অনুচ্ছেদ লিখন
লােডশেডিং
লােড-শেডিং আমাদের এক পরিচিত শব্দ। শহর, বন্দর, নগর, গ্রাম যেখানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার স্পর্শ ঘটেছে তারা প্রত্যেকেই লােডশেডিং-এর সাথে পরিচিত। লােডশেডিং হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ শক্তির সরবরাহে ঘাটতি বা বিঘ্ন ঘটা। অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ও এর অপরিকল্পিত বন্টন এবং এর অপচয় প্রথমত ‘ লােড শেডিং ‘-এর জন্য দায়ী। মানুষ যখন বিদ্যুৎসুখী জীবন যাপনে অভ্যস্ত, তখন ‘ লােডশেডিং’ একটি বড় অভিশাপম্বরূপ।
লােডশেডিং-এর কারণে বড় বড় শহর এবং শিল্পাঞ্চলগুলাে দুর্দশাগ্রস্ত। হঠাৎ করেই রাস্তাঘাটসমূহ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়; এখানে-সেখানে সামান্য প্রদীপ, চার্জ-লাইট এবং মােমবাতির স্বল্প আলােকে বড় দোকান এবং বাজারসমূহ সামান্য আলােকিত হয়। চোর এবং পকেটমারেরা রাস্তায় স্বাধীনভাবে ঘােরাফেরা করে। কল-কারখানাগুলােতে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। লােড-শেডিং-এর কারণে ছাত্রদের ভােগান্তি বর্ণনাতীত। লােডশেডিং-এর অভিশাপ হাসপাতালগুলােকেও অব্যাহতি দেয় না।
জরুরি অপারেশন করা অবস্থায় বিদ্যুৎ চলে গেলে রােগীর অবস্থা কেমন হতে পারে, তা বর্ণনা করার চেয়ে কল্পনা করাই বােধহয় ভালাে। গবেষণা দ্রব্যাদি এবং ওষুধপত্র যেগুলাে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় এবং রেফ্রিজারেটরে রাখা হয়, সেগুলাে নষ্ট হয়ে যায়। কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষিত দ্রব্যাদি পচে যায়। রেফ্রিজারেটরে রক্ষিত খাদ্যদ্রব্যাদি ব্যবহারের অনুপযােগী হয়ে পড়ে। বস্তুত, লােড শেডিং-এর ফলে আমাদের জীবনযাত্রা খুব অসুবিধা ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়, লােড-শেডিং-এর অভিশাপ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে হলে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষসহ গ্রাহকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং বিদ্যুতের সুসম ঘণ্টনসহ অপচয় রােধ করতে হবে। তবেই লােভ-শেডিং-এর মতাে মারাত্মক সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব।