বিশ্রাম কাজের অঙ্গ একসাথে গাঁথা
নয়নের অংশ যেন নয়নের পাতা।
ভাব-সম্প্রসারণ: চোখকে নিরােগ সুস্থ রাখতে চোখের পাতার যেমন বিকল্প নেই। তেমনি কাজকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে বিশ্রামের প্রয়ােজন। কারণ বিশ্রামে শরীরে যে উদ্যম আসে, তা দিয়েই কাজ সম্পন্ন করতে হয়। কর্মময় এ পৃথিবী। এখানে প্রতিটি প্রাণীই শ্রম দিয়ে জীবন বাঁচিয়ে রাখে। পৃথিবীর মানুষ আপন শ্রমের বিনিময়েই পৃথিবীকে নতুন রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে।
আজকের নতুন সভ্যতা মানুষের বুদ্ধি, কৌশল ও শ্রমের ফসল। কিন্তু শ্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে দেখা যায় না। জীবনে যেমন কর্মের প্রয়ােজন আছে তেমনি আছে বিশ্রামের। চোখের পাতা যেমন চোখের অংশ, বিশ্রামও তেমনি কাজের অংশ। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে কর্মের জন্যে দিন ও বিশ্রামের জন্য রাত দান করেছেন। পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। কাজেই দেশ, দশ ও বিশ্বকে উন্নত করার জন্যে কঠোর পরিশ্রম করা আশু দরকার।
আজ বিজ্ঞানের চরম ও পরম উন্নতির যুগে জাপানিরা পরিশ্রমী হবার কারণেই টেকনােলজির দিক থেকে আমেরিকা ও রাশিয়াকে পেছনে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু তাদের পরিমিত বিশ্রাম করার প্রবণতা না থাকায় আজ তারা অনিদ্রায় ভুগছে। এমন অনিদ্রা মানুষকে এক সময় অসুস্থ করে তুলতে পারে। পরে স্লিপিং টেবলেট খেয়েও ঘুম আনতে পারে না। উন্নত দেশগুলাে এ রােগে ভুগছে।
তাই ইসলামও বলে“ তােমাদের উচিত দৈনিক ছয় ঘণ্টা ঘুম দেওয়া পাখি, জীব-জানােয়ার, কীট-পতঙ্গা খাদ্যের অন্বেষণে বাসা থেকে বের হয় ও পেট ভরে গেলে পুনরায় ফিরে আসে বাসায় বিশ্রাম নিতে। বিশ্রামে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়, মানুষ নবশক্তি লাভ করে, মন সতেজ ও প্রফুল্ল হয়। তাই শুধু কর্ম নয়, বিশ্রাম বা ছুটিও জীবনের জন্য অত্যাবশ্যক। মানুষের জীবনে কর্মশক্তি বাড়াবার জন্যই ছুটির দরকার। বিশ্রাম ও পরিশ্রম একে অপরের পরিপূরক। যেমন চোখ ও চোখের পাতা, দিন ও রাত। তাই পরিশ্রমের পর বিশ্রাম অতঃপর পরিশ্রম এ ধারায় কাজের অগ্রগতি হয়।