অষ্টম শ্রেনী হিন্দুধর্ম শিক্ষা | | দ্বিতীয় অধ্যায়: ধর্মগ্রন্থ MCQ

অষ্টম শ্রেনী হিন্দুধর্ম শিক্ষা

দ্বিতীয় অধ্যায়: ধর্মগ্রন্থ


১. হিন্দুধর্মের আদি ও প্রধান ধর্মগ্রন্থ কোনটি?

ক) পুরাণ

খ) উপনিষদ

গ) বেদ

ঘ) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা

সঠিক উত্তর: গ) বেদ

ব্যাখ্যা: বেদ আমাদের আদি ও প্রধান ধর্মগ্রন্থ। বেদ চিরন্তন ও শাশ্বত।

২. ‘বেদ’ শব্দের অর্থ কী?

ক) স্তুতি

খ) জ্ঞান

গ) দর্শন

ঘ) কর্তব্য

সঠিক উত্তর: খ) জ্ঞান

ব্যাখ্যা: ‘বেদ’ মানে জ্ঞান। প্রাচীন ঋষিদের ধ্যানে পাওয়া পবিত্র জ্ঞান।

৩. বেদকে কেন্দ্র করে রচিত ধর্মভিত্তিক বিশাল সাহিত্যকে কী বলা হয়?

ক) পুরাণ সাহিত্য

খ) বৈদিক সাহিত্য

গ) উপনিষদ সাহিত্য

ঘ) স্মৃতি সাহিত্য

সঠিক উত্তর: খ) বৈদিক সাহিত্য

ব্যাখ্যা: বেদকে কেন্দ্র করে রচিত ধর্মভিত্তিক বিশাল সাহিত্যকে বলা হয় বৈদিক সাহিত্য।

৪. শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা মহাভারতের কোন অংশের অন্তর্গত?

ক) আদিপর্ব

খ) সভাপর্ব

গ) ভীষ্মপর্ব

ঘ) শান্তিপর্ব

সঠিক উত্তর: গ) ভীষ্মপর্ব

ব্যাখ্যা: মহাভারতের ভীষ্মপর্বের অন্তর্গত ২৫ থেকে ৪২ এই আঠারটি অধ্যায় একত্রে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা নামে পরিচিত।

৫. গীতায় কর্মকে কী বলা হয়েছে?

ক) ধর্ম

খ) তপস্যা

গ) যজ্ঞ

ঘ) ভক্তি

সঠিক উত্তর: গ) যজ্ঞ

ব্যাখ্যা: গীতায় কর্মকে ‘যজ্ঞ’ বলা হয়েছে।

৬. সমগ্র বেদ বা সংহিতাগুলোকে কয় ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে?

ক) দুই ভাগে

খ) তিন ভাগে

গ) চার ভাগে

ঘ) পাঁচ ভাগে

সঠিক উত্তর: গ) চার ভাগে

ব্যাখ্যা: সমগ্র বেদ বা সংহিতাগুলোকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, যথা ১. ঋগ্বেদ-সংহিতা ২. যজুর্বেদ-সংহিতা ৩. সামবেদ-সংহিতা এবং ৪. অথর্ববেদ-সংহিতা।

৭. বেদের যে-অংশে মন্ত্রের ব্যাখ্যা এবং বিভিন্ন যজ্ঞে তাদের প্রয়োগ আলোচিত হয়েছে তাকে কী বলে?

ক) সংহিতা

খ) আরণ্যক

গ) উপনিষদ

ঘ) ব্রাহ্মণ

সঠিক উত্তর: ঘ) ব্রাহ্মণ

ব্যাখ্যা: বেদের যে-অংশে মন্ত্রের ব্যাখ্যা এবং বিভিন্ন যজ্ঞে তাদের প্রয়োগ বা ব্যবহারের কথা আলোচনা করা হয়েছে তাকে ‘ব্রাহ্মণ’ বলা হয়।

৮. যা অরণ্যে রচিত তাকে কী বলে?

ক) উপনিষদ

খ) ব্রাহ্মণ

গ) আরণ্যক

ঘ) সংহিতা

সঠিক উত্তর: গ) আরণ্যক

ব্যাখ্যা: যা অরণ্যে রচিত তাকে আরণ্যক বলে। আরণ্যকের বিষয় ধর্মদর্শন।

৯. গুরুর নিকটে বসে নিশ্চয়ের সঙ্গে যে জ্ঞান অর্জন করা হয় তাকে কী বলে?

ক) আরণ্যক

খ) উপনিষদ

গ) বেদাঙ্গ

ঘ) ব্রাহ্মণ

সঠিক উত্তর: খ) উপনিষদ

ব্যাখ্যা: ‘উপ’ অর্থ সমীপে বা নিকটে, ‘নি’ অর্থ নিশ্চয়, ‘সদ্‌’ ধাতুর অর্থ অবস্থান। অর্থাৎ গুরুর নিকটে বসে নিশ্চয়ের সঙ্গে যে জ্ঞান অর্জন করা হয় তাকে উপনিষদ বলে।

১০. কোন গ্রন্থকে উপনিষদের সার বলা হয়েছে?

ক) রামায়ণ

খ) মহাভারত

গ) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা

ঘ) পুরাণ

সঠিক উত্তর: গ) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা

ব্যাখ্যা: মহাভারতের অন্তর্গত হয়েও পৃথক গ্রন্থ হিসেবে মর্যাদাপ্রাপ্ত শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাকে উপনিষদের সার বলা হয়েছে।

১১. বেদাঙ্গ কয় প্রকার?

ক) চার প্রকার

খ) পাঁচ প্রকার

গ) ছয় প্রকার

ঘ) সাত প্রকার

সঠিক উত্তর: গ) ছয় প্রকার

ব্যাখ্যা: বেদাঙ্গ ছয় প্রকার, যথা-শিক্ষা, কল্প, ব্যাকরণ, নিরুক্ত, ছন্দ ও জ্যোতিষ।

১২. ধ্বনিতত্ত্ব ও নির্ভুলভাবে বৈদিক শব্দ উচ্চারণের পদ্ধতি কোন বেদাঙ্গের আলোচ্য বিষয়?

ক) কল্প

খ) নিরুক্ত

গ) শিক্ষা

ঘ) ছন্দ

সঠিক উত্তর: গ) শিক্ষা

ব্যাখ্যা: ‘শিক্ষা’ বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে ধ্বনিতত্ত্ব, বিশেষকরে উচ্চারণতত্ত্বসহ নির্ভুলভাবে বৈদিক শব্দ উচ্চারণের পদ্ধতিকে।

১৩. যজ্ঞাদি কর্মকাণ্ড যার দ্বারা কল্পিত ও সমর্থিত হয় তাকে কী বলে?

ক) শিক্ষা

খ) কল্প

গ) নিরুক্ত

ঘ) জ্যোতিষ

সঠিক উত্তর: খ) কল্প

ব্যাখ্যা: যজ্ঞাদি কর্মকাণ্ড যার দ্বারা কল্পিত ও সমর্থিত হয় তাকে কল্প বলা হয়।

১৪. বেদে ব্যবহৃত শব্দাবলির উৎপত্তি ও অর্থ কোন বেদাঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে?

ক) ব্যাকরণ

খ) ছন্দ

গ) নিরুক্ত

ঘ) শিক্ষা

সঠিক উত্তর: গ) নিরুক্ত

ব্যাখ্যা: নিরুক্ত নামক বেদাঙ্গে বেদে ব্যবহৃত শব্দাবলির উৎপত্তি, অর্থ প্রভৃতির আলোচনা করা হয়েছে।

১৫. বৈদিক যুগে বিশেষ-বিশেষ তিথি-নক্ষত্রে বিশেষ-বিশেষ যজ্ঞ করার ব্যবস্থা কোন বেদাঙ্গে আলোচিত হয়েছে?

ক) কল্প

খ) জ্যোতিষ

গ) ছন্দ

ঘ) শিক্ষা

সঠিক উত্তর: খ) জ্যোতিষ

ব্যাখ্যা: বৈদিক যুগে বিশেষ-বিশেষ তিথি-নক্ষত্রে বিশেষ-বিশেষ যজ্ঞ করার ব্যবস্থা ছিল। জ্যোতিষে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

১৬. বেদকে কেন অপৌরুষেয় বলা হয়?

ক) কারণ এটি পুরুষদের জন্য নয়

খ) কারণ এটি কোনো পুরুষ বা ব্যক্তির দ্বারা সৃষ্ট নয়, তা ধ্যানে দৃষ্ট

গ) কারণ এটি দেবতাদের দ্বারা রচিত

ঘ) কারণ এটি শুধুমাত্র ঋষিদের জন্য

সঠিক উত্তর: খ) কারণ এটি কোনো পুরুষ বা ব্যক্তির দ্বারা সৃষ্ট নয়, তা ধ্যানে দৃষ্ট

ব্যাখ্যা: ঋষিরা বলেছেন, তাঁরা বেদ দর্শন করেছেন। এজন্য বেদকে বলা হয় অপৌরুষেয়। অর্থাৎ বেদ কোনো পুরুষ বা ব্যক্তির দ্বারা সৃষ্ট নয়, তা ধ্যানে দৃষ্ট।

১৭. বৈদিক দেবতাদের কয়টি শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে?

ক) দুইটি

খ) তিনটি

গ) চারটি

ঘ) পাঁচটি

সঠিক উত্তর: খ) তিনটি

ব্যাখ্যা: ঋষিগণ বৈদিক দেবতাদের তিনটি শ্রেণিতে বিন্যস্ত করেছেন, যথা ১. স্বর্গের দেবতা, ২. অন্তরিক্ষলোকের দেবতা এবং ৩. পৃথিবী বা মর্ত্যলোকের দেবতা।

১৮. বিষ্ণু, সূর্য, বরুণ কোন শ্রেণির দেবতা?

ক) স্বর্গের দেবতা

খ) অন্তরিক্ষলোকের দেবতা

গ) মর্ত্যলোকের দেবতা

ঘ) পাতালেশ্বর দেবতা

সঠিক উত্তর: ক) স্বর্গের দেবতা

ব্যাখ্যা: স্বর্গের দেবতাদের ক্ষমতাই শুধু বোঝা যায়। এমন দেবতারা হলেন বিষ্ণু, সূর্য, বরুণ প্রমুখ।

১৯. ইন্দ্র, বায়ু, রুদ্র কোন শ্রেণির দেবতা?

ক) স্বর্গের দেবতা

খ) অন্তরিক্ষলোকের দেবতা

গ) মর্ত্যলোকের দেবতা

ঘ) দিকপাল দেবতা

সঠিক উত্তর: খ) অন্তরিক্ষলোকের দেবতা

ব্যাখ্যা: অন্তরিক্ষলোকের দেবতাগণ স্বর্গ ও মর্তলোকের মাঝখানে অবস্থান করেন। এরূপ দেবতারা হলেন ইন্দ্র, বায়ু, রুদ্র প্রমুখ।

২০. অগ্নি, অপ্, সোম কোন শ্রেণির দেবতা?

ক) স্বর্গের দেবতা

খ) অন্তরিক্ষলোকের দেবতা

গ) মর্ত্যলোকের দেবতা

ঘ) লোকপাল দেবতা

সঠিক উত্তর: গ) মর্ত্যলোকের দেবতা

ব্যাখ্যা: মর্ত্যের দেবতাদের দেখা যায়। তাঁরা পৃথিবীতে অবস্থানও করেন। এমন দেবতা হলেন অগ্নি, অপ্, সোম প্রমুখ।

২১. ‘ঋক্’ শব্দের অর্থ কী?

ক) গান

খ) যজ্ঞ

গ) স্তুতি

ঘ) জ্ঞান

সঠিক উত্তর: গ) স্তুতি

ব্যাখ্যা: ঋক্ শব্দের অর্থ স্তুতি।

২২. ঋগ্বেদে মোট কয়টি ঋক্ বা মন্ত্র রয়েছে?

ক) ১০,৪৭২টি

খ) ১১,৫০০টি

গ) ৯,৮২০টি

ঘ) ১২,৩০০টি

সঠিক উত্তর: ক) ১০,৪৭২টি

ব্যাখ্যা: সমস্ত ঋগ্বেদে এ-রকম ১০,৪৭২টি ঋক্ বা মন্ত্র রয়েছে।

২৩. ‘যজুঃ’ মানে কী?

ক) গান

খ) স্তুতি

গ) যজ্ঞের মন্ত্র

ঘ) প্রার্থনা

সঠিক উত্তর: গ) যজ্ঞের মন্ত্র

ব্যাখ্যা: ‘যজুঃ’ মানে যজ্ঞের মন্ত্র।

২৪. কোন বেদ থেকে জ্যামিতি বা ভূমি পরিমাপ বিদ্যার উদ্ভব ঘটেছে?

ক) ঋগ্বেদ

খ) সামবেদ

গ) যজুর্বেদ

ঘ) অথর্ববেদ

সঠিক উত্তর: গ) যজুর্বেদ

ব্যাখ্যা: যজ্ঞের বেদী নির্মাণ-কৌশল থেকেই জ্যামিতি বা ভূমি পরিমাপ বিদ্যার উদ্ভব ঘটেছে। এই নির্মাণ-কৌশল যজুর্বেদে বর্ণিত হয়েছে।

২৫. ‘সাম’ শব্দের অর্থ কী?

ক) মন্ত্র

খ) স্তুতি

গ) গান

ঘ) যজ্ঞ

সঠিক উত্তর: গ) গান

ব্যাখ্যা: ‘সাম’ শব্দের অর্থ গান।

২৬. কোন বেদ থেকে প্রাচীনকালের সংগীত সম্পর্কে জ্ঞানলাভ হয়?

ক) ঋগ্বেদ

খ) যজুর্বেদ

গ) সামবেদ

ঘ) অথর্ববেদ

সঠিক উত্তর: গ) সামবেদ

ব্যাখ্যা: সামবেদ থেকে প্রাচীনকালের সংগীত সম্পর্কে জ্ঞানলাভ হয়।

২৭. অথর্ববেদের প্রাচীন নাম কী?

ক) ভেষজবেদ

খ) অথর্বাঙ্গিরস

গ) শান্তিবেদ

ঘ) আয়ুর্বেদ

সঠিক উত্তর: খ) অথর্বাঙ্গিরস

ব্যাখ্যা: অথর্ববেদের প্রাচীন নাম অথর্বাঙ্গিরস।

২৮. আয়ুর্বেদ বা চিকিৎসাশাস্ত্রের আদি উৎস কোন বেদ?

ক) ঋগ্বেদ

খ) সামবেদ

গ) যজুর্বেদ

ঘ) অথর্ববেদ

সঠিক উত্তর: ঘ) অথর্ববেদ

ব্যাখ্যা: আয়ুর্বেদ নামে পরিচিত চিকিৎসাশাস্ত্রের আদি উৎস এই অথর্ববেদ।

২৯. শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় মোট কয়টি শ্লোক আছে?

ক) পাঁচশ

খ) ছয়শ

গ) সাতশ

ঘ) আটশ

সঠিক উত্তর: গ) সাতশ

ব্যাখ্যা: এখানে সর্বমোট সাতশ শ্লোক আছে। এজন্য এর এক নাম সপ্তশতী।

৩০. শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কাকে উপদেশ দিয়েছিলেন?

ক) যুধিষ্ঠিরকে

খ) ভীমকে

গ) অর্জুনকে

ঘ) নকুলকে

সঠিক উত্তর: গ) অর্জুনকে

ব্যাখ্যা: কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যেসব উপদেশ দিয়েছিলেন তারই নাম শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা।

Leave a Reply

Scroll to Top