্রুতা করে, তাকে চিনতে কষ্ট হয় না। কিংবা তার শত্রুতার প্রতিরােধ করতেও পারা যায়। বন্ধু যদি নির্বাক থাকে অর্থাৎ কোনাে সৎ পরামর্শ বা সুবুদ্ধি দান না করে, তাহলে সে বন্ধু জীবনের কোনাে কল্যাণমূলক কাজে লাগে না। স্পষ্টভাষী শত্রু দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে অন্যের দোষত্রুটি বলে দেয়। সে কারও দোষত্রুটি এড়িয়ে যায়। ফলে শত্রুর বক্র সমালােচনায় সে নিজেকে সংশােধন করার সুযােগ পায়।
রবিঠাকুর তাই নিন্দুককে সবার চেয়ে বেশি ভালােবাসেন, তাকে যুগজনমের বন্ধু ও আঁধার ঘরের আলাে হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। স্পষ্টবাদিতাই সব সমস্যার সমাধান আনতে পারে। কিন্তু ধোঁয়াশার মাঝে বিচরণ করে সমস্যার সমাধান হয় না। বরং সমস্যার পাল্লা ভারী হয়। কাজেই নির্বাক মিত্র অপেক্ষা স্পষ্টভাষী শত্রু অনেক ভালাে।