SSC অর্থনীতি
সপ্তম অধ্যায়: অর্থ ও ব্যাংকব্যবস্থা
১. বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে যা সবার নিকট গ্রহণযোগ্য এবং যা মূল্যের পরিমাপক ও সঞ্চয়ের বাহন হিসেবে কাজ করে, তাকে কী বলে?
ক) সম্পদ
খ) অর্থ
গ) ঋণ
ঘ) চেক
সঠিক উত্তর: খ) অর্থ
ব্যাখ্যা: যে বস্তু বিনিময়ের মাধ্যম, মূল্যের পরিমাপক, সঞ্চয়ের ভান্ডার ও ঋণের ভিত্তি হিসেবে সর্বত্র গ্রহণযোগ্য, তাকে অর্থ বলে।
২. দ্রব্য বিনিময়ের অসুবিধা দূর করতে কিসের উদ্ভব হয়েছে?
ক) ব্যাংক
খ) বাণিজ্য
গ) অর্থ
ঘ) বাজার
সঠিক উত্তর: গ) অর্থ
ব্যাখ্যা: দ্রব্য বিনিময় প্রথার বিভিন্ন অসুবিধা যেমন – অভাবের অসামঞ্জস্যতা, মূল্যের পরিমাপের অভাব, দ্রব্য বিভাজনের সমস্যা, সঞ্চয়ের অসুবিধা ইত্যাদি দূর করার জন্যই অর্থের উদ্ভব হয়েছে।
৩. অর্থের প্রধান কাজ কোনটি?
ক) বিনিময়ের মাধ্যম
খ) মূল্যের পরিমাপক
গ) সঞ্চয়ের বাহন
ঘ) উপরের সবগুলো
সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো
ব্যাখ্যা: অর্থের প্রধান কাজগুলো হলো বিনিময়ের মাধ্যম, মূল্যের পরিমাপক, সঞ্চয়ের বাহন এবং স্থগিত লেনদেনের মান বা ঋণের ভিত্তি।
৪. একটি ভালো মুদ্রার বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক) সহজ বহনযোগ্যতা
খ) স্থায়িত্ব
গ) বিভাজ্যতা
ঘ) উপরের সবগুলো
সঠিক উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো
ব্যাখ্যা: একটি ভালো মুদ্রার বা অর্থের বিভিন্ন গুণাবলি থাকা প্রয়োজন, যেমন – সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা, সহজ বহনযোগ্যতা, স্থায়িত্ব, বিভাজ্যতা, সমজাতীয়তা, সহজপ্রাপ্যতা, স্থিতিশীল মূল্য ইত্যাদি।
৫. যে অর্থ কোনো দ্রব্যসামগ্রীকে অর্থ হিসেবে ব্যবহার করা হয় (যেমন – একসময় কড়ি, লবণ ইত্যাদি ব্যবহৃত হতো), তাকে কী বলে?
ক) ধাতব মুদ্রা
খ) কাগজী মুদ্রা
গ) দ্রব্য মুদ্রা (Commodity Money)
ঘ) ব্যাংক সৃষ্ট অর্থ
সঠিক উত্তর: গ) দ্রব্য মুদ্রা (Commodity Money)
ব্যাখ্যা: ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দ্রব্য যেমন – কড়ি, তামাক, চামড়া, লবণ ইত্যাদি বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলোকে দ্রব্য মুদ্রা বলে।
৬. সোনা, রুপা, তামা ইত্যাদি ধাতু দ্বারা তৈরি মুদ্রাকে কী বলে?
ক) কাগজী মুদ্রা
খ) প্রতীক মুদ্রা
গ) ধাতব মুদ্রা
ঘ) প্লাস্টিক মুদ্রা
সঠিক উত্তর: গ) ধাতব মুদ্রা
ব্যাখ্যা: সোনা, রুপা, তামা, ব্রোঞ্জ, নিকেল প্রভৃতি ধাতু দ্বারা তৈরি মুদ্রাকে ধাতব মুদ্রা বলে।
৭. কাগজী নোট বা মুদ্রার প্রচলন করে কোন প্রতিষ্ঠান?
ক) বাণিজ্যিক ব্যাংক
খ) বিশেষায়িত ব্যাংক
গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ঘ) অর্থ মন্ত্রণালয়
সঠিক উত্তর: গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ব্যাখ্যা: কাগজী মুদ্রা হলো সরকারের নির্দেশে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রচলিত এক ধরনের প্রতীক মুদ্রা।
৮. চেক, ব্যাংক ড্রাফট, বিনিময় বিল ইত্যাদি কিসের উদাহরণ?
ক) কাগজী মুদ্রা
খ) ধাতব মুদ্রা
গ) ব্যাংক সৃষ্ট অর্থ বা ক্রেডিট মুদ্রা
ঘ) ইলেকট্রনিক অর্থ
সঠিক উত্তর: গ) ব্যাংক সৃষ্ট অর্থ বা ক্রেডিট মুদ্রা
ব্যাখ্যা: বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ আমানতের ভিত্তিতে যে অর্থ সৃষ্টি করে, যেমন – চেক, ব্যাংক ড্রাফট, বিনিময় বিল, প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি, তাকে ব্যাংক সৃষ্ট অর্থ বা ক্রেডিট মুদ্রা বলে।
৯. ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডকে কী ধরনের অর্থ বলা হয়?
ক) কাগজী মুদ্রা
খ) প্রতীক মুদ্রা
গ) প্লাস্টিক অর্থ (Plastic Money)
ঘ) বস্তুগত অর্থ
সঠিক উত্তর: গ) প্লাস্টিক অর্থ (Plastic Money)
ব্যাখ্যা: ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক কার্ড যা দ্বারা অর্থ লেনদেন করা যায় (যেমন – ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড) তাকে প্লাস্টিক অর্থ বলে।
১০. অর্থের মূল্য বলতে কী বোঝায়?
ক) অর্থের উৎপাদন খরচ
খ) অর্থের ক্রয়ক্ষমতা
গ) অর্থের যোগান
ঘ) অর্থের চাহিদা
সঠিক উত্তর: খ) অর্থের ক্রয়ক্ষমতা
ব্যাখ্যা: অর্থের মূল্য বলতে অর্থের ক্রয়ক্ষমতাকে বোঝায়। অর্থাৎ, এক একক অর্থ দ্বারা যে পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করা যায়, তাই হলো অর্থের মূল্য।
১১. দ্রব্যমূল্য বাড়লে অর্থের মূল্য কী হয়?
ক) বাড়ে
খ) কমে
গ) অপরিবর্তিত থাকে
ঘ) শূন্য হয়
সঠিক উত্তর: খ) কমে
ব্যাখ্যা: দ্রব্যমূল্যের সাথে অর্থের মূল্যের সম্পর্ক বিপরীতমুখী। দ্রব্যমূল্য বাড়লে অর্থের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়, অর্থাৎ অর্থের মূল্য কমে।
১২. ফিশারের অর্থের পরিমাণ তত্ত্বে অর্থের মূল্য কিসের উপর নির্ভর করে?
ক) শুধুমাত্র অর্থের চাহিদার উপর
খ) শুধুমাত্র অর্থের যোগানের উপর
গ) অর্থের যোগান ও প্রচলন গতির উপর (অন্যান্য বিষয় স্থির থাকলে)
ঘ) শুধুমাত্র দ্রব্যসামগ্রীর পরিমাণের উপর
সঠিক উত্তর: গ) অর্থের যোগান ও প্রচলন গতির উপর (অন্যান্য বিষয় স্থির থাকলে)
ব্যাখ্যা: অধ্যাপক আরভিং ফিশারের অর্থের পরিমাণ তত্ত্ব অনুযায়ী, অর্থের যোগান বাড়লে দ্রব্যমূল্যস্তর বাড়ে এবং অর্থের মূল্য কমে। তাঁর সমীকরণটি হলো MV = PT, যেখানে M হলো অর্থের পরিমাণ, V হলো অর্থের প্রচলন গতি, P হলো দামস্তর এবং T হলো মোট লেনদেনের পরিমাণ। তত্ত্ব অনুযায়ী, V ও T স্থির থাকলে M বাড়লে P বাড়ে এবং অর্থের মূল্য (1/P) কমে।
১৩. ক্রমাগতভাবে দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যস্তর বৃদ্ধি পাওয়াকে কী বলে?
ক) মুদ্রা সংকোচন
খ) মুদ্রাস্ফীতি
গ) বাণিজ্য ঘাটতি
ঘ) বাজেট ঘাটতি
সঠিক উত্তর: খ) মুদ্রাস্ফীতি
ব্যাখ্যা: যখন কোনো অর্থনীতিতে ক্রমাগতভাবে দ্রব্যসামগ্রীর গড় মূল্যস্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং অর্থের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়, তখন সেই অবস্থাকে মুদ্রাস্ফীতি বলে।
১৪. সামগ্রিক চাহিদা বৃদ্ধির কারণে যে মুদ্রাস্ফীতি হয়, তাকে কী বলে?
ক) ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি (Cost-push inflation)
খ) চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি (Demand-pull inflation)
গ) কাঠামোবদ্ধ মুদ্রাস্ফীতি
ঘ) প্রত্যাশিত মুদ্রাস্ফীতি
সঠিক উত্তর: খ) চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি (Demand-pull inflation)
ব্যাখ্যা: যখন অর্থনীতিতে সামগ্রিক চাহিদা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায় কিন্তু সেই অনুপাতে সামগ্রিক জোগান বৃদ্ধি পায় না, তখন অতিরিক্ত চাহিদার চাপে দামস্তর বৃদ্ধি পায়। একে চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি বলে।
১৫. উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে যে মুদ্রাস্ফীতি হয়, তাকে কী বলে?
ক) চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি
খ) মুদ্রা সংকোচন
গ) ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি
ঘ) নিয়ন্ত্রিত মুদ্রাস্ফীতি
সঠিক উত্তর: গ) ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি
ব্যাখ্যা: যখন উৎপাদনের উপকরণসমূহের (যেমন – কাঁচামাল, মজুরি, জ্বালানি) দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায় এবং এর ফলে উৎপাদিত দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পায়, তখন তাকে ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি বলে।
১৬. মুদ্রাস্ফীতির ফলে কারা লাভবান হয়?
ক) নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ
খ) ঋণগ্রহীতা ও উৎপাদক শ্রেণি
গ) ঋণদাতা ও ভোক্তা শ্রেণি
ঘ) পেনশনভোগী
সঠিক উত্তর: খ) ঋণগ্রহীতা ও উৎপাদক শ্রেণি
ব্যাখ্যা: মুদ্রাস্ফীতির সময় অর্থের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় ঋণগ্রহীতারা কম ক্রয়ক্ষমতার অর্থ দ্বারা ঋণ পরিশোধ করে লাভবান হয়। উৎপাদকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ায় কিন্তু উপকরণ ব্যয় সে অনুপাতে তাৎক্ষণিকভাবে না বাড়ায় তারাও লাভবান হতে পারে।
১৭. মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন নীতি ব্যবহার করে?
ক) রাজস্ব নীতি
খ) বাণিজ্য নীতি
গ) ঋণ নিয়ন্ত্রণ নীতি (বা মুদ্রানীতি)
ঘ) শিল্প নীতি
সঠিক উত্তর: গ) ঋণ নিয়ন্ত্রণ নীতি (বা মুদ্রানীতি)
ব্যাখ্যা: কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণ নীতির মাধ্যমে (যেমন – ব্যাংক হার পরিবর্তন, খোলাবাজার নীতি, জমার হার পরিবর্তন) অর্থনীতিতে অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
১৮. যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান জনগণের নিকট থেকে আমানত গ্রহণ করে এবং সেই আমানত থেকে ঋণ প্রদান করে, তাকে কী বলে?
ক) বীমা কোম্পানি
খ) ব্যাংক
গ) স্টক এক্সচেঞ্জ
ঘ) অর্থ মন্ত্রণালয়
সঠিক উত্তর: খ) ব্যাংক
ব্যাখ্যা: ব্যাংক হলো এমন একটি আর্থিক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান যা জনসাধারণের নিকট থেকে অলস অর্থ আমানত হিসেবে গ্রহণ করে এবং সেই অর্থ ঋণগ্রহীতাদের বিভিন্ন মেয়াদে ঋণ হিসেবে প্রদান করে।
১৯. দেশের মুদ্রা ব্যবস্থা ও ঋণ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক হিসেবে কোন ব্যাংক কাজ করে?
ক) বাণিজ্যিক ব্যাংক
খ) বিশেষায়িত ব্যাংক
গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ঘ) সমবায় ব্যাংক
সঠিক উত্তর: গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ব্যাখ্যা: কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো একটি দেশের সর্বোচ্চ আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা দেশের মুদ্রা, ঋণ ও ব্যাংক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে।
২০. “নোট প্রচলন” কোন ব্যাংকের একচেটিয়া অধিকার?
ক) বাণিজ্যিক ব্যাংক
খ) গ্রামীণ ব্যাংক
গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ঘ) কৃষি ব্যাংক
সঠিক উত্তর: গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ব্যাখ্যা: কাগজী মুদ্রা বা নোট প্রচলনের একচেটিয়া ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত থাকে।
২১. কেন্দ্রীয় ব্যাংককে “ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল” (Lender of Last Resort) বলা হয় কেন?
ক) কারণ এটি সরকারকে ঋণ দেয়।
খ) কারণ এটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তাদের আর্থিক সংকটের সময় ঋণ দিয়ে সাহায্য করে।
গ) কারণ এটি জনগণকে সরাসরি ঋণ দেয়।
ঘ) কারণ এটি আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণ নেয়।
সঠিক উত্তর:খ) কারণ এটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তাদের আর্থিক সংকটের সময় ঋণ দিয়ে সাহায্য করে।
ব্যাখ্যা: বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ যখন অন্য কোনো উৎস থেকে ঋণ সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়ে আর্থিক সংকটে পড়ে, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে ঋণ প্রদান করে সাহায্য করে।
২২. বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কাজ কী?
ক) নোট প্রচলন করা
খ) সরকারের ব্যাংক হিসেবে কাজ করা
গ) আমানত গ্রহণ ও ঋণ প্রদান
ঘ) ঋণ নিয়ন্ত্রণ করা
সঠিক উত্তর: গ) আমানত গ্রহণ ও ঋণ প্রদান
ব্যাখ্যা: বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কাজ হলো জনগণের নিকট থেকে বিভিন্ন প্রকার আমানত (যেমন – চলতি, সঞ্চয়ী, স্থায়ী) গ্রহণ করা এবং সেই আমানত থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন মেয়াদে ঋণ প্রদান করা।
২৩. বাণিজ্যিক ব্যাংক কীভাবে ঋণ সৃষ্টি করে?
ক) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করে।
খ) নিজস্ব মূলধন থেকে।
গ) জমাকৃত আমানতের একটি অংশ নগদ জমা রেখে বাকি অংশ ঋণ হিসেবে প্রদান করে এবং সেই ঋণ আবার আমানতে পরিণত হওয়ার মাধ্যমে।
ঘ) বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে।
সঠিক উত্তর:গ) জমাকৃত আমানতের একটি অংশ নগদ জমা রেখে বাকি অংশ ঋণ হিসেবে প্রদান করে এবং সেই ঋণ আবার আমানতে পরিণত হওয়ার মাধ্যমে।
ব্যাখ্যা: বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ তাদের মোট আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ (CRR, SLR) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বা নিজেদের কাছে তরল আকারে জমা রেখে বাকি অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান করে। এই প্রদত্ত ঋণ আবার কোনো না কোনো ব্যাংকে আমানত হিসেবে জমা হয়, এবং এই প্রক্রিয়া বারবার চলতে থাকায় ব্যাংকগুলো তাদের প্রাথমিক আমানতের চেয়ে বহুগুণ বেশি ঋণ সৃষ্টি করতে পারে।
২৪. কৃষি খাতের উন্নয়নে ঋণ সহায়তা প্রদানের জন্য কোন ধরনের ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়?
ক) শিল্প ব্যাংক
খ) বাণিজ্যিক ব্যাংক
গ) কৃষি ব্যাংক (বিশেষায়িত ব্যাংক)
ঘ) সমবায় ব্যাংক
সঠিক উত্তর: গ) কৃষি ব্যাংক (বিশেষায়িত ব্যাংক)
ব্যাখ্যা: কৃষি খাতের উন্নয়নের জন্য কৃষক ও কৃষি সংক্রান্ত কার্যক্রমে ঋণ ও অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়।
২৫. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণের পরিমাণগত পদ্ধতি কোনটি?
ক) ব্যাংক হারের পরিবর্তন
খ) ঋণের বরাদ্দকরণ
গ) প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ
ঘ) নৈতিক প্ররোচনা
সঠিক উত্তর: ক) ব্যাংক হারের পরিবর্তন
ব্যাখ্যা: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণের পরিমাণগত বা সাধারণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক হার নীতি, খোলাবাজার নীতি, এবং জমার হার পরিবর্তন নীতি।
২৬. কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন সরকারি সিকিউরিটিজ (যেমন – ট্রেজারি বিল, বন্ড) ক্রয়-বিক্রয় করে ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে, তখন তাকে কী বলে?
ক) ব্যাংক হার নীতি
খ) খোলাবাজার নীতি
গ) জমার হার পরিবর্তন নীতি
ঘ) ঋণের রেশনিং
সঠিক উত্তর: খ) খোলাবাজার নীতি
ব্যাখ্যা: খোলাবাজার নীতি হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন একটি ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে সরকারি ঋণপত্র (সিকিউরিটিজ) ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণদান ক্ষমতা এবং অর্থনীতিতে অর্থের যোগানকে প্রভাবিত করে।
২৭. “ব্যাংক হার” কী?
ক) বাণিজ্যিক ব্যাংক যে হারে গ্রাহকদের ঋণ দেয়।
খ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয়।
গ) সরকার যে হারে ঋণ গ্রহণ করে।
ঘ) বাণিজ্যিক ব্যাংক যে হারে আমানতের উপর সুদ দেয়।
সঠিক উত্তর: খ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয়।
ব্যাখ্যা: কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদের হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ প্রদান করে অথবা তাদের প্রথম শ্রেণির বিল বা সিকিউরিটিজসমূহ বাট্টা করে, তাকে ব্যাংক হার বলে।
২৮. মোবাইল ব্যাংকিং কিসের উদাহরণ?
ক) কাগজী মুদ্রা
খ) ব্যাংক সৃষ্ট অর্থ
গ) ইলেকট্রনিক অর্থ (Electronic Money)
ঘ) দ্রব্য মুদ্রা
সঠিক উত্তর: গ) ইলেকট্রনিক অর্থ (Electronic Money)
ব্যাখ্যা: মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এটিএম কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন ইত্যাদি ইলেকট্রনিক অর্থের উদাহরণ, যেখানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থের আদান-প্রদান হয়।
২৯. বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে আন্তঃব্যাংক দেনা-পাওনা নিষ্পত্তির কাজ কে করে?
ক) অর্থ মন্ত্রণালয়
খ) বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ নিজেরা
গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক (নিকাশ ঘর হিসেবে)
ঘ) স্টক এক্সচেঞ্জ
সঠিক উত্তর: গ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক (নিকাশ ঘর হিসেবে)
ব্যাখ্যা: কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিকাশ ঘরের (Clearing House) দায়িত্ব পালন করে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যকার চেক ও অন্যান্য দলিলের মাধ্যমে সৃষ্ট দেনা-পাওনা সহজে নিষ্পত্তি করা হয়।
৩০. বাণিজ্যিক ব্যাংকের অন্যতম উদ্দেশ্য কী?
ক) জনকল্যাণ সাধন
খ) মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষা
গ) মুনাফা অর্জন
ঘ) সরকারের নীতি বাস্তবায়ন
সঠিক উত্তর: গ) মুনাফা অর্জন
ব্যাখ্যা: বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ মূলত মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে, যদিও তারা অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।