বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে – ভাবসম্প্রসারণ

2 min read

Advertisements

বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে


ভাব-সম্প্রসারণ: রহস্যময় প্রকৃতির প্রতিটি বিষয় সুনির্ধারিত। প্রকৃতি প্রদত্ত যে বিধান তাই সুন্দর, তাই মনােরম, তাই সত্য, তাই শাশ্বত। এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটলেই সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়। যার পরিণাম সত্যিই ভয়াবহ। সৃষ্টিকর্তা জগৎ সৃষ্টি করে পরিবেশ অনুযায়ী জীব সৃষ্টি করেছেন এবং যাকে যেখানে শােভা পায় সেখানেই স্থাপন করেছেন।

পশুপাখি বনে বাস করে। বনের বুকে তারা মুক্ত জীবনযাপন করে, স্বচ্ছন্দে বিহার করে। তাদের সে স্বাভাবিকতা লােকালয়ে আসলে আর থাকে না। স্বাভাবিকতা হারালে সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়। যে সকল মানুষ বনজঙ্গলে বসবাস করে তারা বর্বর; শিক্ষার আলাে থেকে বঞ্চিত বলে চালচলনে তারা অনেকটা হিংস্র প্রকৃতির হয়। তাদের মার্জিত রুচিবােধ নেই। তারা প্রায় নগ্ন অবস্থায় থাকে। সভ্য সমাজের রুচিবােধের সাথে তাদের রুচিবােধের রয়েছে দুস্তর ব্যবধান। তারা যদি হঠাৎ করে শহরে চলে আসে তাহলে তা শহুরে মানুষের নিকট বেমানান ঠেকবে তেমনি বন্য মানুষের নিকটও এটি অস্বস্তির কারণ হবে।

বনের পশুপাখির বেলায় লােকালয়ে রেখে যতই আদর যত্ন করে পােষা হউক না কেন, এতে সে তৃপ্ত নয়। সে চায় যথেচ্ছ ঘুরে বেড়াতে। লােকালয় এদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতেও প্রতিবন্ধক স্বরূপ। বন্য জীবজন্তুর বন্য রূপের সাথে পরিচিত হতে পারা যায় শুধু বনেই। বনেই এদের যথার্থ স্থান এবং সেখানেই তাদের সকল সৌন্দর্য মূর্ত হয়ে ওঠে। স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করলে প্রতিটি প্রাণী সংকুচিত, ভীত ও বেদনায় নুয়ে পড়ে। পরিবেশ অনুযায়ী প্রতিটি প্রাণীই দেখতে সুন্দর। বন্যেরা বনেই সুন্দর আর শিশুরা মায়ের কোলে। জীবজগতের প্রতিটি প্রাণীরই একটি নিজস্ব জগৎ আছে। সে জগতেই সে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। অন্যথা হলে জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়।

0
0
0
0
0

Download Post

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *