জীববিজ্ঞান দ্বাদশ অধ্যায় MCQ
জীবনের ধারাবাহিকতা ও বিবর্তন
MCQ নং ১: জীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষাকারী প্রধান প্রক্রিয়া কোনটি?
(ক) শ্বসন
(খ) রেচন
(গ) প্রজনন
(ঘ) পুষ্টি
সঠিক উত্তর: (গ) প্রজনন
ব্যাখ্যা: প্রজনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জীব তার বংশধর সৃষ্টি করে এবং প্রজাতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।
MCQ নং ২: বিবর্তন কী?
(ক) জীবের আকস্মিক পরিবর্তন
(খ) জীবের ধীরে ধীরে পরিবর্তন
(গ) পরিবেশের আকস্মিক পরিবর্তন
(ঘ) খাদ্যাভাসের পরিবর্তন
সঠিক উত্তর: (খ) জীবের ধীরে ধীরে পরিবর্তন
ব্যাখ্যা: বিবর্তন হলো দীর্ঘ সময় ধরে জীবের জিনগত বৈশিষ্ট্যের ধীরে ধীরে পরিবর্তন, যার ফলে নতুন প্রজাতির উদ্ভব হতে পারে।
MCQ নং ৩: বিবর্তন তত্ত্বের জনক কাকে বলা হয়?
(ক) গ্রেগর জোহান মেন্ডেল
(খ) জ্যাঁ-বাপ্তিস্ত লামার্ক
(গ) চার্লস ডারউইন
(ঘ) রবার্ট হুক
সঠিক উত্তর: (গ) চার্লস ডারউইন
ব্যাখ্যা: ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ চার্লস ডারউইন তার প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বের মাধ্যমে বিবর্তনের একটি সুস্পষ্ট ধারণা দেন এবং তাকে বিবর্তন তত্ত্বের জনক বলা হয়।
MCQ নং ৪: ডারউইনের বিখ্যাত বইটির নাম কী?
(ক) দ্য অরিজিন অফ স্পিসিস
(খ) ফিলোসফি জুওলজিক
(গ) স্পিসিস প্ল্যান্টারাম
(ঘ) সিস্টেম ন্যাচুরি
সঠিক উত্তর: (ক) দ্য অরিজিন অফ স্পিসিস
ব্যাখ্যা: চার্লস ডারউইনের লেখা বিখ্যাত বইটি হলো “অন দ্য অরিজিন অফ স্পিসিস বাই মিনস অফ ন্যাচারাল সিলেকশন, অর দ্য প্রিজারভেশন অফ ফেভার্ড রেসেস ইন দ্য স্ট্রাগল ফর লাইফ” (On the Origin of Species by Means of Natural Selection, or the Preservation of Favoured Races in the Struggle for Life), যা1 ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়।
MCQ নং ৫: ল্যামার্কের তত্ত্বের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কী ছিল?
(ক) প্রাকৃতিক নির্বাচন
(খ) অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ
(গ) প্রকরণ
(ঘ) জিনগত পরিবর্তন
সঠিক উত্তর: (খ) অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ
ব্যাখ্যা: ফরাসি জীববিজ্ঞানী জ্যাঁ-বাপ্তিস্ত লামার্কের তত্ত্ব অনুসারে, জীব তার জীবনকালে যে বৈশিষ্ট্য অর্জন করে, তা পরবর্তী প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়। এই ধারণাটি “অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ” নামে পরিচিত।
MCQ নং ৬: প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে?
(ক) খাদ্যের প্রাচুর্য
(খ) পরিবেশগত চাপ
(গ) প্রজননের আধিক্য
(ঘ) জিনগত স্থিতিশীলতা
সঠিক উত্তর: (খ) পরিবেশগত চাপ
ব্যাখ্যা: প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবেশগত চাপ (যেমন: খাদ্যের অভাব, শিকারি, রোগ) মুখ্য ভূমিকা পালন করে। যে জীবেরা পরিবেশের সাথে ভালোভাবে অভিযোজিত হতে পারে, তারাই টিকে থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে।
MCQ নং ৭: প্রকরণ (Variation) কীভাবে বিবর্তনে সাহায্য করে?
(ক) প্রজননের হার বাড়ায়
(খ) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
(গ) নতুন প্রজাতি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে
(ঘ) পরিবেশের সাথে অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ায়
সঠিক উত্তর: (ঘ) পরিবেশের সাথে অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ায়
ব্যাখ্যা: জীবের মধ্যেকার জিনগত ভিন্নতা বা প্রকরণ তাদের পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে। অনুকূল প্রকরণযুক্ত জীবেরা টিকে থাকে এবং তাদের বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মে передается, যা বিবর্তনের পথ প্রশস্ত করে।
MCQ নং ৮: জীবাশ্ম (Fossil) কী?
(ক) মৃত জীবের নরম অংশ
(খ) বিলুপ্ত জীবের দেহ বা দেহের অংশের সংরক্ষিত ধ্বংসাবশেষ
(গ) বর্তমানে জীবিত জীবের দেহাবশেষ
(ঘ) রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত পাথর
সঠিক উত্তর: (খ) বিলুপ্ত জীবের দেহ বা দেহের অংশের সংরক্ষিত ধ্বংসাবশেষ
ব্যাখ্যা: জীবাশ্ম হলো সুদূর অতীতের বিলুপ্ত জীবদের দেহ, দেহের অংশ বা তাদের কার্যকলাপের কোনো চিহ্ন যা শিলাস্তরে সংরক্ষিত থাকে এবং বিবর্তনের ইতিহাস জানতে সাহায্য করে।
MCQ নং ৯: সমসংস্থ অঙ্গ (Homologous organs) কোন বিবর্তন প্রক্রিয়ার সাক্ষ্য দেয়?
(ক) অপসারী বিবর্তন
(খ) অভিসারী বিবর্তন
(গ) কৃত্রিম নির্বাচন
(ঘ) অভিযোজন
সঠিক উত্তর: (ক) অপসারী বিবর্তন
ব্যাখ্যা: সমসংস্থ অঙ্গ হলো সেইসব অঙ্গ যাদের গঠনগত উৎস একই কিন্তু কাজের ভিন্নতা দেখা যায় (যেমন: মেরুদণ্ডী প্রাণীদের অগ্রপদ)। এটি অপসারী বিবর্তনের সাক্ষ্য দেয়, যেখানে একই পূর্বপুরুষ থেকে বিভিন্ন পরিবেশে অভিযোজনের ফলে অঙ্গের কার্যকারিতা ভিন্ন হয়েছে।
MCQ নং ১০: সমবৃত্তীয় অঙ্গ (Analogous organs) কোন বিবর্তন প্রক্রিয়ার সাক্ষ্য দেয়?
(ক) অপসারী বিবর্তন
(খ) অভিসারী বিবর্তন
(গ) প্রাকৃতিক নির্বাচন
(ঘ) অভিযোজন
সঠিক উত্তর: (খ) অভিসারী বিবর্তন
ব্যাখ্যা: সমবৃত্তীয় অঙ্গ হলো সেইসব অঙ্গ যাদের গঠনগত উৎস ভিন্ন কিন্তু কাজের समानता দেখা যায় (যেমন: পতঙ্গের ডানা ও পাখির ডানা)। এটি অভিসারী বিবর্তনের সাক্ষ্য দেয়, যেখানে ভিন্ন পূর্বপুরুষ থেকে আগত জীবেরা একই পরিবেশের চাপে একই রকম কার্যকারিতার জন্য অঙ্গের বিকাশ ঘটিয়েছে।
অধ্যায়: ১২ – জীবনের ধারাবাহিকতা ও বিবর্তন (অতিরিক্ত MCQ)
MCQ নং ১১: নিষ্ক্রিয় অঙ্গ (Vestigial organs) কীসের প্রমাণ?
(ক) অভিযোজন
(খ) অভিসারী বিবর্তন
(গ) অপসারী বিবর্তন
(ঘ) বিবর্তনের
সঠিক উত্তর: (ঘ) বিবর্তনের
ব্যাখ্যা: নিষ্ক্রিয় অঙ্গ হলো সেই অঙ্গ যা পূর্বপুরুষদের দেহে কার্যকরী ছিল কিন্তু বিবর্তনের ধারায় উত্তরসূরিদের দেহে কার্যকারিতা হারিয়েছে এবং আকারে ছোট হয়ে গেছে (যেমন: মানুষের অ্যাপেন্ডিক্স, লেজের কশেরুকা)। এটি প্রমাণ করে যে জীবেরা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে।
MCQ নং ১২: ভ্রূণতত্ত্ব (Embryology) কীভাবে বিবর্তনের ধারণা সমর্থন করে?
(ক) জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণ করে
(খ) বিভিন্ন প্রাণীর ভ্রূণের প্রাথমিক পর্যায়ের সাদৃশ্য দেখিয়ে
(গ) জিনগত পরিবর্তন ব্যাখ্যা করে
(ঘ) প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে
সঠিক উত্তর: (খ) বিভিন্ন প্রাণীর ভ্রূণের প্রাথমিক পর্যায়ের সাদৃশ্য দেখিয়ে
ব্যাখ্যা: বিভিন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীর ভ্রূণের প্রাথমিক পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য দেখা যায় (যেমন: ফুলকা ছিদ্র, লেজ)। এটি ইঙ্গিত করে যে তাদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল এবং বিবর্তনের ধারায় তারা বিভিন্ন পথে বিকশিত হয়েছে।
MCQ নং ১৩: জিন পুল (Gene pool) কী?
(ক) একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির সকল জিনের সমষ্টি
(খ) একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সকল জীবের জিন
(গ) একটি নির্দিষ্ট বংশের জিন
(ঘ) একটি নির্দিষ্ট জীবের জিনগত বৈশিষ্ট্য
সঠিক উত্তর: (ক) একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির সকল জিনের সমষ্টি
ব্যাখ্যা: জিন পুল হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির সকল সদস্যের জিনগত উপাদানের সমষ্টি। বিবর্তনের ধারায় জিন পুলের অ্যালিলের আপেক্ষিক frequency পরিবর্তিত হতে পারে।
MCQ নং ১৪: অ্যালিলের ফ্রিকোয়েন্সি (Allele frequency) পরিবর্তন কিসের কারণ?
(ক) পরিবেশগত স্থিতিশীলতা
(খ) জিনগত ভারসাম্য
(গ) বিবর্তন
(ঘ) প্রজননের অভাব
সঠিক উত্তর: (গ) বিবর্তন
ব্যাখ্যা: অ্যালিলের ফ্রিকোয়েন্সি বা একটি নির্দিষ্ট অ্যালিলের জিন পুলে আপেক্ষিক প্রাচুর্য সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হলে তা বিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। বিভিন্ন কারণ (যেমন: প্রাকৃতিক নির্বাচন, জিন প্রবাহ, জিনগত চ্যুতি, পরিব্যক্তি) অ্যালিলের ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করতে পারে।
MCQ নং ১৫: জিনগত চ্যুতি (Genetic drift) কী?
(ক) বৃহৎ জিন পুলে অ্যালিলের আকস্মিক পরিবর্তন
(খ) ছোট জিন পুলে অ্যালিলের আকস্মিক পরিবর্তন
(গ) জিন পুলের সাথে নতুন জিনের সংযোজন
(ঘ) জিন পুল থেকে জিনের অপসারণ
সঠিক উত্তর: (খ) ছোট জিন পুলে অ্যালিলের আকস্মিক পরিবর্তন
ব্যাখ্যা: জিনগত চ্যুতি হলো ছোট জিন পুলে অ্যালিলের ফ্রিকোয়েন্সির এলোমেলো পরিবর্তন, যা বংশানুক্রমে ঘটে। এটি প্রাকৃতিক নির্বাচনের চেয়ে সুযোগের উপর বেশি নির্ভরশীল।
MCQ নং ১৬: প্রজাতি (Species) কী?
(ক) বাহ্যিক চেহারায় একই রকম জীবগোষ্ঠী
(খ) জিনগতভাবে একই রকম জীবগোষ্ঠী
(গ) প্রাকৃতিকভাবে প্রজননক্ষম এবং উর্বর বংশধর উৎপাদনে সক্ষম জীবগোষ্ঠী
(ঘ) একই পরিবেশে বসবাসকারী জীবগোষ্ঠী
সঠিক উত্তর: (গ) প্রাকৃতিকভাবে প্রজননক্ষম এবং উর্বর বংশধর উৎপাদনে সক্ষম জীবগোষ্ঠী
ব্যাখ্যা: প্রজাতি হলো জীবদের এমন একটি গোষ্ঠী যারা প্রাকৃতিকভাবে নিজেদের মধ্যে প্রজনন করতে এবং উর্বর বংশধর উৎপাদন করতে সক্ষম। প্রজাতি হলো জীববৈচিত্র্যের মৌলিক একক।
MCQ নং ১৭: নতুন প্রজাতি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে কী বলে?
(ক) অভিযোজন
(খ) প্রকরণ
(গ) প্রজাতি উদ্ভব (Speciation)
(ঘ) প্রাকৃতিক নির্বাচন
সঠিক উত্তর: (গ) প্রজাতি উদ্ভব (Speciation)
ব্যাখ্যা: প্রজাতি উদ্ভব হলো সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি পূর্বপুরুষ প্রজাতি থেকে নতুন দুটি বা ততোধিক স্বতন্ত্র প্রজাতি তৈরি হয়। এটি বিভিন্ন কারণে ঘটতে পারে (যেমন: ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা, প্রজননগত বিচ্ছিন্নতা)।
MCQ নং ১৮: ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা (Geographic isolation) কীভাবে প্রজাতি উদ্ভব ঘটাতে পারে?
(ক) জিন পুলের আকার বৃদ্ধি করে
(খ) অ্যালিলের ফ্রিকোয়েন্সি স্থির রাখে
(গ) দুটি বিচ্ছিন্ন জীবগোষ্ঠীর মধ্যে জিন প্রবাহ বন্ধ করে
(ঘ) প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রভাব কমিয়ে দেয়
সঠিক উত্তর: (গ) দুটি বিচ্ছিন্ন জীবগোষ্ঠীর মধ্যে জিন প্রবাহ বন্ধ করে
ব্যাখ্যা: ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতার কারণে একটি প্রজাতির জীবগোষ্ঠী দুটি বা ততোধিক অংশে বিভক্ত হয়ে গেলে তাদের মধ্যে জিন প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। সময়ের সাথে সাথে প্রতিটি বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী বিভিন্ন পরিবেশগত চাপের অধীনে ভিন্নভাবে বিবর্তিত হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত নতুন প্রজাতিতে পরিণত হতে পারে।
MCQ নং ১৯: অভিযোজন (Adaptation) কী?
(ক) আকস্মিক জিনগত পরিবর্তন
(খ) পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য জীবের বৈশিষ্ট্য
(গ) প্রজননের হার বৃদ্ধি
(ঘ) জীবাশ্ম তৈরির প্রক্রিয়া
সঠিক উত্তর: (খ) পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য জীবের বৈশিষ্ট্য
ব্যাখ্যা: অভিযোজন হলো জীবের এমন বৈশিষ্ট্য যা তাকে তার নির্দিষ্ট পরিবেশে টিকে থাকতে এবং বংশবৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই বৈশিষ্ট্য জিনগতভাবে অর্জিত হয় এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বিকশিত হয়।
MCQ নং ২০: বিবর্তনের প্রধান প্রমাণ কোনটি?
(ক) জীবের বাহ্যিক সাদৃশ্য
(খ) জিনগত স্থিতিশীলতা
(গ) জীবাশ্ম, সমসংস্থ ও সমবৃত্তীয় অঙ্গ, ভ্রূণতত্ত্ব এবং জিনগত প্রমাণ
(ঘ) পরিবেশের স্থিতিশীলতা
সঠিক উত্তর: (গ) জীবাশ্ম, সমসংস্থ ও সমবৃত্তীয় অঙ্গ, ভ্রূণতত্ত্ব এবং জিনগত প্রমাণ
ব্যাখ্যা: বিবর্তনের ধারণা বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জীবাশ্ম রেকর্ড, বিভিন্ন জীবের সমসংস্থ ও সমবৃত্তীয় অঙ্গের তুলনা, ভ্রূণতাত্ত্বিক সাদৃশ্য এবং জিনগত বিশ্লেষণ।
অধ্যায়: ১২ – জীবনের ধারাবাহিকতা ও বিবর্তন (আরও ১০টি MCQ)
MCQ নং ২১: জিন প্রবাহ (Gene flow) কী?
(ক) একটি জীব থেকে অন্য জীবে জিনের স্থানান্তর
(খ) একটি প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে জিনের স্থানান্তর
(গ) একটি জীবগোষ্ঠী থেকে অন্য জীবগোষ্ঠীতে জিনের স্থানান্তর
(ঘ) একটি কোষ থেকে অন্য কোষে জিনের স্থানান্তর
সঠিক উত্তর: (গ) একটি জীবগোষ্ঠী থেকে অন্য জীবগোষ্ঠীতে জিনের স্থানান্তর
ব্যাখ্যা: জিন প্রবাহ হলো যখন কোনো প্রজাতির জীব এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় এবং সেখানে প্রজনন করে, তখন তাদের জিন নতুন জীবগোষ্ঠীর জিন পুলে প্রবেশ করে বা পুরনো জিন পুল থেকে বেরিয়ে যায়। এটি অ্যালিলের ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করতে পারে।
MCQ নং ২২: হ Hardy-Weinberg নীতি কী ব্যাখ্যা করে?
(ক) প্রাকৃতিক নির্বাচনের হার
(খ) জিনগত ভারসাম্য এবং অ্যালিলের স্থিতিশীলতা
(গ) নতুন প্রজাতির উৎপত্তির কারণ
(ঘ) জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণের পদ্ধতি
সঠিক উত্তর: (খ) জিনগত ভারসাম্য এবং অ্যালিলের স্থিতিশীলতা
ব্যাখ্যা: Hardy-Weinberg নীতি অনুসারে, একটি বৃহৎ, এলোমেলোভাবে প্রজননকারী জীবগোষ্ঠীতে অ্যালিল এবং জিনোটাইপের ফ্রিকোয়েন্সি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থির থাকে যদি না কোনো বিবর্তনীয় প্রভাব (যেমন: প্রাকৃতিক নির্বাচন, জিন প্রবাহ, পরিব্যক্তি, জিনগত চ্যুতি, অ-এলোমেলো প্রজনন) কাজ করে।
MCQ নং ২৩: প্যালিওন্টোলজি (Paleontology) কিসের অধ্যয়ন?
(ক) বর্তমান জীব
(খ) জীবাশ্ম
(গ) জিনগত পরিবর্তন
(ঘ) পরিবেশগত মিথস্ক্রিয়া
সঠিক উত্তর: (খ) জীবাশ্ম
ব্যাখ্যা: প্যালিওন্টোলজি হলো জীবাশ্মের অধ্যয়ন, যা অতীতের জীবন এবং বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে বিজ্ঞানীদের সাহায্য করে।
MCQ নং ২৪: বিবর্তনের ফলে নতুন প্রজাতি সৃষ্টির জন্য কোনটি অত্যাবশ্যকীয়?
(ক) জিনগত ভারসাম্য
(খ) প্রজননগত বিচ্ছিন্নতা
(গ) পরিবেশগত স্থিতিশীলতা
(ঘ) বৃহৎ জিন পুল
সঠিক উত্তর: (খ) প্রজননগত বিচ্ছিন্নতা
ব্যাখ্যা: নতুন প্রজাতি সৃষ্টির জন্য প্রজননগত বিচ্ছিন্নতা অত্যাবশ্যকীয়। যখন কোনো জীবগোষ্ঠী প্রজননের মাধ্যমে জিন বিনিময় করতে পারে না, তখন তারা ধীরে ধীরে জিনগতভাবে ভিন্ন হতে শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত দুটি স্বতন্ত্র প্রজাতিতে পরিণত হতে পারে।
MCQ নং ২৫: দ্রুত বিবর্তন (Punctuated equilibrium) এর ধারণা কে প্রবর্তন করেন?
(ক) চার্লস ডারউইন
(খ) স্টিফেন জে গোল্ড ও নিলস এলড্রেজ
(গ) আর্নস্ট মায়ার
(ঘ) থমাস ম্যালথাস
সঠিক উত্তর: (খ) স্টিফেন জে গোল্ড ও নিলস এলড্রেজ
ব্যাখ্যা: দ্রুত বিবর্তন বা Punctuated equilibrium হলো বিবর্তনের একটি তত্ত্ব যা স্টিফেন জে গোল্ড ও নিলস এলড্রেজ প্রস্তাব করেন। এই তত্ত্ব অনুসারে, প্রজাতির বিবর্তনের ইতিহাস দীর্ঘ স্থিতিশীল সময়ের দ্বারা চিহ্নিত, যার মধ্যে তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত পরিবর্তন এবং নতুন প্রজাতির উদ্ভব ঘটে।
MCQ নং ২৬: ধীরে ধীরে বিবর্তন (Gradualism) এর ধারণা অনুসারে বিবর্তন কীভাবে ঘটে?
(ক) আকস্মিক এবং বড় পরিবর্তনের মাধ্যমে
(খ) ধীর, ধারাবাহিক এবং ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে
(গ) পরিবেশের আকস্মিক পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায়
(ঘ) জিনগত ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে
সঠিক উত্তর: (খ) ধীর, ধারাবাহিক এবং ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে
ব্যাখ্যা: ধীরে ধীরে বিবর্তন বা Gradualism হলো বিবর্তনের একটি ধারণা যা অনুসারে প্রজাতি সময়ের সাথে সাথে ধীর, ধারাবাহিক এবং ছোট ছোট জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে বিকশিত হয়। ডারউইনের মূল ধারণা এর উপর ভিত্তি করে তৈরি।
MCQ নং ২৭: জীববৈচিত্র্য (Biodiversity) বিবর্তনের ফলস্বরূপ কীভাবে বৃদ্ধি পায়?
(ক) প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজাতির সংখ্যা হ্রাস পায়
(খ) নতুন প্রজাতির উদ্ভব এবং পুরাতন প্রজাতির বিলুপ্তির মাধ্যমে
(গ) জিনগত ভারসাম্য বজায় থাকার মাধ্যমে
(ঘ) পরিবেশগত স্থিতিশীলতার মাধ্যমে
সঠিক উত্তর: (খ) নতুন প্রজাতির উদ্ভব এবং পুরাতন প্রজাতির বিলুপ্তির মাধ্যমে
ব্যাখ্যা: বিবর্তনের দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় নতুন প্রজাতির উদ্ভব (Speciation) ঘটে এবং কিছু প্রজাতি পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় বিলুপ্ত (Extinction) হয়ে যায়। তবে সাধারণত নতুন প্রজাতির উদ্ভব বিলুপ্তির হারকে ছাড়িয়ে গেলে জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি পায়।
MCQ নং ২৮: মানব বিবর্তনের ধারায় প্রথম দ্বিপদী (bipedal) পূর্বপুরুষ কারা?
(ক) অস্ট্রালোপিথেকাস
(খ) হোমো হাবিলিস
(গ) হোমো ইরেকটাস
(ঘ) ক্রোম্যাগনন
সঠিক উত্তর: (ক) অস্ট্রালোপিথেকাস
ব্যাখ্যা: বিজ্ঞানীরা মনে করেন অস্ট্রালোপিথেকাস হলো মানব বিবর্তনের ধারায় প্রথম দ্বিপদী পূর্বপুরুষ, যারা প্রায় ৪ মিলিয়ন বছর আগে আফ্রিকায় বাস করত এবং সোজা হয়ে হাঁটতে পারত।
MCQ নং ২৯: “আফ্রিকা তত্ত্ব” (Out of Africa theory) মানব বিবর্তনের কোন দিকটি ব্যাখ্যা করে?
(ক) মানুষের ভাষার উৎপত্তি
(খ) মানুষের হাতিয়ার তৈরির দক্ষতা
(গ) আধুনিক মানুষের উৎপত্তি এবং বিশ্বব্যাপী বিস্তার
(ঘ) মানুষের সামাজিক রীতিনীতি
সঠিক উত্তর: (গ) আধুনিক মানুষের উৎপত্তি এবং বিশ্বব্যাপী বিস্তার
ব্যাখ্যা: “আফ্রিকা তত্ত্ব” অনুসারে, আধুনিক মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স) প্রায় ২ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকায় উদ্ভূত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে বিশ্বের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়েছিল।
MCQ নং ৩০: বিবর্তনের জ্ঞান আমাদের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কীভাবে সাহায্য করতে পারে?
(ক) জিনগত ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্ব অনুধাবন করে
(খ) প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে
(গ) প্রজাতি উদ্ভবকে নিয়ন্ত্রণ করে
(ঘ) পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে প্রজাতির অভিযোজন ক্ষমতা বিবেচনা করে সংরক্ষণ কৌশল তৈরি করে
সঠিক উত্তর: (ঘ) পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে প্রজাতির অভিযোজন ক্ষমতা বিবেচনা করে সংরক্ষণ কৌশল তৈরি করে
ব্যাখ্যা: বিবর্তনের জ্ঞান আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে প্রজাতি কীভাবে সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় এবং পরিবেশের সাথে খাপ খায়। এই জ্ঞান ব্যবহার করে আমরা এমন সংরক্ষণ কৌশল তৈরি করতে পারি যা প্রজাতিদের জিনগত বৈচিত্র্য রক্ষা করে এবং তাদের পরিবর্তিত পরিবেশে টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়ায়।