খাদ্যে ভেজাল মেশানাে ও এর প্রতিকার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
অধবা, খাদ্যে ভেজালের কারণ ও প্রতিকার শিরােনামে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।
অধবা, একটি জাতীয় পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে খাদ্যে ভেজাল ও তার প্রতিকার সম্বন্ধে একটি সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি কর।
স্বাস্থ্যকর পৃথিবীতে অস্বাস্থ্যের অনুজীব- ‘খাদ্যে ভেজাল’
নিজন্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ। ২৮ সেপ্টম্বর, ২০১৯: বর্তমান সময়ে মানুষের সৃষ্টি করা যতগুলাে বৃহৎ সমস্যা রয়েছে, খাদ্যে ভেজাল মেশানাে তার মধ্যে অন্যতম। ভেজাল মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণের ফলে মানুষের শরীরে ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান প্রবেশ করে। ফলে নতুন নতুন রােগের আবির্ভাব হচ্ছে এবং নিত্যনতুন দুর্ভোগে মানুষ নিয়মিত জড়িয়ে যাচ্ছে। খাদ্যকে বেশিদিন টাটকা রাখা, ফল অথবা সজির ত্বক উজ্জ্বল রাখা, পচনশীল বস্তুর পচন রােধ করা, তৈরিকৃত খাদ্যে ঔজ্জ্বল্য সৃষ্টি করা ও লােভনীয় ঘ্রাণের সৃষ্টি করা, মানুষকে বিশেষ খাদ্যবস্তুর প্রতি আকর্ষণ করা ইত্যাদি কারণে মূল বস্তুর সাথে রাসায়নিক বস্তুর সংমিশ্রণ ঘটানােই হচ্ছে খাদ্যে ভেজাল মেশানাে।
আমাদের সমাজের মানবতাহীন কিছু মুনাফাখাের ব্যক্তি অতি লাভের আশায় প্রাকৃতিক গুনসম্পন্ন খাদ্যে ভেজালের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। ফরমালিন, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য, রং, পাথর, ইটের গুড়া, সুগন্ধি ইত্যাদি দ্বারা খাদ্যকে তারা ভেজাল খাদ্যে রূপান্তরিত করে। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্যকে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমেও ভেজাল খাদ্যের সৃষ্টি করা হয়। মানুষের শরীর প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ত। ভেজাল মিশ্রিত খাদ্য যখন শরীরে প্রবেশ করে, তখন শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ভেজাল অংশ শরীরের রক্ত, পেশিকলা, যােজক কলা, তন্তুকলা, পরিপাক যন্ত্র, শ্বসন প্রক্রিয়া, রেচন প্রক্রিয়া ইত্যাদিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং শরীরের স্বেত রক্তকণিকার ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে স্বাভাবিক রােগপ্রতিরােধ ক্ষমতা নষ্ট করে।
নিত্যনতুন উপায়ে নতুন নতুন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য খাদ্যে মেশানাের ফলে মানুষের শরীরে নতুন ধরনের নতুন নামের রােগের সুষ্টি হচ্ছে। অসচেতন মানুষ এসব রােগকে হয়তাে দৈবের অভিশাপ হিসেবে চিহ্নিত করছে, কিন্তু এসবের জন্য মূলত খাদ্যে ভেজালের অনুপ্রবেশই দায়ী। বর্তমান বিশ্বকে তথা আমাদের দেশ ও সমাজকে বাঁচাতে হলে খাদ্যে ভেজাল নির্মূল করা একান্ত জরুরি। আর এজন্য রাষ্ট্রের উপর মহল থেকে সমাজের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সকলকে সচেতন হতে হবে।
খাদ্যসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান BSTI এর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন- স্বল্পসময়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনাকারী একাধিক ফলের মজুদ, বড় বড় বাজার ও আড়তের পাশে পরীক্ষাগার স্থাপন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারী এলাকায় গােয়েন্দা নিয়ােগ, ভেজাল মিশ্রণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির ব্যবস্থা ইত্যাদি। এছাড়া মিডিয়া বিভিন্ন বিজ্ঞাপন ও ডকুমেন্টারি তৈরি করে গণসচেতনতার সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশে যদি প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় এবং প্রত্যেকে তার পাশের মানুষকে সচেতন করে, তবে ভেজাল খাদ্যের মূলােৎপাটন অবশ্যই সম্ভব।
ক’
প্রতিবেদক