শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির

proshna featured

3 min read

Advertisements

শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির
লিখে রেখাে এক ফোটা দিলেম শিশির।

ভাব-সম্প্রসারণ: অকৃতজ্ঞরা চিরকালই কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করে অহংকারবােধ করে। শৈবাল এক প্রকারের সালােকসংশ্লেষণকারী জলজ উদ্ভিদ। দিঘির অথৈ জলে এর জন্ম ও পরিবৃদ্ধি হয়। দিঘি থেকেই এটি আহার্য সংগ্রহ করে। মােটকথা এর অস্তিত্ব দিঘির ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং দিঘির প্রতি কৃতজ্ঞতাবােধ থাকা শৈবালের নৈতিক দায়িত্ব।

পরনির্ভরশীল শৈবালের গায়ে কিছু শিশির বিন্দু জমা হয় এবং বায়ুতাড়িত হয়ে সেই শিশির বিন্দু গড়িয়ে পড়ল দিঘির জলে। সাথে সাথে নির্লজ্জের ন্যায় সদম্ভে সে দিঘির দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক ব্যাপারটি স্মরণ রাখার জন্য ইঙ্গিত দিল। আশ্চর্যই বটে। দিঘির পানিতে যার জন্ম, স্থিতি ও লয়। তারই নাকি এমন দন্ড, এত ঔদ্ধত্য এক ফোঁটা পানি দান করেছে বলে। পৃথিবীতে শৈবালের মতাে এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা পরের অনুগ্রহের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে অথচ ঋণ স্বীকার করে না।

উপরন্তু কোনাে কারণে যদি একটু কিছু উপকার করতে পারে বা তাদের মারফত কোনাে উপকারের ফল অন্য কোথা থেকে আসে, তাহলে তারা তা সরবে প্রকাশ করে। পরের খেয়েপরে বেঁচে থেকে পরের ওপর বাহাদুরি দেখাতে তারা লজ্জাবােধ করে না। এ ধরনের লােক অহংকারী ও অকৃতজ্ঞ। তাদের অহংকার আকাশ ছোঁয়া, আত্মপ্রচারে মােহগ্রস্ত হয়ে বােকার মতাে তারা নিজের ঢাক নিজে পেটায়।

অথচ তাদের সামান্য দানে পৃথিবীর কোনাে উপকারই হয়। প্রত্যেকেরই উচিত যার দ্বারা সে কোনাে না কোনােভাবে উপকৃত হয় তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক কৃতজ্ঞতাবােধ প্রকাশ করা। কেননা, অকৃতজ্ঞ লােকদের স্বয়ং আল্লাহও পছন্দ করেন না। অকৃতজ্ঞরা নুন খায় কিন্তু গুণ গায় না। তাই তাে সমাজ থেকে উপকার করার মানসিকতা উঠে যাচ্ছে। একথা প্রত্যেকের মনে রাখা উচিত, কৃতজ্ঞতাই পরম ধর্ম।

0
0
0
0
0

Download Post

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *