চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন,
ব্যথিত বেদন বুঝিতে কি পারে?
কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে,
কভু আশীবিষে দংশেনি যারে
সুখ এবং দুঃখ দুটি বিপরীত বিষয়। এরা একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। একটি না থাকলে অন্যটির মর্ম বোঝা যায় না। অন্ধকার না থাকলে যেমন আলো বোঝা যায় না। যখন কারো হাত কাটে তার ব্যাথা কেবল ঐ ব্যক্তিই বুঝে অন্য কেউ নয়। কষ্ট বা বেদনার যে অনুভূতি তা কেবল ব্যক্তি নিজেই বোঝে। আমরা পাশের মানুষ শুধু সমবেদনাই জানাতে পারি। তার কষ্টটা কখনো অনুভব করতে পারি না। পৃথিবীতে মানুষের জীবন সুখ-দুঃখ মিলিয়েই গড়ে উঠেছে। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা দুঃখের চেয়ে সুখটাই বেশি ভোগ করে। তাই দুঃখী ব্যক্তির দুঃখ তারা বুঝতে পারে না। আমাদের সমাজে অনেক ধনী লোক আছে সোনার চামচ মুখে নিয়ে যাদের জন্ম হয়েছে।
কখনো কখনো তারা দরিদ্র মানুষদের গণ্যই করে না। যারা সুখী এবং সম্পদশালী তারা গরীবের কষ্ট কখনো বুঝতে পারে না। তাই গরীবকে তারা অবহেলা করে, অবজ্ঞা করে। গরীবের কষ্ট তারা কখনও বোঝার চেষ্টাও করে না। তারা ধনী ও গরীবের মাঝে এক বিভেদের দেয়াল তৈরি করেছে। সমাজে উঁচুতলার লোকেরা গরীব খেটে খাওয়া মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে চায় না। বরং তাদেরকে আরও বেশি কষ্টে ভোগায়। ধনীরা কখনোই গরীবের কষ্টে সামিল হতে চায় না। কারণ তারা এই কষ্টের মূল্যায়নই করে না। তারা ভুলে যায়, যে সুখের পাহাড় তারা গড়েছে সেটা ঐ গরীব মানুষেরই কষ্টের ফসল। যাকে শাপে কামড় দেয় কেবল সে-ই বিষের যন্ত্রনা অনুভব করতে পারে। সুখে থেকে কখনো অন্যের দুঃখকে অনুভব করা যায় না।
শিক্ষা: যে মানুষ প্রতিনিয়ত দুঃখ-কষ্ট পাচ্ছে সে-ই কেবল এর যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পারে। কেউ কেউ হয়তো দায়বোধ থেকে দুঃখী মানুষকে কখনো সমবেদনা জানায়। কিন্তু তা কেবল সমবেদনাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।