নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়
সম্প্রসারিত ভাবঃ মানব সভ্যতার বিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার হলো আগুন। প্রাচীনকালে মানুষ ও পশুর মধ্যে খুব একটা পার্থক্য ছিল না। মানুষ পশুর মতো কাঁচা মাংস খেত। আগুনের আবিষ্কার সবকিছু বদলে দিয়েছিল। আগুন আবিষ্কারের ফলে মানুষ খাবার সিদ্ধ করে খেতে শেখে। আগুনে পুড়িয়ে বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করতে শেখে, বন্য প্রাণীকে ভয় দেখাতে আগুন ব্যবহার করতে শেখে।
সর্বোপরি আগুন আবিষ্কারের ফলে মানুষের জীবনযাত্রাই পুরো পাল্টে গিয়েছিল। সভ্যতার প্রতিটি আবিষ্কারেই আশীর্বাদের পাশাপাশি কিছু অভিশাপ থাকে। আগুন এমন একটি পদার্থ যার সাধারণ ধর্ম হলো দহন। ভুল করে আগুনে হাত দিলেও আগুন পোড়াতে ভুল করবে না। আগুনের কাছে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট সবই সমান। আমাদের সমাজ জীবনেও আগুনের মতো কিছু ধ্বংসাত্মক জিনিস রয়েছে।
সমাজে যখন কোনো অপরাধ দানা বাঁধে তখন তা গোটা সমাজকেই গ্রাস করে। সমাজে ভাল-মন্দ উভয় শ্রেণির মানুষই থাকে। তথাপি অন্যায়ের জোরই বেশি। আগুন ও অপরাধ এ দুটো বিষয়ের মধ্যে একটি মিল রয়েছে। উভয়ই ছোট থেকে বড় হতে থাকে এবং ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। আগুনের যেমন দহন ছাড়া কোনো ধর্ম নেই, তেমনি অপরাধেরও ধ্বংস ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আগুন রূপে অপরাধকে বিঘ্নত হতে দেখি। আগুনের মতোই অপরাধ ভালো-মন্দ সব কিছুকেই গ্রাস করে। কারো প্রতি তার পক্ষপাত নেই।
শিক্ষা: আগুন ও অপরাধ অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন যেমন ভাল-মন্দ সবকিছু পোড়ায়, তেমনি অন্যায় পাপকে গ্রহণ করে ভালোকে ধ্বংস করে দেয়। সুতরাং ব্যক্তি ও সমাজজীবনে অপরাধ যত দ্রুত সম্ভব প্রতিরোধ করতে হবে।
আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণঃ
- দুঃখের মতাে এত বড় পরশ পাথর আর নাই
- স্পষ্টভাষী শত্রু নির্বাক মিত্র অপেক্ষা ভালাে
- বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
- মিথ্যা শুনিনি ভাই, এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনাে মন্দির কাবা নাই